ফাল্গুন মানে আমার চোখে লাল লাল শিমুলের ফুল । আর ভোরবেলা কোকিলের কুহু
ডাক । উত্তরবঙ্গে ফাগুন মাসেও শীতের আমেজ থেকে যায় । ফযরের নামাজ শেষে কেডস
পায়ে আমরা ছোটরা দৌড়াদৌড়ি করতাম । বাড়ির পেছনেই প্রকান্ড শিমুল গাছ ।
আঙ্গিনায় দাঁড়ালেই চোখে আসে সুর্যের আলোয় চকচক করছে লাল টুকটুকে অগুণতি
শিমুল ফুল । গাছতলায় ঝরে পড়া শিমুল ফুল কুড়িয়ে মালা গাঁথার প্রতিযোগিতা হত
আমাদের ভেতর । কার মালা কত বড় হয় ! দিনশেষে সে মালা হয়তো গরুর খাদ্য হত
অথবা গরুর গলায় ঝুলতো ! তবু পরদিন আবারো মহা উৎসাহে ফুল কুড়িয়ে মালা গাঁথার
অকারণ প্রতিযোগিতায় নামতাম আমরা ।
ফেব্রুয়ারির শুরু । গ্রামের স্কুলে তখনো পুরোপুরি ক্লাস শুরু হয়না । পড়ার চাপও নেই বললেই চলে । বাঁশের কঞ্চির একাংশ সূঁচালো করে সেখানে বিঁধে নিতাম শিমুল ফল । আমরা বলতাম মোচা । তারপর চলতো মোচা নিক্ষেপের প্রতিযোগিতা । কারটা কত দূরে গিয়ে পড়ে ! মার্বেল আর ডাংগুলি খেলার বাইরে এ ছিল এক মজার খেলা ।
ছোটবেলার বসন্ত মানেই তাই আমার কাছে শিমুল ফুলের মালা । গাছের ডালে দোয়েল-শালিকের ওড়াউড়ি । মধ্য দুপুরে ঘুঘুর অন্তরভেদী ডাক ।
চৈত্র মাসে তৈরি হয় আরেক অসাধারণ দৃশ্যের । শিমুলের মোচা ফেটে সাদা সাদা তুলা উড়ে বেড়ায় আকাশে । আমাদের বাড়ির আকাশে সবসময় ঘুরে বেড়াত তুলোর মেঘ !
মাঝে মাঝে আমরা ছোটরা বাতাসে ভেসে বেড়ানো তুলা ধরবার চেষ্টা করতাম । ধরতে ধরতে ছোট হাতের ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে যেত তুলোর টুকরা । হাতে নিলে সদ্য ডিম ফোটা মুরগীর বাচ্চার মত লাগতো সাদা পেজা তুলো !

এরই মাঝে কখন যেন আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয় । আমের মুকুলের গন্ধে এক অন্যরকম মাদকতা । বাড়ির চারপাশ ঘিরে আমের গাছ , চোখে আমের মুকুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য , নাকে আমের সুগন্ধ ! কী যে ভালো লাগতো !
বাড়ির সামনে খোলা জায়গা । ওখানে এক বিঘা জমিতে সরিষার ক্ষেত । দিগন্তজোড়া না হলেও সে দৃশ্যটাও ছিল অসাধারণ ।
মেডিকেল কলেজে আমার হোস্টেলে , ঠিক আমার রুমের পেছনেই কৃষ্ণচূড়ার গাছ ছিল । আমার জানালায় কৃষ্ণচূড়ার ফুল জানিয়ে দিত ফাগুনের আগমন বার্তা । বিকাল হলে গল্পের বই হাতে ছাদের ওপর কৃষ্ণচূড়ার ফুলের মাঝে বসে কত বই পড়েছি !
নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হয় । কৃত্রিম উচ্ছ্বাসে নয় - সত্যিকারের ফাল্গুন, সত্যিকারের বসন্ত পেরিয়ে এসেছি জীবনে ।
দিন গেছে । হয়ে গেছি যান্ত্রিক । আজও এসেছে ফাগুন । এসেছে বসন্ত । আজ আমার কৃষ্ণচূড়াও নেই , শিমুল ফুলের মালাও নেই । স্মৃতির মাঝে শুধু আছে- সেইযে আমার লাল টুকটুক শিমুলরঙ্গা দিনগুলি...
ফেব্রুয়ারির শুরু । গ্রামের স্কুলে তখনো পুরোপুরি ক্লাস শুরু হয়না । পড়ার চাপও নেই বললেই চলে । বাঁশের কঞ্চির একাংশ সূঁচালো করে সেখানে বিঁধে নিতাম শিমুল ফল । আমরা বলতাম মোচা । তারপর চলতো মোচা নিক্ষেপের প্রতিযোগিতা । কারটা কত দূরে গিয়ে পড়ে ! মার্বেল আর ডাংগুলি খেলার বাইরে এ ছিল এক মজার খেলা ।
ছোটবেলার বসন্ত মানেই তাই আমার কাছে শিমুল ফুলের মালা । গাছের ডালে দোয়েল-শালিকের ওড়াউড়ি । মধ্য দুপুরে ঘুঘুর অন্তরভেদী ডাক ।
চৈত্র মাসে তৈরি হয় আরেক অসাধারণ দৃশ্যের । শিমুলের মোচা ফেটে সাদা সাদা তুলা উড়ে বেড়ায় আকাশে । আমাদের বাড়ির আকাশে সবসময় ঘুরে বেড়াত তুলোর মেঘ !
মাঝে মাঝে আমরা ছোটরা বাতাসে ভেসে বেড়ানো তুলা ধরবার চেষ্টা করতাম । ধরতে ধরতে ছোট হাতের ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে যেত তুলোর টুকরা । হাতে নিলে সদ্য ডিম ফোটা মুরগীর বাচ্চার মত লাগতো সাদা পেজা তুলো !

এরই মাঝে কখন যেন আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয় । আমের মুকুলের গন্ধে এক অন্যরকম মাদকতা । বাড়ির চারপাশ ঘিরে আমের গাছ , চোখে আমের মুকুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য , নাকে আমের সুগন্ধ ! কী যে ভালো লাগতো !
বাড়ির সামনে খোলা জায়গা । ওখানে এক বিঘা জমিতে সরিষার ক্ষেত । দিগন্তজোড়া না হলেও সে দৃশ্যটাও ছিল অসাধারণ ।
মেডিকেল কলেজে আমার হোস্টেলে , ঠিক আমার রুমের পেছনেই কৃষ্ণচূড়ার গাছ ছিল । আমার জানালায় কৃষ্ণচূড়ার ফুল জানিয়ে দিত ফাগুনের আগমন বার্তা । বিকাল হলে গল্পের বই হাতে ছাদের ওপর কৃষ্ণচূড়ার ফুলের মাঝে বসে কত বই পড়েছি !
নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হয় । কৃত্রিম উচ্ছ্বাসে নয় - সত্যিকারের ফাল্গুন, সত্যিকারের বসন্ত পেরিয়ে এসেছি জীবনে ।
দিন গেছে । হয়ে গেছি যান্ত্রিক । আজও এসেছে ফাগুন । এসেছে বসন্ত । আজ আমার কৃষ্ণচূড়াও নেই , শিমুল ফুলের মালাও নেই । স্মৃতির মাঝে শুধু আছে- সেইযে আমার লাল টুকটুক শিমুলরঙ্গা দিনগুলি...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন