ডাক্তাররা
কমিশন খাওয়া বন্ধ করলে চিকিৎসা ব্যয় ৪০% কমে যাবে। এই ছিল দৈনিক
ইত্তেফাকের সাম্প্রতিক একটি খবরের শিরোনাম। প্রফেসর প্রাণ গোপাল স্যারকে
উদ্ধৃত করে তারা এই সংবাদটি করেছে। আমি নিশ্চিত এটা প্রাণ গোপাল স্যারের
বক্তব্যের একটা খন্ডিত অংশ মাত্র। তিনি নিশ্চয়ই আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা
বলেছেন। কিন্তু সাংবাদিক মহাশয় সেসব বাদ দিয়ে এই খন্ডিত অংশটিকে হাইলাইট
করেছেন।
এবং বলা বাহুল্য, খবরটি বংগ জনতার খুবই "মনে ধরেছে"!! কোন এক অদ্ভুত কারণে এদেশের মানুষের একটা অংশ ডাক্তারের বিরুদ্ধে কথা বলতে পৈশাচিক আনন্দ বোধ করেন।
যাহোক, প্রশ্ন হচ্ছে, সমস্যাটা আসলে কি "ডাক্তারদের কমিশন খাওয়া"?
সম্পূরক প্রশ্নগুলো হচ্ছে, ডাক্তাররা কীভাবে কমিশন খায়? ডাক্তাররা কি কাউকে কমিশন দিতে বাধ্য করতে পারে? আর কীভাবে এটা বন্ধ করা যায়?
প্রথমত, ডাক্তারদের মধ্যে বেশিরভাগই কোনরকম কমিশন খান না। বরং যেখানেই সম্ভব, চেষ্টা করেন রোগীর ল্যাব খরচ কমাতে।
গুটিকয়েক অসাধু ডাক্তার কমিশন খান। তারা এটা খান "ডাক্তার" হিসেবে না, মন্দ মানুষ হিসেবে। প্রত্যেক প্রফেশনে যেমন কিছু মন্দ মানুষ আছে, তেমনই।
দ্বিতীয়ত, কোন ডাক্তারই কমিশন দিতে কাউকে বাধ্য করেন না। বরং, ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোই অনেকসময় ডাক্তারকে বাধ্য করে কমিশন নিতে। কারণ, তারা ল্যাব টেস্টের দাম কমায় না। বরং, রেফারেলের জন্য বরাদ্দ টাকাটা ডাক্তার না নিলেও ল্যাবেরই কেউ না কেউ ডাক্তারের নাম করে মেরে দেয়। এজন্য অনেক ডাক্তারই আছেন, রেফারেল ফি নামে যে টাকা ডায়াগনোস্টিকগুলো দেয়, সেটা তারা পুরোপুরি গরীব রোগীদের জন্য ব্যয় করেন।
আর বড় হাসপাতালগুলোতে যারা বসেন, তারা আসলে কোনভাবেই এইসব কমিশন টমিশন পান না। এইসব ঘটে মূলত ছোটখাটো নামকাওয়াস্তে হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক গুলোতে।
তৃতীয়ত, মূল প্রশ্ন হচ্ছে, এই কমিশন প্রথার জন্য দায়ী কে? ডাক্তার, নাকি অন্য কেউ? এটা বন্ধ করার উপায়টাই বা কী?
আসলে এই প্রথা কোনভাবেই ডাক্তারদের তৈরি নয়। এটা তৈরি করেছে ব্যবসায়ীরা, যারা মানুষের অসুস্থতাকে ব্যবসার পুঁজি করেছে টাকা বানানোর উপায় হিসেবে। তারা বিভিন্ন ল্যাব টেস্ট এর মূল্য অস্বাভাবিক বেশি রেখে মুনাফা করছে, আরো বেশি মুনাফার লোভে ডাক্তারদের পেছনে টাকা নিয়ে ঘোরাফেরা করে, আর কিছু কিছু ডাক্তারকে খাওয়াতেও পেরেছে।
এটা বন্ধ করার উপায় কী? ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে নসিহত কিংবা উষ্মা প্রকাশে কোন সমাধান আসবে কি?
মোটেও না। গোড়ায় হাত দিতে হবে। এইযে ল্যাব টেস্টগুলোর অস্বাভাবিক মূল্য, এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোতে বিভিন্ন টেস্টের মূল্য বেঁধে দিতে হবে। ডায়াগনোস্টিক সেন্টার যদি অতিরিক্ত মূল্য নিতে না পারে, তাহলে তারা কোথা থেকে কমিশন দেবে? ফলে অটোমেটিকালি বন্ধ হয়ে যাবে এই তথাকথিত কমিশন প্রথা ।
একই কথা ঔষধের ক্ষেত্রেও। ঔষধের দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে অস্বাভাবিক বেশি। এটা নিয়ন্ত্রণ করলে মানুষের চিকিৎসা ব্যয় কমবে।
কিন্তু এই দায়িত্ব তো ডাক্তারদের না! এটা প্রশাসনের দায়িত্ব, সরকারের দায়িত্ব। সুতরাং, "ডাক্তাররা কমিশন খাওয়া" বন্ধ করলে চিকিৎসা ব্যয় কমবে, এটা একটা অযৌক্তিক কথা। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিমূলক এবং বলা যায় পরশ্রীকাতরতানির্ভর বক্তব্য। এটা প্রাণ গোপাল স্যারের বক্তব্য নয়, এটা ঐ সাংবাদিকেরই টুইস্টেড কথা। আসলে বক্তব্যটা হওয়া উচিৎ, ঔষধ ও ডায়াগনোস্টিক টেস্টের মূল্য নির্ধারণ করে দিলে চিকিৎসা ব্যয় কমবে। কিন্তু সেকথা না বলে, সমস্যার মূলে আঘাত না করে, শুধু ডাক্তারদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বক্তব্য দেয়া আসলে অসুস্থ মানসিকতা ছাড়া আর কিছু নয়।
এবং বলা বাহুল্য, খবরটি বংগ জনতার খুবই "মনে ধরেছে"!! কোন এক অদ্ভুত কারণে এদেশের মানুষের একটা অংশ ডাক্তারের বিরুদ্ধে কথা বলতে পৈশাচিক আনন্দ বোধ করেন।
যাহোক, প্রশ্ন হচ্ছে, সমস্যাটা আসলে কি "ডাক্তারদের কমিশন খাওয়া"?
সম্পূরক প্রশ্নগুলো হচ্ছে, ডাক্তাররা কীভাবে কমিশন খায়? ডাক্তাররা কি কাউকে কমিশন দিতে বাধ্য করতে পারে? আর কীভাবে এটা বন্ধ করা যায়?
প্রথমত, ডাক্তারদের মধ্যে বেশিরভাগই কোনরকম কমিশন খান না। বরং যেখানেই সম্ভব, চেষ্টা করেন রোগীর ল্যাব খরচ কমাতে।
গুটিকয়েক অসাধু ডাক্তার কমিশন খান। তারা এটা খান "ডাক্তার" হিসেবে না, মন্দ মানুষ হিসেবে। প্রত্যেক প্রফেশনে যেমন কিছু মন্দ মানুষ আছে, তেমনই।
দ্বিতীয়ত, কোন ডাক্তারই কমিশন দিতে কাউকে বাধ্য করেন না। বরং, ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোই অনেকসময় ডাক্তারকে বাধ্য করে কমিশন নিতে। কারণ, তারা ল্যাব টেস্টের দাম কমায় না। বরং, রেফারেলের জন্য বরাদ্দ টাকাটা ডাক্তার না নিলেও ল্যাবেরই কেউ না কেউ ডাক্তারের নাম করে মেরে দেয়। এজন্য অনেক ডাক্তারই আছেন, রেফারেল ফি নামে যে টাকা ডায়াগনোস্টিকগুলো দেয়, সেটা তারা পুরোপুরি গরীব রোগীদের জন্য ব্যয় করেন।
আর বড় হাসপাতালগুলোতে যারা বসেন, তারা আসলে কোনভাবেই এইসব কমিশন টমিশন পান না। এইসব ঘটে মূলত ছোটখাটো নামকাওয়াস্তে হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক গুলোতে।
তৃতীয়ত, মূল প্রশ্ন হচ্ছে, এই কমিশন প্রথার জন্য দায়ী কে? ডাক্তার, নাকি অন্য কেউ? এটা বন্ধ করার উপায়টাই বা কী?
আসলে এই প্রথা কোনভাবেই ডাক্তারদের তৈরি নয়। এটা তৈরি করেছে ব্যবসায়ীরা, যারা মানুষের অসুস্থতাকে ব্যবসার পুঁজি করেছে টাকা বানানোর উপায় হিসেবে। তারা বিভিন্ন ল্যাব টেস্ট এর মূল্য অস্বাভাবিক বেশি রেখে মুনাফা করছে, আরো বেশি মুনাফার লোভে ডাক্তারদের পেছনে টাকা নিয়ে ঘোরাফেরা করে, আর কিছু কিছু ডাক্তারকে খাওয়াতেও পেরেছে।
এটা বন্ধ করার উপায় কী? ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে নসিহত কিংবা উষ্মা প্রকাশে কোন সমাধান আসবে কি?
মোটেও না। গোড়ায় হাত দিতে হবে। এইযে ল্যাব টেস্টগুলোর অস্বাভাবিক মূল্য, এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোতে বিভিন্ন টেস্টের মূল্য বেঁধে দিতে হবে। ডায়াগনোস্টিক সেন্টার যদি অতিরিক্ত মূল্য নিতে না পারে, তাহলে তারা কোথা থেকে কমিশন দেবে? ফলে অটোমেটিকালি বন্ধ হয়ে যাবে এই তথাকথিত কমিশন প্রথা ।
একই কথা ঔষধের ক্ষেত্রেও। ঔষধের দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে অস্বাভাবিক বেশি। এটা নিয়ন্ত্রণ করলে মানুষের চিকিৎসা ব্যয় কমবে।
কিন্তু এই দায়িত্ব তো ডাক্তারদের না! এটা প্রশাসনের দায়িত্ব, সরকারের দায়িত্ব। সুতরাং, "ডাক্তাররা কমিশন খাওয়া" বন্ধ করলে চিকিৎসা ব্যয় কমবে, এটা একটা অযৌক্তিক কথা। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিমূলক এবং বলা যায় পরশ্রীকাতরতানির্ভর বক্তব্য। এটা প্রাণ গোপাল স্যারের বক্তব্য নয়, এটা ঐ সাংবাদিকেরই টুইস্টেড কথা। আসলে বক্তব্যটা হওয়া উচিৎ, ঔষধ ও ডায়াগনোস্টিক টেস্টের মূল্য নির্ধারণ করে দিলে চিকিৎসা ব্যয় কমবে। কিন্তু সেকথা না বলে, সমস্যার মূলে আঘাত না করে, শুধু ডাক্তারদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বক্তব্য দেয়া আসলে অসুস্থ মানসিকতা ছাড়া আর কিছু নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন