স্বাভাবিক সময়ে কুরবানির গোশত জমা রেখে যেকোন সময় খাওয়া যায়। কিন্তু, আমার মনে হয়, এইবছর কুরবানির পশুর গোশত তিন দিনের বেশি জমা রেখে খাওয়া বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য উচিত হবে না।
একবার মদীনার বেদুইনদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। সেইবছর রাসুল (সাঃ) ঘোষণা করেন, কেউ যেন তিনদিনের বেশি কুরবানির গোশত না খায়। অর্থাৎ তিন দিনের জন্য রেখে বাকিটা যেন দান করে দেয়। পরে অবস্থার উন্নতি হলে রাসুল (সাঃ) এই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেন।
এইবছর বাংলাদেশেও অনেকটা সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে হয়।
প্রথমে হাওরে বন্যা হলো। ফসল নষ্ট হলো। মাছ, গবাদিপশু মারা গেল। আমি নিজে সেসময় হাওরবাসীর দুরবস্থা দেখে এসেছি।
তারপর সম্প্রতি উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা হলো। মানুষের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে, গবাদিপশু মারা গেছে, গোলার ধান ভেসে গেছে। ফসল নষ্ট হয়েছে। চরম দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়েছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ।
তাছাড়া মায়ানমারের আরাকানে সেনাবাহিনীর হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। আরাকান থেকে লাখ লাখ মানুষ পালিয়ে আসছে বাংলাদেশে। তারা তাদের সব সহায় সম্বল ফেলে শুধু জীবন নিয়ে পালিয়ে আসছে।
এত এত দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে রেখে আমরা কীভাবে গোশত জমা করে খাই? দেশে যদি কোন কার্যকর ইসলামী শরীয়া পরিষদ থাকত, আমার মনে হয় তারা আমার এই বক্তব্য ফতোয়া হিসেবে জারি করতেন। কিন্তু সেটা যেহেতু নেই, আমাদের নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে।
আসুন, আমরা কুরবানির গোশত তিনদিনের বেশি জমিয়ে না রেখে যত বেশি সম্ভব গরীব অসহায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের দান করি।
(আগ্রহীদের মুসলিম শরীফের কুরবানি অধ্যায় পড়ে নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন