এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১২

চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করার আসল কারণ


ঈমান আক্বিদা ও মর্যাদা রক্ষায় ওদের সাহস দেখে মনে পড়ে যায় সুমাইয়া (রাঃ) , আসমা (রাঃ) , জয়নাব আল গাজালি দের কথা । মুসলিম জাতির পুরুষেরা যখন হয়ে পড়েছে বুজদিল-কাপুরুষ , তখন ছোট বোনদের দৃঢ়তা আমাদের রেনেসাঁর ব্যাপারে আশাবাদী হতে শেখায় ।



চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে নিছক বিদ্বেষ পরায়ন হয়েই হিজাবের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে । অধ্যক্ষা বলছেন ,হিজাব বিজ্ঞানসম্মত না । এতে নাকি Infection ছড়ায় ! এমন অজ্ঞ মহিলা কী করে প্রিন্সিপাল হন আমার বুঝে আসেনা । নাকি তার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে ? Opportunistic এবং Hospital acquired Infection থেকে বাঁচার জন্য যেখানে নাক মুখ মাথা ও শরীর পরিস্কার কাপড় দিয়ে ঢাকা জরুরি সেখানে তিনি নিয়ে এসেছেন নতুন Infection তত্ব ! বিশাল বে-জ্ঞানী ! Infection ছড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি Prone area হলো Hair & Hairy area , এইটাও জানেন না!

ড্রেসকোডের দোহাই দেয়া হয়েছে । ড্রেসকোডে কোথাও লেখা আছে হিজাব পড়া যাবেনা ? ড্রেসকোডে লেখা আছে মাথায় ক্যাপ পড়তে হবে । মেয়েরা বলেছে তারা ক্যাপের নিচে হিজাব পড়বে , এতে ড্রেসকোডের লঙ্ঘনটা কোথায় হয় ? হিজাব পড়ার কারণে ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার নোটিশ দিয়েছেন , নির্দিষ্ট শু , বেল্ট না পড়লে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছেন কাউকে ? দিয়েছেন কোন নোটিশ ? তাহলে ড্রেস কোডে এটাও লিখে দেন কোন দোকান থেকে কতটাকা মুল্যে কাপড় কিনে কোন দর্জির কাছে সেলাই করতে হবে ! এতে আপনারও টুপাইস সুবিধে হবে বৈকি ! অন্যদোকান থেকে কাপড় কিনলে ড্রেসকোড লঙ্ঘন বলতে পারবেন !

কোড অনুযায়ী সঠিক সময়ে কয়দিন অফিসে এসেছেন ? কয়জন কর্মচারিকে সঠিক সময়ে অফিসে না আসায় বরখাস্ত করেছেন ? কোডের দোহাই দেন , ৯০% মুসলিমের দেশে মুসলিমদের জন্য ফরজ পর্দা নিষিদ্ধ করে ড্রেসকোড বানান কিকরে আপনারা ? লজ্জা করেনা ? আপনার প্রতিষ্ঠানে ৯০% শিক্ষক-শিক্ষিকা অমুসলিম হতে পারে, কিন্তু দেশের ৯০% মানুষ ধর্ম্প্রাণ মুসলিম এ কথাটা আপনাদের মনে রাখা উচিত ।

আইন করা হয়েছে - কাউকে পর্দা করতে বাধ্য করা যাবেনা , কিন্তু কাউকে পর্দাহীন হতে বাধ্য করা যাবে এমন আইন এখনো আমাদের চোখে পড়েনি । অর্ধনগ্ন থাকা যদি আপনাদের অধিকার হয় তাহলে কেউ হিজাব ব্যবহার করলে আপনার সমস্যা কোথায় ?

আরও ন্যাক্কারজনক ঘটনাগুলো শুনে স্তম্ভিত হতে হয় । অমুসলিম শিক্ষিকা জুতো পায়ে মসজিদে ঢুকে গর্ব করে বলেছেন -কোথায় তোদের আল্লাহ ? অমুসলিম সুইপার দিয়ে কোরআন হাদিস ঘাটাঘাটি করানো হয়েছে । গল্প-উপন্যাসের বইয়ের মত কুরআন-হাদিসের বই ছুড়ে ফেলা হয়েছে । মেয়েদেরকে ঘরে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে । দিনের পর দিন তাদের ক্রমাগত অপমান করা হয়েছে , হুমকিধমকি দেয়া হয়েছে , মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে । প্রতিবাদ ঠেকাতে একাডেমিক ক্যালেন্ডার লঙ্ঘন করে প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন ছুটিতে রাখা হয়েছে । সাংবাদিকদের কাছে কান্নাকাটি করে নিগৃহীত মেয়েরা বলেছে এসব কথা ।

এগুলো কী প্রমাণ করে ? ড্রেসকোড নাকি ইসলাম ও পর্দাবিদ্বেষ কোনটি আসল কারণ ?
সারাবিশ্বে লক্ষ লক্ষ ডাক্তার নার্স হিজাব পড়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ,আর এই উজবুকরা তত্ব দিচ্ছে হিজাব নাকি সেবার পথে প্রতিবন্ধক ! বেপর্দা হয়ে নার্সিং করলে নামাজ পড়া লাগেনা এই ফতোয়া দেয়ার অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের ?

আল্লাহকে ভয় করুন । এই দাবি মেনে নেয়া আপনাদের পরাজয় নয় ,বোঝার চেষ্টা করুন । অন্ধত্ব ঘুঁচিয়ে চোখটা খুলুন ,সকল ছাত্র-ছাত্রীকে সন্তানের মত ভাবুন ।

যারা এই নোট পড়ছেন, পরিচিত কেউ এই বিভাগের সাথে জড়িত থাকলে তাদেরকে বলুন এই বিষয়ে অবুঝদের বুঝাতে । অতিসত্বর কর্তৃপক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক এই কামনা করছি ।

মঙ্গলবার, জুলাই 3, 2012

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন