এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বড়ই অদ্ভুত এদেশের ব্যবসায়ীরা !

অদ্ভুত আমাদের দেশ এবং দেশের মানুষ । বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা । যদি কোনোভাবে একটা রব ওঠে যে চাকুরেদের বেতন বাড়ছে বা বাড়ানোর ব্যাপারে আলাপ আলোচনা হচ্ছে- তো ব্যস ! আর ঠেকায় কে? কালবিলম্ব না করে এরা তত্‍ক্ষণাত্‍ জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয় । অথচ এরা কিন্তু সেগুলো কিনেছিল অনেক আগে, অনেক অল্প দামে ।
বাজেটের আগে যখন পত্রিকায় একটা ধারনা দেয়া হয় কোন্ কোন্ জিনিসের দাম বাড়বে, এরা বাজেট পেশ এবং পাশের অপেক্ষা না করে তখনই ঐসব জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয় । অথচ এরা ঐসব জিনিস কিনেছিল অনেক আগে, অল্প দামে ।
সারা বিশ্বে উত্‍সবের আগে বিশেষ ছাড় দেয়া হয় । কিন্তু বাঙালি ব্যবসায়ীরা মুখে লালা জমিয়ে অপেক্ষা করে থাকে কোন একটা উত্‍সবের । ঈদ কিংবা পূজার । তখন এরা বিশেষ গলাকাটা মূল্যে পণ্য বিক্রি করে থাকে ।
.
বেতন বাড়ুক কিংবা বোনাস দেয়া হোক, তাতে ছাপোষা চাকুরেদের জীবনযাত্রায় কোন পরিবর্তন হয় না । যে লাউ সে কদুই থাকে । মাঝখান থেকে ফুলেফেঁপে কলাগাছ থেকে বটগাছ হয় ব্যবসায়ীরা ।
কোনোভাবে যদি তারা বুঝতে পারে কোন একটা জিনিস চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম আছে, ব্যস । হয়ে গেল তাদের পোয়াবারো । মুহূর্তেই ঐ জিনিসের দাম আকাশচুম্বি হয়ে যায় । কখনো কখনো তারাই সিন্ডিকেট বানিয়ে এরকম কৃত্রিম সংকট তৈরি করে । জানা যায়, চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ নাকি হয়েছিল ব্যবসায়ীদের মজুতদারির কারণে । ঐ দুর্ভিক্ষে বাংলার লাখ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল ।
.
যে কৃষক ফসল ফলায় সে ফসলের দাম পায় না, যে কাঁচামাল উত্‍পাদন করে সে তার শ্রমের দাম পায় না । যে চাকুরিজীবী সকাল সন্ধ্যা দেশের কাজ করে সে তার ঘামের মূল্য পায় না । যা পায় তাতে তাদের জীবনযাত্রায় কোন হেরফের হয় না । লাভের গুড় চেটে খায় ঐ ব্যবসায়ীরাই । গুড় খেয়ে মোটাতাজা হলে পরে তারা ইলেকশনে নামে । টাকা ছড়ায় । এবং পরিশেষে এই ব্যবসায়ীরা টাকার জোরে দেশের হর্তাকর্তা বনে যায় ।
অদ্ভুত । বড়ই অদ্ভুত আমাদের বঙ্গদেশ । বড়ই অদ্ভুত এদেশের ব্যবসায়ীরা ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন