বাম ঘরাণার এক আপুর একটা স্ট্যাটাস দেখলাম ফেসবুকে । যার শুরুটা এরকম-
‘চোখ বন্ধ করুন । এক মিনিটের জন্য ভাবুন জামাত , জামতের দোসর হেফাজত এবং বিএনপি ক্ষমতায় । তাহলে কি ঘটবে ? সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবেন ফেসবুক বন্ধ। ইন্টারনেট কানেকশন নাই। মোবাইলে সরকারী বার্তা- ইন্টারনেট একটা ইসলাম পরিপন্থী সেবা, তাই বাংলাদেশের মতো একটি ইসলামিক দেশে এই রকম অনৈতিক সেবা বন্ধ করে ইসলামকে হেফাজত করা হলো। আপনি মন খারাপ করে রাস্তায় বের হবেন’ ।
আমি খুব কষ্ট পেলাম । কথাগুলো যদি তিনি শুধুমাত্র বিদ্বেষ থেকে বলে থাকেন তাহলে কিছু বলার নেই । কিন্তু যদি সত্যিকার বিশ্বাস থেকে বলে থাকেন তাহলে এটা সত্যিই দুঃখজনক । এটা আমাদের একটা ব্যর্থতাকে ইঙ্গিত করে । বাংলাদেশে যারা ইসলামের কথা বলেন- তাঁরা অনেক কিছু করতে পারলেও ইসলামের সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিটাকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেন নি । যদি তাঁর মত কেউ এরকম মনে করে থাকেন- তাদেরকে বলছি, ভাই-বোনেরা , ইসলাম কোনকিছুকে অহেতুক নিষিদ্ধ করেনা । ইসলাম ছুরিকে ইসলাম পরিপন্থী বলেনা , কিন্তু ছুরি দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যার কঠোর শাস্তি দেয় ।
যদি ইসলামী রাষ্ট্র গঠন হয় তাহলে ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ করা হবে না । প্রশ্নই ওঠে না । তবে ইন্টারনেটে থাকা পর্ণো সাইটগুলো ঠিকই বন্ধ করা হবে । ফেসবুক বন্ধ করা হবে না, ফেসবুকে থাকা চটি পেজ- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী পেজ বন্ধ করা হবে । টেলিভিশন সম্প্রচার বন্ধ করা হবে না, টেলিভিশনে অশ্লীল সিনেমা সম্প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে । সিনেমা হল বন্ধ করা হবে না , সেখানে কাটপিস প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হবে ।
এখন সিদ্ধান্ত আপনার- আপনি কী চান ।
তিনি লিখেছেন- ‘দেখবেন রাস্তায় কোন কলেজ , ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে কানে হেডফোন লাগিয়ে ঘুরছে না। কোন মেয়ে কপালে লাল টিপ দেয়নি। কোন গৃহিণী সংসারের প্রয়োজনীয় বাজার করছে না’
পুরোটাই ভুল ধারণা । ইসলাম কোন মেয়ের কপালে টিপ দেয়া কিংবা বাজার থেকে জিনিসপত্র কেনায় আপত্তি করেনা । তবে উত্তেজক পোষাক আশাক পড়ে, সাজগোজ করে একা একা ঘোরাফেরা করতে আপত্তি করে । আর এটা নারীর নিরাপত্তার কথা ভেবে ।
আরো যা যা ঘটবে বলে তিনি লিখেছেন-
‘রাস্তায় ঢোলা পাঞ্জাবি আর টুপি পরা কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী , হিংস্র দৃষ্টিতে লক্ষ্য রাখছে কোথাও জোরে গান বাজছে কিনা, কোন ছেলেমেয়ে এক সঙ্গে হাঁটছে কিনা। সামনে পহেলা বৈশাখ, অথচ কোন কাপড়ের দোকানে লাল সাদা শাড়ি, ফতুয়া পাঞ্জাবি নেই, সব দোকানে কাল বোরখা আর সাদা পাঞ্জাবি ঝুলছে । পাঠ্য বই থেকে রাবীন্দ্রনাথ নজরুলের এর কবিতা সরিয়ে ফেলা হয়েছে । নারী শিক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে । কোন ছেলে তার প্রিয়াকে দেখে বলে না, তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয় সে কি মোর অপরাধ’ ।
কী পরিমাণ ভুল ধারণা তিনি রাখেন – খুবই দুঃখজনক । তিনি একা না, আরো অনেকেই এমন ধারণা রাখে, বিশ্বাস করে । অথচ ইসলামী রাষ্ট্রে এরকম কিছু ঘটবে না । বেপর্দা হয়ে চলাফেরাকে নিরুৎসাহিত করা হবে, তার মানে এইনা যে কাউকে বোরখা ছাড়া দেখলেই মোল্লারা ধরে থাপড়াবে । লাল শাড়ি – ফতুয়াকে অনৈসলামিক ঘোষণা করা হবে কেন ? যেকোন শালীন পোষাকই ইসলামের বিধানে স্বীকৃত । কিন্তু কোন মেয়ে যদি চিপা জিন্স আর ফতুয়া পড়ে, সেটা কি শালীন দেখায় ? রমনার চিপায় চাপায় প্রিয়-প্রিয়ার অবাধ জড়াজড়িকে অবশ্যই ইসলাম সমর্থন করে না । এটা সমাজের জন্য ভালো নয় । বিয়ে করে বাড়িতে যা ইচ্ছা করেন ।
ইসলামী সংস্কৃতি মানেই আরবীয় সংস্কৃতি নয় । স্থানীয় আচার-আচরণ, স্থানীয় সংস্কৃতি , যা কিছু শোভন, যা কিছু সমাজ জীবনে শান্তি-শৃংখলা নষ্ট করে না , যা কিছু ইসলামের মূলনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে না – সবকিছুই ইসলামের গন্ডিতে স্বীকৃত । আমাদের দুর্ভাগ্য যে- একপক্ষের লোকজন ইসলামী সংস্কৃতি বলতে আরবীয় সংস্কৃতি হিসেবে তুলে ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন । ইসলাম সংস্কৃতি-বিনোদন বিরোধী বলে প্রচার করে মানুষকে ভুল ধারণা দেন । আবার আলেম ওলামাগণ সাংস্কৃতিক দিকটাকে স্পষ্ট করে তুলে ধরেন না । যার ফলে সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ সবকিছুকে আজ ইসলামের বিপক্ষে দাঁড় করানো হচ্ছে ।
আসুন- ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা করি । বসে বসে কল্পনা করে ইসলামের ওপর দোষ চাপিয়ে শিউরে ওঠার দরকার নাই । ওটা বোকামী , ওটা মুক্তচিন্তা নয় । ইসলামী সমাজ মানে কোন জংলী সমাজ নয় ; আধুনিক, শান্তিপুর্ণ, সুশৃংখল সমাজ ।
জামায়াত , হেফাজত, বিএনপি নিয়ে চিন্তিত হবার দরকার নেই । জামায়াত বিদ্বেষকে ইসলাম বিদ্বেষে পরিণত করবেন না । শেখ হাসিনা যদি আজকে বলেন তিনি দেশে ইসলামী মুল্যবোধের শাসনতন্ত্র দিবেন, আমি আজই আওয়ামী লীগে যোগ দিতে রাজী আছি । কিন্তু আমি জানি- সেই আশা দুরাশা মাত্র !
12-06-2013
‘চোখ বন্ধ করুন । এক মিনিটের জন্য ভাবুন জামাত , জামতের দোসর হেফাজত এবং বিএনপি ক্ষমতায় । তাহলে কি ঘটবে ? সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবেন ফেসবুক বন্ধ। ইন্টারনেট কানেকশন নাই। মোবাইলে সরকারী বার্তা- ইন্টারনেট একটা ইসলাম পরিপন্থী সেবা, তাই বাংলাদেশের মতো একটি ইসলামিক দেশে এই রকম অনৈতিক সেবা বন্ধ করে ইসলামকে হেফাজত করা হলো। আপনি মন খারাপ করে রাস্তায় বের হবেন’ ।
আমি খুব কষ্ট পেলাম । কথাগুলো যদি তিনি শুধুমাত্র বিদ্বেষ থেকে বলে থাকেন তাহলে কিছু বলার নেই । কিন্তু যদি সত্যিকার বিশ্বাস থেকে বলে থাকেন তাহলে এটা সত্যিই দুঃখজনক । এটা আমাদের একটা ব্যর্থতাকে ইঙ্গিত করে । বাংলাদেশে যারা ইসলামের কথা বলেন- তাঁরা অনেক কিছু করতে পারলেও ইসলামের সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিটাকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেন নি । যদি তাঁর মত কেউ এরকম মনে করে থাকেন- তাদেরকে বলছি, ভাই-বোনেরা , ইসলাম কোনকিছুকে অহেতুক নিষিদ্ধ করেনা । ইসলাম ছুরিকে ইসলাম পরিপন্থী বলেনা , কিন্তু ছুরি দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যার কঠোর শাস্তি দেয় ।
যদি ইসলামী রাষ্ট্র গঠন হয় তাহলে ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ করা হবে না । প্রশ্নই ওঠে না । তবে ইন্টারনেটে থাকা পর্ণো সাইটগুলো ঠিকই বন্ধ করা হবে । ফেসবুক বন্ধ করা হবে না, ফেসবুকে থাকা চটি পেজ- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী পেজ বন্ধ করা হবে । টেলিভিশন সম্প্রচার বন্ধ করা হবে না, টেলিভিশনে অশ্লীল সিনেমা সম্প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে । সিনেমা হল বন্ধ করা হবে না , সেখানে কাটপিস প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হবে ।
এখন সিদ্ধান্ত আপনার- আপনি কী চান ।
তিনি লিখেছেন- ‘দেখবেন রাস্তায় কোন কলেজ , ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে কানে হেডফোন লাগিয়ে ঘুরছে না। কোন মেয়ে কপালে লাল টিপ দেয়নি। কোন গৃহিণী সংসারের প্রয়োজনীয় বাজার করছে না’
পুরোটাই ভুল ধারণা । ইসলাম কোন মেয়ের কপালে টিপ দেয়া কিংবা বাজার থেকে জিনিসপত্র কেনায় আপত্তি করেনা । তবে উত্তেজক পোষাক আশাক পড়ে, সাজগোজ করে একা একা ঘোরাফেরা করতে আপত্তি করে । আর এটা নারীর নিরাপত্তার কথা ভেবে ।
আরো যা যা ঘটবে বলে তিনি লিখেছেন-
‘রাস্তায় ঢোলা পাঞ্জাবি আর টুপি পরা কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী , হিংস্র দৃষ্টিতে লক্ষ্য রাখছে কোথাও জোরে গান বাজছে কিনা, কোন ছেলেমেয়ে এক সঙ্গে হাঁটছে কিনা। সামনে পহেলা বৈশাখ, অথচ কোন কাপড়ের দোকানে লাল সাদা শাড়ি, ফতুয়া পাঞ্জাবি নেই, সব দোকানে কাল বোরখা আর সাদা পাঞ্জাবি ঝুলছে । পাঠ্য বই থেকে রাবীন্দ্রনাথ নজরুলের এর কবিতা সরিয়ে ফেলা হয়েছে । নারী শিক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে । কোন ছেলে তার প্রিয়াকে দেখে বলে না, তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয় সে কি মোর অপরাধ’ ।
কী পরিমাণ ভুল ধারণা তিনি রাখেন – খুবই দুঃখজনক । তিনি একা না, আরো অনেকেই এমন ধারণা রাখে, বিশ্বাস করে । অথচ ইসলামী রাষ্ট্রে এরকম কিছু ঘটবে না । বেপর্দা হয়ে চলাফেরাকে নিরুৎসাহিত করা হবে, তার মানে এইনা যে কাউকে বোরখা ছাড়া দেখলেই মোল্লারা ধরে থাপড়াবে । লাল শাড়ি – ফতুয়াকে অনৈসলামিক ঘোষণা করা হবে কেন ? যেকোন শালীন পোষাকই ইসলামের বিধানে স্বীকৃত । কিন্তু কোন মেয়ে যদি চিপা জিন্স আর ফতুয়া পড়ে, সেটা কি শালীন দেখায় ? রমনার চিপায় চাপায় প্রিয়-প্রিয়ার অবাধ জড়াজড়িকে অবশ্যই ইসলাম সমর্থন করে না । এটা সমাজের জন্য ভালো নয় । বিয়ে করে বাড়িতে যা ইচ্ছা করেন ।
ইসলামী সংস্কৃতি মানেই আরবীয় সংস্কৃতি নয় । স্থানীয় আচার-আচরণ, স্থানীয় সংস্কৃতি , যা কিছু শোভন, যা কিছু সমাজ জীবনে শান্তি-শৃংখলা নষ্ট করে না , যা কিছু ইসলামের মূলনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে না – সবকিছুই ইসলামের গন্ডিতে স্বীকৃত । আমাদের দুর্ভাগ্য যে- একপক্ষের লোকজন ইসলামী সংস্কৃতি বলতে আরবীয় সংস্কৃতি হিসেবে তুলে ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন । ইসলাম সংস্কৃতি-বিনোদন বিরোধী বলে প্রচার করে মানুষকে ভুল ধারণা দেন । আবার আলেম ওলামাগণ সাংস্কৃতিক দিকটাকে স্পষ্ট করে তুলে ধরেন না । যার ফলে সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ সবকিছুকে আজ ইসলামের বিপক্ষে দাঁড় করানো হচ্ছে ।
আসুন- ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা করি । বসে বসে কল্পনা করে ইসলামের ওপর দোষ চাপিয়ে শিউরে ওঠার দরকার নাই । ওটা বোকামী , ওটা মুক্তচিন্তা নয় । ইসলামী সমাজ মানে কোন জংলী সমাজ নয় ; আধুনিক, শান্তিপুর্ণ, সুশৃংখল সমাজ ।
জামায়াত , হেফাজত, বিএনপি নিয়ে চিন্তিত হবার দরকার নেই । জামায়াত বিদ্বেষকে ইসলাম বিদ্বেষে পরিণত করবেন না । শেখ হাসিনা যদি আজকে বলেন তিনি দেশে ইসলামী মুল্যবোধের শাসনতন্ত্র দিবেন, আমি আজই আওয়ামী লীগে যোগ দিতে রাজী আছি । কিন্তু আমি জানি- সেই আশা দুরাশা মাত্র !
12-06-2013
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন