এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৫

বিসিএস পরীক্ষার্থী ডাঃ কানাই !

ডাঃ কানাই একজন বিসিএস পরীক্ষার্থী । এই উপলক্ষ্যে অনেক বছর পর তিনি কিছু অংক অনুশীলন করিতে মনস্থ করিলেন । বই খুলিবামাত্র তিনি দেখিলেন একটা বানর তৈলাক্ত বাঁশ বাহিয়া প্রতি মিনিটে কিছুদুর উঠিতেছে আবার পরের মিনিটে নামিয়া যাইতেছে । ঐ বানর কতক্ষণে বাঁশের আগায় উঠিবে তিনি তাহা হিসাব করিয়া ফেলিলেন । পরক্ষণেই তিনি দেখিলেন একটা নেড়িকুকুর একটা পাতিশিয়ালকে ধাওয়া করিতেছে । ঐ কুকুর কতক্ষণে শিয়ালকে ধরিবে তাহাও হিসাব করিতে হইল । কিছুদূর অগ্রসর হইবামাত্র তাঁহার হাতে কলা ও লেবু ধরাইয়া দেওয়া হইল । বাঙালি কলা কিনিলো অনেক, ফলে কলাতে লাভ হইলো বটে কিন্তু লেবুতে ক্ষতি হইয়া গেল । কলা বেচা হইলেও রথ দেখা হইলো না । অতঃপর পা বাড়াইয়াই তিনি নিজেকে একটা ব্যাংকের ভেতর আবিস্কার করিলেন । ঐ ব্যাংকে কোন লোকজন নাই । ডাঃ সাহেবকে ব্যাংকের সমস্ত সুদের হিসাব করিয়া দিতে হইলো । রাস্তায় নামিয়া তিনি দেখিলেন রাস্তার কাজ চলিতেছে । রাস্তার আয়তন নিয়া ইঞ্জিনিয়াররা গলদঘর্ম!   ডাক্তার সাহেবকেই ঐ হিসাব করিয়া দিতে হইল । রাস্তার দুইপাশে কতগুলি গাছ লাগানো যাইবে তাহাও ডাক্তার সাহেবকেই বলিয়া দিতে হইলো । এতক্ষণে বেলা পড়িয়া গিয়াছে । ফলে তাহাকে বিদ্যুতের খাম্বা ও গাছের ছায়ার দৈর্ঘ্য নির্ণয় করিতে হইলো । ক্লান্ত দেহে চলন্ত ট্রেনে উঠিতে পারিলেন না বটে কিন্তু ট্রেনের গতিবেগ কত তাহা নির্ণয় করিয়া স্টেশন মাস্টারকে জানাইতে ভুল করিলেন না । শেষে তিনি নৌকায় উঠিয়া নদীর প্রস্থ এবং স্রোতের গতিবেগ নির্ণয় করিয়া মাঝির জীবন বারো আনা পর্যন্ত বৃথা প্রমাণ করিলেন । কুত্তা শিয়ালের দৌড় আর কলা বেঁচার হিসাব ডাক্তারিবিদ্যায় কী কাজে লাগিবে তাহা ভাবিতে ভাবিতে ঘরে ফিরিয়া দেখিলেন বানর এতক্ষণে তৈলাক্ত বাঁশের আগায় উঠিয়া বসিয়াছে ।
বানর নাহয় উঠিয়াছে, কিন্তু এই বাঙালি জাতি তৈলাক্ত বাঁশ বাহিয়া কবে আগায় উঠিবে- যারপরনাই চিন্তিত হইয়া এইবার ডাক্তার কানাই নবোদ্যমে তাহা হিসাব করিতে লাগিলেন । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডাঃ সাহেব তাহার হিসাব মিলাইতে ব্যর্থ হইয়াছেন এবং বাঙালি জাতি আদৌ কোনদিন তৈলাক্ত বাঁশের আগায় পৌঁছিবে কিনা তাহা লইয়া গুরুতর সন্দেহে পতিত হইয়াছেন ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন