এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৭

ফিফটি ফিফটি চান্স

বিয়ের আলাপ যদি সফল না হয়, অর্থাৎ আলাপ যখন আত্মীয়তায় পরিণত না হয়, তখন কোন না কোন একটা পক্ষকে মনোক্ষুন্ন হতেই হয়। পাত্রপক্ষ অথবা পাত্রীপক্ষ। কারণ, শেষ পর্যন্ত তো কোন এক পক্ষ অপর পক্ষকে অপছন্দ করেই বসে। প্রস্তাব বাতিল হয়। হতে পারে এক ফ্যামিলি অন্য ফ্যামিলিকে অথবা ছেলে বা মেয়ে একজন আরেকজনকে অপছন্দ করে। হয়তো মেয়ে পাত্রকে পছন্দ করলো, কিন্তু ছেলে কিংবা ছেলের ফ্যামিলি মেয়েকে অপছন্দ করলো। হয়তো ছেলে পাত্রী পছন্দ করলো, কিন্তু ছেলের পরিবার অপছন্দ করলো মেয়ের পরিবারকে।

প্রথম প্রস্তাবেই বিয়ে হয় এমনটা খুব কমই ঘটে। সাধারণত প্রত্যেক ছেলে বা মেয়েকেই বিয়ের আগে গড়ে চার পাঁচবার এই দেখাদেখি পর্বের মুখোমুখি হতে হয়। প্রতিটা ক্ষেত্রেই ছেলে কিংবা মেয়ে কাউকে না কাউকে হতাশ হতে হয়। কারো না কারো মন ভেঙ্গে যায়। কাউকে না কাউকে কষ্ট পেতে হয়। প্রত্যাখ্যানের কিংবা স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট। 

এই অবস্থা বেশি মোকাবেলা করতে হয় মেয়েদেরকে। বিশেষ করে মেয়ে যদি তথাকথিত প্রচলিত মানদন্ডে একটু কালো হয়, শ্যামলা হয়, বেঁটে হয়। তাই বিয়ের আলাপ শুরুর আগেই গার্ডিয়ানদের উচিত ছেলে এবং মেয়ে উভয়কে মানসিকভাবে তৈরি করা। তাদেরকে জানিয়ে দেয়া, বুঝিয়ে দেয়া উচিত যে- প্রতিটা প্রস্তাব ফিফটি ফিফটি চান্স। যেকোনটাই হতে পারে। যাই হোক, বিশেষ করে নেগেটিভ হলে মনে কষ্ট পাওয়া যাবে না। কেউ যদি তোমাকে অপছন্দ করে তো সেটা তার সমস্যা, তোমার নয়। কোন মানুষই সবার কাছে পছন্দের হয় না। সবার চোখে সুন্দর হয় না। সবচেয়ে যে সুন্দর মেয়েটা বা ছেলেটা, তাকেও কেউ না কেউ অপছন্দ করে। সবচেয়ে যে ভদ্র নম্র মানুষটা, তাকেও অনেকেই পছন্দ করেনা। আর খুব কম মানুষই আছে যারা অন্য কারো ইনার পটেনিশিয়ালিটি উপলব্ধি করার ক্ষমতা রাখে।

পাত্র পাত্রীদের বুঝতে হবে, কেউ যদি আপনাকে অপছন্দ করে, তাহলে আপনার মন খারাপ করার কিছু নেই। কারণ, যে আপনাকে পছন্দ করে না সে কোনভাবেই আপনার জন্য নয়। আপনাকে যার পছন্দ নয়, যার চোখে আপনি সুন্দর নন, তার সাথে বিয়ে হলে আপনি কি সুখী হবেন? আপনাকে খুশি করার জন্য সে কি কখনো কিছু করবে? আপনার জন্য কোন স্যাক্রিফাইস করবে? নিশ্চয় না।

তাহলে কেন আপনি কষ্ট পাবেন? বরং এমন কারো জন্য অপেক্ষা করুন, যে আপনাকে আপনার অবস্থানেই পছন্দ করবে, আপনার যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট হবে।

(বিবাহ কথন-১৬)  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন