ডাঃ কানাই একজন বিসিএস পরীক্ষার্থী । এই উপলক্ষ্যে অনেক বছর পর তিনি কিছু
অংক অনুশীলন করিতে মনস্থ করিলেন । বই খুলিবামাত্র তিনি দেখিলেন একটা বানর
তৈলাক্ত বাঁশ বাহিয়া প্রতি মিনিটে কিছুদুর উঠিতেছে আবার পরের মিনিটে নামিয়া
যাইতেছে । ঐ বানর কতক্ষণে বাঁশের আগায় উঠিবে তিনি তাহা হিসাব করিয়া
ফেলিলেন । পরক্ষণেই তিনি দেখিলেন একটা নেড়িকুকুর একটা পাতিশিয়ালকে ধাওয়া
করিতেছে । ঐ কুকুর কতক্ষণে শিয়ালকে ধরিবে তাহাও হিসাব করিতে হইল । কিছুদূর
অগ্রসর হইবামাত্র তাঁহার হাতে কলা ও লেবু ধরাইয়া দেওয়া হইল ।
বাঙালি কলা কিনিলো অনেক, ফলে কলাতে লাভ হইলো বটে কিন্তু লেবুতে ক্ষতি হইয়া
গেল । কলা বেচা হইলেও রথ দেখা হইলো না । অতঃপর পা বাড়াইয়াই তিনি নিজেকে
একটা ব্যাংকের ভেতর আবিস্কার করিলেন । ঐ ব্যাংকে কোন লোকজন নাই । ডাঃ
সাহেবকে ব্যাংকের সমস্ত সুদের হিসাব করিয়া দিতে হইলো । রাস্তায় নামিয়া তিনি
দেখিলেন রাস্তার কাজ চলিতেছে । রাস্তার আয়তন নিয়া ইঞ্জিনিয়াররা গলদঘর্ম!
ডাক্তার সাহেবকেই ঐ হিসাব করিয়া দিতে হইল । রাস্তার দুইপাশে কতগুলি গাছ
লাগানো যাইবে তাহাও ডাক্তার সাহেবকেই বলিয়া দিতে হইলো । এতক্ষণে বেলা পড়িয়া
গিয়াছে । ফলে তাহাকে বিদ্যুতের খাম্বা ও গাছের ছায়ার দৈর্ঘ্য নির্ণয় করিতে
হইলো । ক্লান্ত দেহে চলন্ত ট্রেনে উঠিতে পারিলেন না বটে কিন্তু ট্রেনের
গতিবেগ কত তাহা নির্ণয় করিয়া স্টেশন মাস্টারকে জানাইতে ভুল করিলেন না ।
শেষে তিনি নৌকায় উঠিয়া নদীর প্রস্থ এবং স্রোতের গতিবেগ নির্ণয় করিয়া মাঝির
জীবন বারো আনা পর্যন্ত বৃথা প্রমাণ করিলেন । কুত্তা শিয়ালের দৌড় আর কলা
বেঁচার হিসাব ডাক্তারিবিদ্যায় কী কাজে লাগিবে তাহা ভাবিতে ভাবিতে ঘরে
ফিরিয়া দেখিলেন বানর এতক্ষণে তৈলাক্ত বাঁশের আগায় উঠিয়া বসিয়াছে ।
বানর নাহয় উঠিয়াছে, কিন্তু এই বাঙালি জাতি তৈলাক্ত বাঁশ বাহিয়া কবে আগায় উঠিবে- যারপরনাই চিন্তিত হইয়া এইবার ডাক্তার কানাই নবোদ্যমে তাহা হিসাব করিতে লাগিলেন । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডাঃ সাহেব তাহার হিসাব মিলাইতে ব্যর্থ হইয়াছেন এবং বাঙালি জাতি আদৌ কোনদিন তৈলাক্ত বাঁশের আগায় পৌঁছিবে কিনা তাহা লইয়া গুরুতর সন্দেহে পতিত হইয়াছেন ।
বানর নাহয় উঠিয়াছে, কিন্তু এই বাঙালি জাতি তৈলাক্ত বাঁশ বাহিয়া কবে আগায় উঠিবে- যারপরনাই চিন্তিত হইয়া এইবার ডাক্তার কানাই নবোদ্যমে তাহা হিসাব করিতে লাগিলেন । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডাঃ সাহেব তাহার হিসাব মিলাইতে ব্যর্থ হইয়াছেন এবং বাঙালি জাতি আদৌ কোনদিন তৈলাক্ত বাঁশের আগায় পৌঁছিবে কিনা তাহা লইয়া গুরুতর সন্দেহে পতিত হইয়াছেন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন