এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শনিবার, ২৫ মে, ২০১৩

ডাঃ আব্দুল হক কিংকর্তব্যবিমূঢ়

ডাঃ আব্দুল হক কিছুক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলেন রহমত চাচার দিকে । তারপর উঠে গিয়ে ইঞ্জেকশনটা পুশ করে এলেন । এবং তার পরদিনই একটা সাইনবোর্ড বানিয়ে বাড়ির পাশে টাঙ্গিয়ে দিলেন । ডাঃ আব্দুল হক, এমবিবিএস, এফসিপিএস । সিদ্ধান্তটাও চূড়ান্ত করে ফেললেন, এখানেই প্র্যাকটিস করবেন নিয়মিত । রহমত চাচাদের জন্য ।

পড়াশোনার প্রয়োজনে ছোটবেলাতেই বাড়ি ছেড়েছিলেন দিনাজপুরের আব্দুল হকবাবা ছিলেন গরীব । নিজের চেষ্টাতেই এতদূর আসা । কীভাবে কী করেছেন ঠিকমত তাঁর বাবাও বলতে পারবেন না । পেছন ফিরে তাকাবার সুযোগ হয়নি কখনো । পড়াশোনা করেছেন , নিজের জন্য যতটুকু প্রয়োজন রোজগার করেছেন । বাবা মার খবর রেখেছেন, ব্যস । বিয়েটা পর্যন্ত করা হয়নি ।

এফসিপিএস পাস করার সংবাদ পেয়ে ভাবলেন , এবার কিছুদিন বাড়িতে কাটিয়ে আসি । বাড়িতে তিনি সকালবেলা আঙ্গিনায় বসে আছেন- এমন সময় পাশের পাড়ার রহমত চাচা এসে হাজির । তাঁর হাতে একটা কাগজ, একটা সিরিঞ্জ ও একটা ইঞ্জেকশন

রহমত চাচা বললেন, আব্দুল হক , তুই নাকি ডাক্তোর হচিস রে বাপই । আয় তো একনা হামার বাড়ি । এঞ্জেকশানটা একনা শরীলত ঢুকি দেতো বাবা । বড় ডাক্তোরে দিছে , রমানাথ ডাক্তোরতুই কি ওনার লেখা বুঝবার পারবু ?  এই দেখ পেসকিপশোন ।

আব্দুল হক সাহেব কাগজটি হাতে নিলেন ।

ডাঃ রমানাথ রায় , এল.এম..এফ, মেডিসিন ও সার্জারিতে বিশেষ অভিজ্ঞ ! (রংপুর মেডিকেলের ছাত্ররা বলে L.M.A.F মানে হল লোক মারার আসল ফন্দি । আসলে এটি মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ৬ মাসের একটি ট্রেনিং । মাইন্ড করার কিছু নাই, আমার একজন চাচা আছেন L.M.A.F তবে তাঁর কোন সাইনবোর্ড বা নিজনামে ছাপানো প্যাড নাই, শিক্ষকতা করেন বলেই হয়তো)


আব্দুল হক সাহেব কিছুক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকলেন । তিনি বোধহয় ডাঃ রমানাথের লেখা বুঝতে পারছিলেন না । 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন