এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৭

এক গ্লাস তরল ভালোবাসা...

গার্জিয়ানদের ইচ্ছা- তারা মেয়েকে এমন ঘরে বিয়ে দেবেন, যেখানে গিয়ে মেয়ে সবকিছু রেডিমেড পাবে। সবকিছু পাবে সাজানো গোছানো। যেন সে শুধু একটা সাজানো বাগানে গিয়ে প্রবেশ করবে মাত্র!!!

কিন্তু আমার মনে হয়, একটা নতুন সংসার হওয়া উচিৎ একেবারেই নতুন। এমনকি খাটটাও যদি স্বামী স্ত্রী দু'জনে একসাথে মিলে কিনতে পারে সেটাও ভালো। বিষয়টা হওয়া উচিৎ এমন- নিজেদের জন্য একেকটা প্লেট, গ্লাস, রান্নার চুলা, কড়াই, হাড়ি পাতিল- সবকিছু তারা নিজেরা নিজেরা কিনুক, নিজের মত করে একটা একটা করে কিনে সাজাক নতুন সংসার।

উইমেন সাইকোলজিই বোধহয় পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় সাবজেক্ট :P আর আমার জ্ঞান সেখানে হিমাংকেরও শত ডিগ্রী নিচে। তবুও মা, খালা, বোনদের কর্মকান্ড দেখে যতটুকু বুঝেছি- প্রত্যেক মেয়েই নিজের সংসারটা একান্তই নিজের মনের মত করে সাজাতে চায়। একটা একটা করে আসবাব কিনে তিল তিল করে যে সংসার একজন নারী সাজিয়ে নেন, তার প্রতি মায়া থাকে অন্যরকম। প্রতিটি জিনিসকে মনে হয় তার নিজের সন্তানের মত। একান্তই নিজের। যদি কখনো বাইরের পৃথিবী অসহ্য হয়ে ওঠে, এইসব তৈজসপত্রের মাঝেও তারা খুঁজে পান সুখ।
যতটা চিন্তা গবেষণা করে তারা একটা ডিনার সেট কেনেন, ততটা চিন্তা নিজের বিয়ের সময়ও কেউ করেন কিনা সন্দেহ :P
 
নতুন সংসারে খুনসুটি করে কেনা একেকটা আসবাব হয়ে থাকে জীবনের একেকটা মাইলফলক।

ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিলেই সবকিছু সাজিয়ে গুছিয়ে দেবেন না। তাদের নিজেদের সংসার নিজেদের মত করে সাজাতে বলুন।

নিজেদের কষ্টের টাকায় নিজেরা কিনে আনা একটা টিনের থালায়- পান্তাভাতকেই তাদের মনে হবে যেন বেহেশত থেকে পাওয়া মান্না সালওয়া।

আর গ্লাস কিংবা মগে পানি খাওয়ার সময় মনে হবে- এ যেন পানি নয়, হৃদয় নিঙরানো এক গ্লাস তরল ভালোবাসা  

(বিবাহ কথন-৪)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন