এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

জাফর ইকবাল কি লজ্জা রাখার জায়গা পেয়েছেন ?

বেচারা জাফর ইকবাল একজন ‘আজিব চিড়িয়া’ । তিনি মনে করেন গল্পের মত যা ইচ্ছা তাই বলে যাবেন , আর মানুষজন সেগুলো শিশুতোষ গল্পের মত গোগ্রাসে গিলবে !

গত ৩০ আগস্ট পত্রিকায় তাঁর একটা লেখা প্রকাশিত হল- ‘এ লজ্জা রাখি কোথায়’ ! অত্যন্ত যৌক্তিক কথা !  তারতো এমনিতে কখনো লজ্জা ছিল না – তিনি বাঙ্গালিত্বের ডুগডুগি বাজান কিন্তু ভার্সিটির মেয়েদের গায়ে হাত দিয়ে হিন্দি গানের তালে তালে নাচেন , তাঁর মেয়ে নিজের  উল্টাপাল্টা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে, তিনি সর্বদা দালালীতে লিপ্ত থাকেন । আর তাছাড়া, লজ্জা হলো ঈমানের অংগ । কিন্তু তিনি তো নাস্তিক, তাঁর লজ্জা থাকাটা তো বেমানান তাইনা ?  

তো হঠাৎ কিছু লজ্জা কোত্থেকে যেন এসে তাঁর ঘাড়ের ওপর পড়েছে ।  কী বিপদ ! এখন এই লজ্জা তিনি কোথায় রাখবেন ? যেই ভাবা সেই কাজ, লজ্জাটা তিনি আমাদেরকেই দেয়ার ব্যবস্থা করলেন !

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি , যাকে সরকার দালালীর পুরস্কার হিসেবে বাইরে থেকে পুশ করে জাবির ভিসি বানিয়েছে, যিনি ছাত্রলীগের একাংশকে নিয়ে গোপন বৈঠক করে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের ওপর হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁকে শিক্ষকরা অফিসে অবরুদ্ধ করায় একটুকরো বেওকুফ ‘লজ্জা’ বেমক্কা জাফর ইকবাল সাহেবের ঘাড়ে গিয়ে পড়েছে । কী বিপদ কী বিপদ !

তিনি লিখেছেন-
‘শিক্ষকরা বলছেন, তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। ভাইস চ্যান্সেলর বলছেন, তদন্ত কমিটি করে সেই অভিযোগ যাচাই করা হোক। তারপরও সেখানে শিক্ষকরা কেন তাদের ভাইস চ্যান্সেলরকে আটক রেখেছেন, সেটা আমার মোটা বুদ্ধিতে ধরতে পারছি না’ ।

তিনি দাবি করছেন, ‘তদন্ত হোক’ । অথচ কয়েকদিন আগে যখন মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ এর সেক্রেটারি আদিলুর রহমানকে কোন রকম তদন্ত ছাড়াই গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হলো, তিনি সাফাই গেয়ে বলেছিলেন- ‘ঠিক আছে’ !

তিনি লিখলেন-
‘পৃথিবীর যে কোনো দেশে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সম্ভবত সেই দেশের সবচেয়ে জ্ঞানী ও গুণী মানুষ, সবচেয়ে বড় বুদ্ধিজীবী, সবচেয়ে বড় মুক্তবুদ্ধিতে বিশ্বাসী মানুষ এবং সম্ভবত জাতির সবচেয়ে বড় বিবেক। তাই সাধারণ মানুষ যখন দেখে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্বাধীন দেশের একজন নাগরিককে জেলখানার মতো একটা ঘরে আটকে রাখছে, তখন তারা নিশ্চয়ই হতবাক হয়ে যায়’ ।

জনগণও অবাক হয় – যখন মাহমুদুর রহমান, আদিলুর রহমান সহ হাজার হাজার ‘স্বাধীন দেশের নাগরিক’কে জেলখানার মত ঘর নয়- সত্যিকার জেলখানায় বিনা বিচারে বন্দী করে রাখা হয়েছে তখন জাফর সাহেব হাততালি দিয়েছেন ।
 বিচারাধীন বিষয় নিয়ে তিনিই শাহবাগে গিয়ে গলাবাজি করে এসেছেন ।

তিনি আরো লিখলেন,
‘অভিযোগ থাকলে তদন্ত হবে, শাস্তি হবে। কিন্তু আগেই নিজেরা শাস্তি দিয়ে একজনের মানবাধিকার লংঘন করা হবে, সেটি কোন দেশের বিচার?
সেই একই কথা । কয়কেদিন আগেই যখন আদিলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হল কোনরকম ‘তদন্ত’ ছাড়া, তখন এই বেচারাই সাপোর্ট দিয়েছিলেন । কীভাবে পারে ? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে কী করে আনোয়ার হোসেন পারেন ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের ওপর গুণ্ডা লেলিয়ে দিতে ? কী করে আনোয়ার হোসেন পারেন আল্লামা সাঈদীকে ‘কুত্তার বাচ্চা’ গালি দিয়ে মারতে যেতে ?  কীকরে জাফর ইকবাল পারেন নিরপরাধ মানুষকে বিনাবিচারে কারাগারে আটক রাখার পক্ষে সাফাই গাইতে ?

আমাদের লজ্জা হয় । অবশ্য আমাদের লজ্জা রাখার জায়গারও অভাব নেই । কারণ, আমাদের আগে থেকেই লজ্জা আছে !


জাফর ইকবাল কি অবশেষে লজ্জা রাখার জায়গা পেয়েছেন ? সেরকম খবর অবশ্য এখনো পাইনি । তবে আমি নিশ্চিত, লজ্জা তাঁর কাছ থেকে পালিয়েছে । সত্যিই তো, তাঁর মত নির্লজ্জ লোক লজ্জা কোথায় রাখবেন ?  তিনিতো জনগনকে একের পর এক লজ্জা দিয়েই যাচ্ছেন ! কিংবা  ‘লজ্জা’ হয়তো  নিজেই ‘লজ্জা’ পেয়ে গেছে ! হু নোজ ?  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন