ঈদের জামাতে মহিলাদের অংশগ্রহণের সুযোগ আছে কোথাও? বাংলাদেশের কোন ঈদগাহে কি মহিলারা অংশ নেন? আমার জানা নাই। আর উত্তরটা সম্ভবত 'না'। কীভাবে মেয়েদেরকে ধর্মের কাজ থেকেও দূরে রাখা হয়েছে এইটা হলো তার একটা প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
আর এর কারণ হলো আমাদের দেশের, বলতে গেলে এই উপমহাদেশের আলেম-ওলামাদের অতিবুযুর্গীপনার নামে নারীদের বঞ্চিত করার বিশেষ প্রবণতা।
অথচ আল্লাহর রাসুল (সাঃ) মহিলাদের ঈদের জামাতে অংশ নিতে জোর তাগিদ দিয়েছেন। এমনকি যেসময় নারীদের জন্য নামাজ পড়াই নিষিদ্ধ, সে অবস্থায়ও তাদের ঈদগাহে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। যাদের ওড়না নেই, তাদেরকে অন্য বোনের ওড়না ধার করে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
অথচ আল্লাহর রাসুল (সাঃ) মহিলাদের ঈদের জামাতে অংশ নিতে জোর তাগিদ দিয়েছেন। এমনকি যেসময় নারীদের জন্য নামাজ পড়াই নিষিদ্ধ, সে অবস্থায়ও তাদের ঈদগাহে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। যাদের ওড়না নেই, তাদেরকে অন্য বোনের ওড়না ধার করে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
দেশের কতগুলি মসজিদে নারীদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা আছে? প্রাত্যহিক নামাজ তো দূরের কথা, জুমার নামাজেও তাদের অংশগ্রহণের কোন সুযোগ কোথাও আছে কি? নেই।
কেন নেই? রাসুলের সময় যেখানে নারীরা ফযর এবং এশার নামাজও মসজিদে গিয়ে পড়তে পারতেন, আজ কে এমন বুজুর্গ হলো যে নারীদের মসজিদে যাওয়াই বন্ধ করে দিলো? খুবই আশ্চর্যের কথা, কোন কোন মসজিদে নাকি এরকমও লেখা থাকে- মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ!!
জাতি হিসেবে মুসলিমদের দুরবস্থা বা অধঃপতনের কারণ হিসেবে অনেকেই অনেক কথা বলে থাকেন। আমি এই দুরবস্থার পেছনে দায়ী করি মুসলিম নারীদের মসজিদ বিমুখ করে রাখাকে। মসজিদ থেকে দূরে রাখাকে।
এজন্য কোন গুরুতর তত্ত্বীয় আলোচনার প্রয়োজন নেই। কমনসেন্স এপ্লাই করাই যথেষ্ট।
মুসলিম সমাজের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। মসজিদে যাওয়ার সুযোগ না থাকায় এই অর্ধেক সংখ্যক মুসলিম ইসলামের শিক্ষা পাচ্ছেন না। কোন একটা জনগোষ্ঠির অর্ধেক মানুষকে জ্ঞানহীন রেখে কীকরে একটা সুন্দর সমাজ তৈরি করা সম্ভব?
পুরুষেরা মসজিদে গিয়ে কিছু হলেও ধর্মীয় আলোচনা শুনতে পারে, মসজিদের এইসব আলোচনা থেকে তারা ইসলাম সম্বন্ধে কিছুটা হলেও জানার সুযোগ পায়। যদিও কাজের ব্যস্ততায় তারা অনেকেই সে সুযোগ নেয় না। আমাদের দেশের মেয়েরা ধর্মীয় আলোোচনা শোনার কোন সুযোগই পায় না। সাংসারিক কাজ শেষে সারাদিন বাড়ীতে বসে থাকা ছাড়া সময় কাটানোর অন্য কোন সুযোগ তারা পায় না।
যারা মেয়েদের সিরিয়াল দেখা নিয়ে কটাক্ষ করেন, হাসি তামাশা করেন, ক্ষোভ প্রকাশ করেন- আমি তাদের জিজ্ঞেস করি, সিরিয়াল না দেখে তাদের উপায়টা কী? ঘরে বসে তারা করবেটা কী সারাটা দিন?
বাচ্চাদের প্রথম শিক্ষক হলো মা। সেই মায়েরাই যদি থেকে যায় জ্ঞানহীন, তারাই যদি থেকে যায় ধর্ম সম্পর্কে উদাসীন, তাহলে বাচ্চাদের ধর্ম ও চরিত্রের শিক্ষা দেবে কে? দিনকে দিন সমাজে যে ধর্মীয়ভাবে উদাসীন একটা ডিজুস প্রজন্ম বেড়ে উঠছে এর একটা কারণ হলো মায়েদের জ্ঞানশুন্যতা। মায়েরা নিজেরাই যেখানে জ্ঞান রাখে না সেখানে তারা বাচ্চাদের কী শেখাবে?
মায়েরা মসজিদে গেলে ছোট বাচ্চারা মায়ের সাথে মসজিদে যেতে অভ্যস্ত হবে। বাচ্চারা যদি ছোট থেকেই ধর্মীয় অনুশাসন, সততা, ন্যায়, আর উত্তম চরিত্রের শিক্ষা পায়, তবেই একটা সুস্থ সুন্দর প্রজন্ম গড়ে তোলা সম্ভব। যারা সমাজটাকে সুন্দর করবে, দেশকে সুন্দর করবে।
মুসলিম নারীদেরকে ধর্ম সম্বন্ধে জানার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য বাংলাদেশের সব/বেশিরভাগ মসজিদেই মহিলাদের জন্য স্থান রাখা দরকার। পাশের বাসার ভাবীদের সাথে গীবত পরনিন্দা আর চোগলখুরির আসর বসানোর চাইতে তাদের মসজিদে যাওয়া ভালো না?
যারা বলতে চান যে, এই ফেতনার যুগে মহিলারা মসজিদে গেলে ফেতনা/বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে, ফেতনা বৃদ্ধি পাবে, তারা বোকার স্বর্গে আছেন।
ভাইসাব, নারীদের মসজিদ থেকে দূরে রেখে কি ফেতনা বন্ধ করতে পারছেন? নাকি ফেতনা বাড়াচ্ছেন? নারীরা স্কুলে কলেজে ভার্সিটিতে বাজারে সবখানে যেতে পারবে, শুধু মসজিদে গেলেই ফেতনা?
ভাইসাব, নারীদের মসজিদ থেকে দূরে রেখে কি ফেতনা বন্ধ করতে পারছেন? নাকি ফেতনা বাড়াচ্ছেন? নারীরা স্কুলে কলেজে ভার্সিটিতে বাজারে সবখানে যেতে পারবে, শুধু মসজিদে গেলেই ফেতনা?
দুনিয়ায় ফেতনা সৃষ্টির জন্য শয়তানের একটা প্রধান মাধ্যম হলো নারী। আর তাদেরকেই যদি ধর্মানুরাগী, ধর্মের বিধিবিধান অনুসারী না বানাতে পারেন, তাহলে তো ফেতনা বাড়তেই থাকবে। মহিলারা মসজিদে যাওয়া আসা করলেই বরং ফেতনা বন্ধ হবে। সমাজে বিশৃংখলা কমবে।
কবি বলেছিলেন, দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটারে রুখি, সত্য বলে আমি তবে কোথা দিয়ে ঢুকি? আপনারা অন্ধকারের ভয়ে দরজা বন্ধ করতে চান, এদিকে আলো ঢোকার পথটাই যে বন্ধ করে দিয়েছেন সে খেয়াল নেই। মক্কা মদীনায় যে নারীরা মসজিদে নামাজ পড়ছে, সেখানে কি খুব ফেতনা হচ্ছে?
কবি বলেছিলেন, দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটারে রুখি, সত্য বলে আমি তবে কোথা দিয়ে ঢুকি? আপনারা অন্ধকারের ভয়ে দরজা বন্ধ করতে চান, এদিকে আলো ঢোকার পথটাই যে বন্ধ করে দিয়েছেন সে খেয়াল নেই। মক্কা মদীনায় যে নারীরা মসজিদে নামাজ পড়ছে, সেখানে কি খুব ফেতনা হচ্ছে?
ইবনে উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হতে বর্ণনা করেন- “নারীদেরকে তাদের মসজিদে যাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করো না।”
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) এর ছেলে বিলাল একবার বলেছিলেন- 'আল্লাহর কসম আমি তাদেরকে (নারীদেরকে) অবশ্যই নিষেধ করব।'
কথিত আছে যে, ইবনে উমর (রাঃ) নাকি ছেলের এমন কথায় ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে থাপ্পড়ই মেরে বসেছিলেন!!!!
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) এর ছেলে বিলাল একবার বলেছিলেন- 'আল্লাহর কসম আমি তাদেরকে (নারীদেরকে) অবশ্যই নিষেধ করব।'
কথিত আছে যে, ইবনে উমর (রাঃ) নাকি ছেলের এমন কথায় ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে থাপ্পড়ই মেরে বসেছিলেন!!!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন