এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

যদি কেউ বিয়ে করে ঘরজামাই হতে চান..

আমাদের দেশে এক বিচিত্র কারণে 'ঘরজামাই'দেরকে বাঁকা চোখে দেখা হয় । সিনেমা নাটকেও ঘরজামাইকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য মূলক পার্ট দেয়া হয়। ঘরজামাইকে নিয়া সবাই হাসাহাসি করে । মেয়ে, মানে ঘরজামাইয়ের বউ নিজেও হীনম্মন্যতায় ভোগে । 'স্বামীর বাড়ি' যাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকে । বাপের বাড়ি থেকে চলে যেতে চায় ।
কিন্তু প্রয়োজন সাপেক্ষে 'ঘরজামাই' বিষয়টাতে আমি খারাপ কিছু দেখিনা। মেয়ে যদি বাপের বাড়ি ছেড়ে ছেলের বাড়িতে গিয়ে সারাজীবন থাকতে পারে- একই কাজ (পরিবারের প্রতি ঠিকঠাকমত দায়িত্ব পালন সাপেক্ষে) ছেলে করলে সমস্যা কী? এতে ছেলের মান যাবে কেন? আপনি কোথায় থাকছেন তাতে কিছু আসে যায় না। আপনার কাজ, আপনার দায়িত্বনিষ্ঠাই আপনাকে সম্মানিত করবে।

ঘরজামাই মানেই এই না যে শ্বশুরবাড়িতে বসে বসে খাবেন। শ্বশুরের অন্ন ধ্বংস করবেন। সেইটা করলে কিন্তু ভাতের পাশাপাশি জুটবে লাঞ্চনা গঞ্জনা। সন্দেহ নাই।

শ্বশুরবাড়িতে থাকা মানেই শ্বশুরের গোলাম হওয়া নয়। যে বাবার কোন ছেলে নেই, তাদের পরিবারে একজন ঘরজামাই যে কতটা জরুরী, সেটা তারা ছাড়া আর কেউ হয়তো বুঝবেন না।

ভাইবেন না যে এইকথা কইছি বইলা আমারে পচাইবেন । মনে রাখবেন, আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)ও কিন্তু হযরত খাদিজা (রাঃ)কে বিয়ে করার পর একপ্রকার ঘরজামাইই ছিলেন ।

আর মুসা(আঃ) তাঁর বিয়ের পর মিশরে না ফেরা পর্যন্ত ছিলেন পুরোদস্তুর ঘরজামাই।

ভাইসব, লজ্জা করবেন না। এগিয়ে যান। কবি হেলাল হাফিজের কবিতার ভঙ্গিতে বলি-

যদি কেউ বিয়ে করে ঘরজামাই হতে চান,
তবে তাই হয়ে যান । 
উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায়।

Disclaimer: এই পর্বের বক্তব্য সম্পূর্ণই তত্ত্বীয়। ইহার সহিত লেখকের ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার কোনরুপ সামঞ্জস্য সন্ধানের অপচেষ্টা পাঠকের বাতুলতা মাত্র হইবে, এবং তাহা অবিধারিতভাবেই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হইবে।

(বিবাহ কথন-১২)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন