মধ্যরাত । চার তলা হোস্টেলের বিস্তীর্ণ ছাদ । নিস্তব্ধ গাছের নিচে
একা আমি । মৃদু হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে গাছের পাতা । আকাশে ক্ষয়ে যাওয়া আধখানা
চাঁদ । নিশ্চুপ । সাদাকালো মেঘের আনাগোনা বেড়েছে । অনেক নিচ দিয়ে উড়ে
যাচ্ছে মেঘগুলি । চাঁদের সাথে ওদের কানাকানি খুব গোপনে হচ্ছে যেন । পাশের
পাহাড় থেকে শেয়ালের আর একপাল কুকুরের ডাক শোনা যাচ্ছে । ওরা নিশাচর ।
চাঁদটাও নিশাচর । ওই মেঘগুলিও নিশাচর । আজ আমিও নিশাচর হতে দোষ কি ? বহুরাত
হলো নিশাচর পেঁচার হুতুম ডাক কানে আসে না । আজও মনে হয় পেঁচার দেখা পাব না
। ছেলেবেলার কচি হৃদয়ে পেচাও দাগ কেটে গিয়েছিলো । আর দোয়েল ,শালিক , ঘুঘু ।
ওরা নিশাচর নয় । আজ রাতে ওদের কথা খুব মনে পড়লেও উপায় নেই । ওদের দেখা
পেতে হলে আমাকে বাড়ি যেতে হবে । বাঁশবাগানের পাশের কাঠাল গাছটার নিচে তপ্ত
দুপুরে স্নিগ্ধ ছাঁয়ায় শুয়ে থাকতে হবে মাদুর পেতে । আগে যেমন থাকতাম ।
রাস্তা দিয়ে একটা গাড়ি তীব্র বেগে ছুটে গেলো । আমার খুব ইচ্ছে , রাতের শহরে
অনেক বেশি স্পিডে বাইক চালাবো । কিন্তু উত্সাহে ভাটা পড়ে যেখানে সেখানে
স্পিডব্রেকারের আধিক্য আর ছিনতাইকারীর ভয়ে । ছিনতাইকারি রাও নিশাচর । রাতের
নিস্তব্ধতাকে ওরা করে তোলে ভীতিকর । ওদের চেয়ে ভুত অনেক ভালো । ভুতও
নিশাচর । ভুত শুধু ভয় দেখায় ,
আর ছিনতাইকারিরা সবকিছু ছিনিয়ে নেয় । কখনোবা পেটে ছুরি মেরে দেয় । নিশাচর প্রেমিকরা আজ মনে হয় তাদের রাতের আলাপন শেষ করে ফেলেছে । সাধারনত রাতে সিড়ির গোড়ায় , ছাদের বিভিন্ন প্রান্তে এইসব বিদঘুটে নিশাচরের দেখা মেলে । লম্বা ইউক্যালিপ্টাস গাছটা দুলছে । গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে ক্ষয়ে যাওয়া অর্ধেক চাঁদটা অতিপ্রাকৃতিক লাগছে । রাস্তায় একজন রিক্সাওয়ালা খালি রিক্সা নিয়ে দরাজ গলায় গান গাইতে গাইতে পুব দিকে যাচ্ছে । মানুষের জীবন বড়ই বিচিত্র । এখন রাত তিনটা বেজে পনেরো মিনিট । কেউ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে নরম ফোমে গভীর ভাবে ঘুমাচ্ছে । আর ওই রিক্সাওয়ালা ভাই এখনও রাস্তায় । ক্ষয়ে যাওয়া অর্ধেক চাঁদটাকে একটা কালো মেঘ ঢেকে দিচ্ছে । জীবনের সাথে কী মিল ! আমাদের জীবনও ক্ষয়ে যাচ্ছে । কখন যে সমাপ্তির কালো মেঘ সবকিছু ঢেকে দেবে আল্লাহই জানেন !
মঙ্গলবার, মে 24, 2011
আর ছিনতাইকারিরা সবকিছু ছিনিয়ে নেয় । কখনোবা পেটে ছুরি মেরে দেয় । নিশাচর প্রেমিকরা আজ মনে হয় তাদের রাতের আলাপন শেষ করে ফেলেছে । সাধারনত রাতে সিড়ির গোড়ায় , ছাদের বিভিন্ন প্রান্তে এইসব বিদঘুটে নিশাচরের দেখা মেলে । লম্বা ইউক্যালিপ্টাস গাছটা দুলছে । গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে ক্ষয়ে যাওয়া অর্ধেক চাঁদটা অতিপ্রাকৃতিক লাগছে । রাস্তায় একজন রিক্সাওয়ালা খালি রিক্সা নিয়ে দরাজ গলায় গান গাইতে গাইতে পুব দিকে যাচ্ছে । মানুষের জীবন বড়ই বিচিত্র । এখন রাত তিনটা বেজে পনেরো মিনিট । কেউ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে নরম ফোমে গভীর ভাবে ঘুমাচ্ছে । আর ওই রিক্সাওয়ালা ভাই এখনও রাস্তায় । ক্ষয়ে যাওয়া অর্ধেক চাঁদটাকে একটা কালো মেঘ ঢেকে দিচ্ছে । জীবনের সাথে কী মিল ! আমাদের জীবনও ক্ষয়ে যাচ্ছে । কখন যে সমাপ্তির কালো মেঘ সবকিছু ঢেকে দেবে আল্লাহই জানেন !
মঙ্গলবার, মে 24, 2011
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন