কাল নাকি #বন্ধু দিবস ছিল । অনেক #দিবস
প্রচলিত হয়েছে । মা দিবস, বাবা দিবস, বন্ধু দিবস , ভালবাসা দিবস এইসব ।
যেকোন দিবস পালনের ক্ষেত্রে দুটো গ্রুপ দেখা যায় । এক গ্রুপ অনেক উৎসাহ
উদ্দীপনা নিয়ে প্রচলিত গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিবস উদযাপনে মেতে ওঠে ।
আরেক গ্রুপ এসব দিবসের বিরোধিতায় নেমে পড়ে ।
যেমন বন্ধু দিবসে একদল তরুণ –তরুণী ‘বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল’ ভেবে ছেলে মেয়ে একে অপরের ওপর লাফিয়ে পড়া, দিনভর বেহুদা কথাবার্তার আড্ডা দেয়া , এইসবে এতে উঠেছিল । আবার অপরপক্ষ , বিশেষত ইসলামী ধ্যানধারণা লালনকারী গোষ্ঠি ‘বন্ধু তো সবসময়ের- দিবসের কী দরকার ?’, ‘দিবসের মাধ্যমে বেহায়াপনা-অশ্লীলতার প্রচার হচ্ছে’ এসব কথা বলে এর বিরোধিতা করেন ।
উভয়পক্ষই ভুল কনসেপশনের ওপর দাঁড়িয়ে আছে বলেই আমার মনে হয় ।
বন্ধুত্ব আসলেই সবসময়ের , কেউ বললেও সবসময়ের- না বললেও সবসময়ের । সেজন্য বিশেষ দিবসের প্রয়োজন হয়না । কিন্তু একটা দিবস যদি পালন করা হয়- সেটা কি ক্ষতিকর কিছু ? আমার মনে হয়না । যেমন ধরুন- গাছ রোপন করা সবার দায়িত্ব, সবসময়ের জন্যই । কিন্তু তবুও ‘বৃক্ষরোপন সপ্তাহ’ পালন করা হয় । শিশুদের অধিকার রক্ষা করা সবসময়ের কাজ , কিন্তু তবুও তো ‘শিশু সপ্তাহ’, ‘শিশু অধিকার দিবস’ পালন করা হয় । মানবাধিকার দিবস , পরিবেশ দিবস এরকম শত শত দিবস পালন করা হয় । আপনি কি এগুলোর বিরোধিতা করেন ? সম্ভবত না ।
আরো আছে । আনন্দ –বেদনা মানুষের জীবনের নিত্যসঙ্গী । কিন্তু তবু আমাদের আছে দুটি ঈদের দিন । আনন্দের দিন । তার মানে কি অন্যান্য দিনে মুসলমানেরা আনন্দ করেনা ? তা তো নয় ।
সুতরাং টুলসের বিরোধিতা করার সস্তা প্রতিক্রিয়াশীলতা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার । টুলসের বিরোধিতা করার প্রয়োজন নেই- প্রয়োজন টুলস ব্যবহারের মানসিকতার পরিবর্তন, উদ্দেশ্যের পরিবর্তন । উদ্দেশ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা । ঈদ উপলক্ষ্যেও সিনেমা হলে অশ্লীল সিনেমার প্রদর্শনী হয় । গানের এ্যালবাম বের হয় । উদ্দাম কনসার্টের আয়োজন হয় । স্টার জলসা, স্টার মুভিজ, এ এক্স এন, আল জাজিরা , ন্যাট জিও, পিস টিভি সবই টিভি চ্যানেল । পার্থক্যটা আপনি নিজেই বোঝেন- উদ্দেশ্য ও বাস্তবায়ন পদ্ধতির ভিন্নতা । সুতরাং গোড়ায় হাত দিতে হবে । সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সংস্কারে হাত দিতে হবে ।
বন্ধুত্ব দিবস উপলক্ষ্যে যদি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বন্ধুদের খোঁজ নেয়া হয় , যদি কোন বন্ধুর কোন সাহায্যে এগিয়ে আসা যায় সেটা তো ভালোই ।
তবে এটা বুঝতে হবে-
#বন্ধুত্ব মানে শুধু ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দেয়া নয়, বন্ধুত্ব মানে ছেলে মেয়ের অবাধ মেলামেশা নয় , একে অপরের ওপর ঝাপিয়ে পড়া নয় । বন্ধুত্ব মানে একসাথে মিলে দুষ্টুমি করা নয় । খারাপ কাজেও সহযোগিতা করা নয় ।
বন্ধুত্ব মানে বন্ধুর প্রতি দায়িত্ববোধ, বন্ধুর বিপদে আপদে সবার আগে এগিয়ে আসা, সবাই মিলে ভালো উদ্যোগ নেয়া, ভালো কাজ করা । বন্ধু বিপথে গেলে টেনে ফিরিয়ে আনা ।
একজন বন্ধু যখন অসুস্থ হয়- তখন বন্ধুরা রাত জেগে তাঁকে সঙ্গ দেয় । বন্ধুর জন্য রাস্তায় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দাঁড়াতেও কখনো লজ্জা হয় না । এমন বন্ধুত্বই প্রয়োজন ।
তবু সবার আগে মা-বাবা, ভাই বোন । তারপর বন্ধু । সেকথাও মনে রাখা দরকার ।
বন্ধুত্ব থাকুক । বন্ধু দিবসও থাকুক । সবকিছু হোক কল্যাণের জন্য । সত্যের পথে । ন্যায়ের পথে ।
বন্ধু হোক জান্নাতের পাথেয় । বন্ধু হোক চিরকালের- দুনিয়া এবং আখেরাতে ।
০৫-০৮-২০১৩
যেমন বন্ধু দিবসে একদল তরুণ –তরুণী ‘বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল’ ভেবে ছেলে মেয়ে একে অপরের ওপর লাফিয়ে পড়া, দিনভর বেহুদা কথাবার্তার আড্ডা দেয়া , এইসবে এতে উঠেছিল । আবার অপরপক্ষ , বিশেষত ইসলামী ধ্যানধারণা লালনকারী গোষ্ঠি ‘বন্ধু তো সবসময়ের- দিবসের কী দরকার ?’, ‘দিবসের মাধ্যমে বেহায়াপনা-অশ্লীলতার প্রচার হচ্ছে’ এসব কথা বলে এর বিরোধিতা করেন ।
উভয়পক্ষই ভুল কনসেপশনের ওপর দাঁড়িয়ে আছে বলেই আমার মনে হয় ।
বন্ধুত্ব আসলেই সবসময়ের , কেউ বললেও সবসময়ের- না বললেও সবসময়ের । সেজন্য বিশেষ দিবসের প্রয়োজন হয়না । কিন্তু একটা দিবস যদি পালন করা হয়- সেটা কি ক্ষতিকর কিছু ? আমার মনে হয়না । যেমন ধরুন- গাছ রোপন করা সবার দায়িত্ব, সবসময়ের জন্যই । কিন্তু তবুও ‘বৃক্ষরোপন সপ্তাহ’ পালন করা হয় । শিশুদের অধিকার রক্ষা করা সবসময়ের কাজ , কিন্তু তবুও তো ‘শিশু সপ্তাহ’, ‘শিশু অধিকার দিবস’ পালন করা হয় । মানবাধিকার দিবস , পরিবেশ দিবস এরকম শত শত দিবস পালন করা হয় । আপনি কি এগুলোর বিরোধিতা করেন ? সম্ভবত না ।
আরো আছে । আনন্দ –বেদনা মানুষের জীবনের নিত্যসঙ্গী । কিন্তু তবু আমাদের আছে দুটি ঈদের দিন । আনন্দের দিন । তার মানে কি অন্যান্য দিনে মুসলমানেরা আনন্দ করেনা ? তা তো নয় ।
সুতরাং টুলসের বিরোধিতা করার সস্তা প্রতিক্রিয়াশীলতা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার । টুলসের বিরোধিতা করার প্রয়োজন নেই- প্রয়োজন টুলস ব্যবহারের মানসিকতার পরিবর্তন, উদ্দেশ্যের পরিবর্তন । উদ্দেশ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা । ঈদ উপলক্ষ্যেও সিনেমা হলে অশ্লীল সিনেমার প্রদর্শনী হয় । গানের এ্যালবাম বের হয় । উদ্দাম কনসার্টের আয়োজন হয় । স্টার জলসা, স্টার মুভিজ, এ এক্স এন, আল জাজিরা , ন্যাট জিও, পিস টিভি সবই টিভি চ্যানেল । পার্থক্যটা আপনি নিজেই বোঝেন- উদ্দেশ্য ও বাস্তবায়ন পদ্ধতির ভিন্নতা । সুতরাং গোড়ায় হাত দিতে হবে । সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সংস্কারে হাত দিতে হবে ।
বন্ধুত্ব দিবস উপলক্ষ্যে যদি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বন্ধুদের খোঁজ নেয়া হয় , যদি কোন বন্ধুর কোন সাহায্যে এগিয়ে আসা যায় সেটা তো ভালোই ।
তবে এটা বুঝতে হবে-
#বন্ধুত্ব মানে শুধু ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দেয়া নয়, বন্ধুত্ব মানে ছেলে মেয়ের অবাধ মেলামেশা নয় , একে অপরের ওপর ঝাপিয়ে পড়া নয় । বন্ধুত্ব মানে একসাথে মিলে দুষ্টুমি করা নয় । খারাপ কাজেও সহযোগিতা করা নয় ।
বন্ধুত্ব মানে বন্ধুর প্রতি দায়িত্ববোধ, বন্ধুর বিপদে আপদে সবার আগে এগিয়ে আসা, সবাই মিলে ভালো উদ্যোগ নেয়া, ভালো কাজ করা । বন্ধু বিপথে গেলে টেনে ফিরিয়ে আনা ।
একজন বন্ধু যখন অসুস্থ হয়- তখন বন্ধুরা রাত জেগে তাঁকে সঙ্গ দেয় । বন্ধুর জন্য রাস্তায় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দাঁড়াতেও কখনো লজ্জা হয় না । এমন বন্ধুত্বই প্রয়োজন ।
তবু সবার আগে মা-বাবা, ভাই বোন । তারপর বন্ধু । সেকথাও মনে রাখা দরকার ।
বন্ধুত্ব থাকুক । বন্ধু দিবসও থাকুক । সবকিছু হোক কল্যাণের জন্য । সত্যের পথে । ন্যায়ের পথে ।
বন্ধু হোক জান্নাতের পাথেয় । বন্ধু হোক চিরকালের- দুনিয়া এবং আখেরাতে ।
০৫-০৮-২০১৩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন