ফ্যাক্টরি অচল । কয়েকদিন থেকে মেশিন চলছে না । বিকল মেশিন কোনভাবেই
সারাতে পারছে না ফ্যাক্টরির লোকেরা । উত্পাদন বন্ধ । বড় বড় অর্ডার
হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে । এভাবে চলতে থাকলে দেউলিয়া হয়ে যাবে কোম্পানি ।
ব্যাংকের লোন পরিশোধ করা যাবে না । শ্রমিকরা বিক্ষোভ করবে । বাধ্য হয়ে
ফ্যাক্টরির ম্যানেজার একজন বিশেষজ্ঞ ইন্জিনিয়ার ডাকলেন । বিশেষজ্ঞ
ভালোভাবে সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখলেন একটি গুরুত্বপুর্ণ জায়গায় একটি
পেরেক খুলে গেছে । তিনি কর্মচারীদের দেখিয়ে দিলেন এবং সেখানে পেরেকটি মেরে
দিতে বললেন । যথাস্থানে পেরেকটি লাগানোর পরই আবারও মেশিন চালু হলো ।পরদিন
বিল পাঠানো হলো ১ লাখ টাকা । মালিক বেঁকে বসলেন । মাত্র একটা পেরেক ঠুকানোর
জন্য এক লাখ টাকা ! তিনি বিল ফেরত পাঠালেন ।পরদিন বিশেষজ্ঞ নতুন করে বিল
পাঠালেন । পেরেক ঠুকানো বাবদ ১ টাকা । আর পেরেক কোথায় লাগাতে হবে সেটা
খুঁজে বের করা বাবদ ৯৯৯৯৯ টাকা ! এবার ফ্যাক্টরি মালিক কোন উত্তর খুঁজে
পেলেন না ।পোস্টের শিরোনামের সাথে গল্পটি মিলিয়ে বুদ্ধিমান পাঠক এতক্ষণে
হয়তো আসল কথাটি বুঝে ফেলেছেন । ঠিকই ধরেছেন , আজকের বিষয় ডাক্তারের ফি ।
ডাক্তারের ফি নিয়ে অনেককেই উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় । এদের মধ্যে
'বুঝদার' লোকের সংখ্যাও কম নয় । নিজে কোটি টাকার মালিক , ব্যবসায় আসল
দামের দ্বিগুন মূল্যে জিনিসপত্র বিক্রি করে মার্সিডিজ বেন্জে ঘোরেন ।
ডাক্তারের ফি টা দেয়ার বেলায়ই কেবল তার পকেটে টান পড়ে ! এইতো সেদিন
রেস্টুরেন্টে বসে একজন ডাক্তারদের চৌদ্দ দুগুনে আঠাশ গোষ্ঠীর কুষ্ঠি উদ্ধার
করলেন । এই পোস্টের কমেন্টেও হয়তো অনেকেই কাজটা করবেন । 'ওনাদের' মহা
ক্ষোভ । 'ওমুক কার্ডিওলজিস্ট এর কাছে গেলাম , পালস আর ব্লাড প্রেসার মেপে
ইসিজিটা দেখে ১০ মিনিটের মধ্যে কিনা কি লিখে ছেড়ে দিলো । বিল নিলো ৫০০
টাকা । ডাহা জোচ্চুরি !' ওনাদের এটুকু বলা প্রয়োজন মনে করছি - মামা কি
দরকার ছিলো কার্ডিওলজিস্টের কাছে যাবার ? মুদি দোকানে গেলেই পারতেন !
দোকানদার আপনাকে দশঘন্টা ধরে চেকআপ করে লজেন্স দিতো , মজা করে সেটাই খেতেন
!এই বেকুবের দলকে আবার দেখবেন মেন্জ ক্লাবের শার্ট আর ক্যাটস আইর ক্যাপ
মহানন্দে কিনছে । শৈল্পিক থেকে পান্জাবি । মহিলারা কে ক্রাফট থেকে ওয়ান টু
থ্রিপিছ কিনছে । যেটার উত্পাদন খরচ সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা । সেটাই বিনা
প্রশ্নে কিনছেন ওনারা ১৫০০ টাকায় । শোরুম থেকে বের হয়ে আফসোস করেন । ইস্
নতুন ক্যাটালগে একটা চরম ডিজাইন আসছে । আর কিছু টাকা থাকলে ওটাও নিতাম
!'ওনাদের' জন্য আর বেশি কিছু বলতে চাই না । শুধু এটুকু বলবো , যে ছেলেটা
আজকে কার্ডিওলজিস্ট হয়েছে সে এমনি এমনি হয়নি । আপনি যখন বন্ধুদের সাথে
চুটিয়ে আড্ডা মেরেছেন তখন সে হাসপাতালে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে । আপনি যখন
মুভি দেখে সময় কাটিয়েছেন , তখন তার সময় কেটেছে বইয়ের পাতায় আর অপারেশন
থিয়েটারে । এমনি করেই সে জীবনের অনেক স্বাদ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে কমপক্ষে
৪০ বছর নষ্ট করেছে । এমবিবিএস করার পরও এমডি , এফসিপিএস ইত্যাদি ডিগ্রি
নিয়েছে । এখনো দিনেরাতে সেবা দিয়ে যাচ্ছে মানুষকে।
বুধবার, আগস্ট 3, 2011
বুধবার, আগস্ট 3, 2011
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন