কালবৈশাখীর
ভয়ংকর রুপের কথা বইয়ে পড়েছি, বাস্তবেও দেখেছি । কিন্তু কেন যেন ঝড় উঠলেই আমার মনটাও নেচে উঠতো । একটা কারণ বলা
যায় – আম কুড়ানো । ঝড়ের সময় সে এক প্রতিযোগিতা ছিল, ভাইবোনদের সাথে পাল্লা দিয়ে আম কুড়ানো । একদিনে
এক বস্তা আমও কুড়িয়েছি কোন কোন সময় । হাফপ্যান্টের দুই পকেটে আম নিয়ে খেয়েছি
সারাদিন । নিজেদের গাছের আম, না কুড়ালেও চলে । কিন্তু শো শো বাতাস, মেঘের কড়কড়
গর্জন, আর বিজলী চমকের মাঝে আম কুড়ানো - সে এক অপার্থিব আনন্দ !
নয় বছর
হলো বাড়ি ছেড়েছি । পুরনো বড় বড় আমের গাছগুলিও আর নেই । সেই বয়সও আর নেই । আমিও
দিনদিন হয়ে উঠছি শহুরে একজন । তবু মনটা
হাহাকার করে । এ জীবনে আর কখনো আম কুড়ানো হবেনা হয়তো । প্রচন্ড ঝড়ের সময় আম্মার
সাথে বসে শতশত বার আয়াতুল কুরসী পড়া হবেনা হয়তো আর কোনদিন । জসীমউদ্দিনের সেই
ছড়াটিও এখন পাঠ্য বইয়ে আছে কিনা জানিনা –
ঝড়ের দিনে মামার দেশে
আম কুড়াতে সুখ
পাকা জামের মধুর রসে
রঙ্গিন করি মুখ ।
গাছে
উঠে নিজে হাতে পেড়ে আনা কিংবা কুড়ানো আমের রসে এখন আর মুখ রঙ্গিন করা হয়না । তাই
মলিন মুখে হৃদয় নিংড়ে আসে -
দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায়
রইলো না , রইলো না
সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি ......
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন