আগের পোস্টে কথা বলছিলাম ডাক্তারের ফি নিয়ে । সেখানেই আরেকটি বিষয়
উঠে এসেছিল যে ডাক্তাররা রোগী দেখায় খুব কম সময় দেন । এখানেই জনগনের
বাস্তববিমুখতা ও দ্বৈত মনোভাব প্রকাশ পায় । বাস্তবতা হচ্ছে , সরকারিভাবে
চিকিত্সাসেবা এতই অপ্রতুল যে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ক্লিনিক ও হাসপাতাল গড়ে
উঠলেও রোগীর ঠাই দেয়া যাচ্ছে না । ডাক্তারদের চেম্বারেও সিরিয়াল নিয়ে
টানাটানি । (এই সুযোগে ডাক্তার যেমন তেমন ডাক্তারের পিএস এর ভাবটা উঠে যায়
আসমানে !) এখন ডাক্তার যদি প্রতিজন রোগীর জন্য আধাঘন্টা করে সময় দেন (যদিও
তা অবাস্তব ও অপ্রয়োজনীয়) তাহলে অনেক পেশেন্ট চিকিত্সা না পেয়েই ফিরে
যেতে বাধ্য হবে । ডাক্তার তো আর সারাদিন রাত রোগী দেখবেন না । তারও তো একটা
ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু আছে নাকি ? যাহোক পেশেন্ট নিজে চান ডাক্তার তাকে
অনেকক্ষণ সময় দিন । আবার যখন ডাক্তার প্রয়োজনবশত একজন পেশেন্টকে বেশি সময়
দেন তখন অপেক্ষায় থাকা অন্য পেশেন্ট ও এটেনড্যান্টরা অধৈর্য হয়ে ওঠেন ।
তারা ক্ষেপে যান । 'কি ভুয়া ডাক্তারের কাছে আসলাম , এতক্ষণ সময় লাগে একজন
রোগী দেখতে !' বুঝুন ঠেলা । কীরকম দ্বৈত মনোভাব । ওনারা যে কী চান নিজেরাই
বোঝেন না ।
আর প্রকৃত বাস্তবতাটা হলো ১৫-২০ বছর ধরে একটা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে তারপর একজন ডাক্তার একটা বিষয়ের ওপর স্পেশালিস্ট হন । এসময়ের মধ্যে তাকে একইরকম হাজার হাজার পেশেন্ট নিয়ে কাজ করতে হয়েছে । এমবিবিএস কমপ্লিট করতে কমপক্ষে ৬.৫ বছর , এফসিপিএস শেষ করতে কমপক্ষে ৬ বছর , এমডি করতে কমপক্ষে ৬ বছর । এত সময় ব্যয় করেছে তো এজন্যই যেন অল্প সময়ে ট্রিটমেন্ট দিতে পারেন । এভাবে এত পড়াশোনা , এত পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট করার পরও যদি একজন ডাক্তার অল্প সময়ে পেশেন্ট ম্যানেজ করতে না পারেন তাহলে ঐ ডাক্তারের ক্লিনিক্যাল আই এবং শিক্ষাব্যবস্থার গলদ নিয়েই প্রশ্ন তুলতে হবে । Clinical eye হলো একজন ডাক্তারের সন্ধানী চোখ । অনেক প্র্যাকটিসের ফলে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় তার সাথে জ্ঞান মিলিয়ে তৈরি করে ক্লিনিক্যাল আই । এতে একজন ডাক্তার রোগীর Appearance , attitude থেকেই অনেকাংশে ডায়াগনোসিস এর কাছাকাছি পৌঁছে যান । যার ক্লিনিকাল আই যত বেশি প্রখর , তিনি ততোবেশি দক্ষ চিকিত্সক বলে গন্য হবেন । তার ডায়াগনোসিস হবে তত দ্রুত ও নির্ভুল । পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্রের এ বিষয়ে ব্যাপক খ্যাতি ছিল । আমাদের স্কুলের বাংলা স্যার বলতেন 'ডাক্তার হলে বিধান চন্দ্রের মত হবি '। তিনি নাকি একজন রোগীকে একনজর দেখেই ডায়াগনোসিস করে ফেলতে পারতেন । ওনার ভাগ্য ভালো যে তাঁকে এই সময়ে বাংলাদেশে প্র্যাকটিস করতে হচ্ছে না । তিনি যদি এই সময় রোগীকে একনজর দেখেই প্রেসক্রিপশন লিখে দিতেন , তাহলে আমাদের উপরোল্লিখিত জনগন কীযে বলতো আল্লাহ মালুম !
শুক্রবার, আগস্ট 5, 2011
আর প্রকৃত বাস্তবতাটা হলো ১৫-২০ বছর ধরে একটা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে তারপর একজন ডাক্তার একটা বিষয়ের ওপর স্পেশালিস্ট হন । এসময়ের মধ্যে তাকে একইরকম হাজার হাজার পেশেন্ট নিয়ে কাজ করতে হয়েছে । এমবিবিএস কমপ্লিট করতে কমপক্ষে ৬.৫ বছর , এফসিপিএস শেষ করতে কমপক্ষে ৬ বছর , এমডি করতে কমপক্ষে ৬ বছর । এত সময় ব্যয় করেছে তো এজন্যই যেন অল্প সময়ে ট্রিটমেন্ট দিতে পারেন । এভাবে এত পড়াশোনা , এত পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট করার পরও যদি একজন ডাক্তার অল্প সময়ে পেশেন্ট ম্যানেজ করতে না পারেন তাহলে ঐ ডাক্তারের ক্লিনিক্যাল আই এবং শিক্ষাব্যবস্থার গলদ নিয়েই প্রশ্ন তুলতে হবে । Clinical eye হলো একজন ডাক্তারের সন্ধানী চোখ । অনেক প্র্যাকটিসের ফলে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় তার সাথে জ্ঞান মিলিয়ে তৈরি করে ক্লিনিক্যাল আই । এতে একজন ডাক্তার রোগীর Appearance , attitude থেকেই অনেকাংশে ডায়াগনোসিস এর কাছাকাছি পৌঁছে যান । যার ক্লিনিকাল আই যত বেশি প্রখর , তিনি ততোবেশি দক্ষ চিকিত্সক বলে গন্য হবেন । তার ডায়াগনোসিস হবে তত দ্রুত ও নির্ভুল । পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্রের এ বিষয়ে ব্যাপক খ্যাতি ছিল । আমাদের স্কুলের বাংলা স্যার বলতেন 'ডাক্তার হলে বিধান চন্দ্রের মত হবি '। তিনি নাকি একজন রোগীকে একনজর দেখেই ডায়াগনোসিস করে ফেলতে পারতেন । ওনার ভাগ্য ভালো যে তাঁকে এই সময়ে বাংলাদেশে প্র্যাকটিস করতে হচ্ছে না । তিনি যদি এই সময় রোগীকে একনজর দেখেই প্রেসক্রিপশন লিখে দিতেন , তাহলে আমাদের উপরোল্লিখিত জনগন কীযে বলতো আল্লাহ মালুম !
শুক্রবার, আগস্ট 5, 2011
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন