মেডিকেল কলেজে মাইক্রোবায়োলজি একটি গুরুত্বপুর্ণ সাবজেক্ট । মাইক্রোবায়োলজি মানে ব্যাকটেরিয়া , ভাইরাস , ছত্রাক , পরজীবিদের গোষ্ঠী উদ্ধার করা । ওরা কিভাবে খায় , ঘুমায় , প্রজনন করে ইত্যাদি । কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ‘tis’ যুক্ত যেকোন শব্দ মাত্রই সেটা এইসব ক্ষুদ্র জন্তুর কাজ !
এইসব ক্ষুদ্র জন্তু মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর শরীরের বিভিন্ন অংশে বাসা বাঁধে । এদের অধিকাংশকে আমরা খালি চোখে দেখতে পাইনা বলে বাঁচা । এরা আমাদের ত্বকে , হাতে পায়ে নাকে মুখে কীভাবে কিলবিল করছে ! খালি চোখে দেখতে পেলে আমরা সম্ভবত কোন কিছু খেতে পারতাম না । হ্যান্ডশেক করতে পারতাম না । পিচ্চিদের দেখলেই চুমু দিতে ইচ্ছে করে ! উফ !! অসম্ভব । দেখতেন জিহ্বা বের করা মাত্রই পুরো মুখ জুড়ে কত ক্ষুদ্র জন্তু কিলবিলিয়ে মনের সুখে ঘুরে বেরাচ্ছে ! আল্লাহ বাঁচিয়েছেন ।
মানুষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে এই পরজীবি ক্ষুদ্র দানবরা । বেশিরভাগ রোগের কারন হলো এই আপাত অদৃশ্য অর্থাৎ অশরীরি পরজীবিরা । এদের একেকটার আবার গঠন একেকরকম । নানান বিদঘুটে গড়নের হয় এরা । সেকেন্ড প্রফ পরীক্ষার সময় আমরা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার নাম গালি হিসেবে ব্যবহার করতাম । ‘ শালা তুই একটা ই-কোলাই !’ একজন স্যারের নাম দেয়া হয়েছিল কক্কাই । কক্কাই হলো গোলাকৃতির ব্যাকটেরিয়া ।
মাইক্রোবায়োলজি পড়ার সময় হঠাত একসময় খেয়াল করলাম নিজেকে পরজীবি মনে হচ্ছে ! প্যাচাল না বাড়িয়ে আসল ব্যাপারটা খুলে বলি ।
এই বিশাল পৃথিবীটাতে মানুষসহ আরো কত প্রাণীর বাস , তাই না ! কত বন বনানী , গাছপালা পাহাড় পর্বত নদী নালায় ভরা এই পৃথিবীতল ।
মনে হত আমরা মানুষসহ সকল প্রাণী হলাম পরজীবি । এখানে গাছপালাগুলো যেন পৃথিবীর লোম । অন্য সকল প্রাণী হলো পরজীবি !
আমাদের শরীরে আছে ক্ষুদ্র পরজীবিরা । হয়তো ব্যাকটেরিয়া কিংবা ভাইরাসের শরীরেও আছে আরো ক্ষুদ্র কোন পরজীবি ! হয়তো সেইসব পরজীবির দেহেও আছে আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরজীবি ! ওদের দেহে আছে আরো আরো…………..
হয়তো এই বিশাল পৃথিবীটা নিজেই একটা পরজীবি অন্য কারো শরীরে ! হয়তো সেটা অন্য কারো ……….! ওটা অন্য কারো …………!
মাথাটা চক্কর দিচ্ছে !!
একজন পরজীবির এর বেশি চিন্তা করা ঠিক হবে না ।
ধন্যবাদ ।
শুক্রবার, জানুয়ারি 27, 2012
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন