এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

তোমায় নিয়া ঘর বান্ধিবো গহীন বালুর চর....!!

বিয়ের আগে নানান অলীক কল্পনায় ভোগে ব্যাচেলর সমিতির সদস্যরা। তারা মনে করে- বিয়ে করলেই জীবনের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে!! জীবনে আর কোন দুঃখ থাকবে না!! কোনমতে বিয়েটা করলেই কেল্লা ফতেহ!! এরপর শুধু সুখ আর সুখ।

মন্তু মিয়ার গান তাদের জাতীয় সঙ্গীত হয়ে যায়।
"আশা ছিল মনে মনে
প্রেম করিবো তোমার সনে
তোমায় নিয়া ঘর বান্ধিবো গহীন বালুর চর...."


বাস্তবে গহীন বালুর চরে কারোই ঘর বাঁধা হয়না। কিছুদিন এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করে শেষে ঘর বাঁধতে হয় ইট কাঠের শহরে। যেখানে বাসা ভাড়া যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। অফিসে কাজের চাপ, বসের ঝাড়ি, ব্যবসায় টেনশন, সিটি বাসে বাঁদুড় ঝোলা।
আবার ঘরে ফিরে ব্যাগ হাতে বাজারে যাওয়া। এই দাম কত? দশ টাকা কম নাও। গত সপ্তাহেই তো বিশ টাকায় কিনলাম!!

এই নাই সেই নাই, এই করতে হবে, সেই করতে হবে- শুনে শুনে কান ঝালাপালা হয়ে যায়।

বলা হয়, বিয়ের পর প্রথম ছয় মাস থেকে এক বছর সবাই মহাকাশে উড়তে থাকে :P । মাটিতে তাদের পা পড়ে না। তারপর ধীরে ধীরে মহাকাশযান মহাশুন্য থেকে প্রথমে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে, তারও পরে পৃথিবীর মাটিতে :p অবতরণ করে। এতে নাকি আনুমানিক দেড় থেকে দু'বছর সময় লাগে। :D
 
তারপর জীবন স্বাভাবিক হয়ে আসে, জীবন একঘেয়ে হয়ে আসে। সেই প্রাগৈতিহাসিক সাংসারিক জীবন। আগে থেকে মানসিকভাবে তৈরি না থাকলে ইউফোরিক মুডে ব্যাঘাত ঘটে এমন সবকিছুই তখন বিরক্তিকর লাগে। হঠাৎ মনে হয়- নাহ, আগেই বোধহয় ভালো ছিলাম!! মানসিকভাবে তৈরি না থাকায় নতুন যেকোন সমস্যায় বিগড়ে যায় মন। সংসারে লেগে যায় অশান্তি। ফেসবুকে দেখা যায় নতুন আপডেট- গিবনে কী প্লাম?? :D
 
ব্যাচেলর সমিতির সদস্যদের এইসব অলীক কল্পনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বুঝতে হবে- বিয়ে মানেই সুখের সাগর নয়। বরং বিয়ে করা মানে জীবনের সকল কাঠিন্যের বিপরীতে নিজেকে দায়িত্ববান পুরুষ হিসেবে ঘোষণা করা। বিয়ে মানে সমস্যাসংকুল পৃথিবীর সব বাধা মোকাবেলায় একজন যোগ্য সঙ্গী খুঁজে নেয়া।

বিয়ের পরে একজন পুরুষ কিংবা নারীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলোঃ হাজারটা সমস্যার ভেতরেও একটা হাসিমুখ, আর একটা সবুজ মন বাঁচিয়ে রাখা। সত্যিকার একটা সুখী সংসারের জন্য এইটাই বোধহয় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
(বিবাহ কথন-১৪)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন