এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৭

বিয়েঃ যুদ্ধটা হোক একসাথে

মেয়েদের গার্জিয়ানরা সবসময় চান- ছেলে যেন পুরোপুরি এস্টাবলিশড হয়! তার যেন অলরেডি বাড়ি গাড়ি থাকে!
তারা হয়তো ভুলে যান, অথবা জানেন না, যে ছেলে সবসময় সবকিছু না চাইতেই পেয়ে এসেছে, কিংবা যে ছেলে সবকিছু নিজে নিজে গুছিয়ে ফেলেছে- তার ঘরে নতুন বউ নতুন একটা আসবাবের মত বাড়তি সংযোজন মাত্রঃ যা তার কিছু শারীরিক ও মানসিক চাহিদা মেটাবে।

আসলে এস্টাবলিশমেন্ট নয়, দেখা উচিৎ পটেনশিয়ালিটি। দেখা উচিত স্বভাব চরিত্র।

আর বিয়েটা দেয়া উচিৎ সবকিছু গুছিয়ে নেয়া বা প্রতিষ্ঠিত হবার পর নয়, ছেলেমেয়েদের জীবনে সংগ্রাম বাকি থাকতেই। যাতে করে জীবনের বাকি যুদ্ধটা তারা দু'জনে একসাথে চালিয়ে নিতে পারে। যুদ্ধ করে করে জীবন এগিয়ে গেলে তবেই সম্পর্কটা হবে ইস্পাতকঠিন। নিঃস্বার্থ ভালোবাসাময়।

মানুষ সবসময় তাকেই বেশি ভালবাসে, বেশি আপন মনে করে, যে ছিল বিপদ মুহূর্তের সাথী। জীবনের বিভিন্ন কঠিন সময়ে যারা আমাদের সঙ্গে থাকে তাদেরকে আমরা ভুলতে পারিনা। তাদের সাথে সম্পর্কটা একসময় সত্যি সত্যিই স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে যায়।

বিয়ের ক্ষেত্রেও অবস্থাটা ভিন্ন কিছু নয়। যে স্বামী স্ত্রী একসাথে সংগ্রাম করে করে জীবনের পথে এগিয়ে যায়- তাদের বন্ধনটাই হয় সবচেয়ে দৃঢ়। তাদের ভালোবাসা হয় সবচেয়ে গাঢ়। সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী। কারণ, কঠিন সময়গুলোই মানুষের অন্তরে দাগ কেটে যায়। জীবনের শেষ দিনেও হয়তো মনে পড়ে - একদিন আমরা এক বেলা উপোস ছিলাম।
খাদিজা (রাঃ) এর মৃত্যুর পর আল্লাহর রাসুল (সাঃ) আরো বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তিনি কখনো খাদিজা (রাঃ)কে ভুলে যাননি। খাদিজার কথা ভেবে তিনি কাঁদতেন। খাদিজার আত্মীয় ও বান্ধবীদের খোঁজ খবর নিতেন, উপহার পাঠাতেন।
কারণ, খাদিজা (রাঃ) ছিলেন তাঁর দুঃখের দিনের সাথী, কঠিন সময়ের সহযোদ্ধা।

রাসুল(সাঃ) যখন হেরা গুহায় ধ্যান করতেন খাদিজা (রাঃ) তখন রাতের আঁধারে তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। নবুয়ত পাওয়ার পরের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোয় সবসময় সাহস ও সমর্থন যুগিয়ে গেছেন একজন বয়সী নারী, হযরত খাদিজা(রাঃ)।

এমন প্রাণের বন্ধুকে, এমন আত্মার আত্মীয়কে কখনোই ভোলা যায় না।

(বিবাহ কথন-৩)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন