এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শনিবার, ৭ জুন, ২০১৪

অচেনা রুপাই !

তোর কথা আমার আজো মনে পড়ে । আকাশে মেঘ দেখলেই তোর মন 
হয়ে যেত অন্যরকম । ঝুম বৃষ্টির ভেতর শুনশান পিচঢালা রাস্তায়
একা একা ভিজতে তোর ভালো লাগত খুব । উদাস ভাবুক তোকে দেখে সেসময় মনে হত 
নকশি কাঁথার মাঠ পেরিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়ানো রুপাই এর মত । যেন কোন এক রাতে
নববধূ সোনাইকে একাকী রেখে বেরিয়ে পড়েছিলি নিরুদ্দেশ । আর ফেরা হবে কিনা সে গাঁয়ে 
জানা নেই তোর ।


আশেপাশে কোথাও বাজ পড়লেও তুই তাকাতিস নির্লপ্ত চোখে , কী এক ঘোরের ভেতর 
চুপচাপ দেখতিস প্রকান্ড বটের ভেজা পাতা । ভিজে ভিজে শালিক পাখিগুলো চুপচাপ
বসে আছে ভেজা নীড়ে ।

কবি ছিলিনা তুই, কাউকে কিছু বলারও ছিলনা তোর । তবুও ভাবতিস কবির মত 
এমনো দিনে তারে বলা যায় , এমনো ঘন ঘোর বরিষায় !   অথবা ভেজা দেহখানি  
শুকনো গামছায় মুছে নিয়ে, খোলা জানালায় বসে লেবুর ঝোপের দিকে চেয়ে 
রজনীগন্ধার জলছাপ দেয়া ডায়েরীর পাতায় চুপিসারে লিখেছিলি কবিতায় চিঠি  
স্বপ্নপুরীর কোন এক অচেনা বালিকাকে !



শুনেছি এখন তুই খুব পাল্টে গেছিস । খুব ব্যস্ত । 
আকাশে মেঘ আজো জমে , বৃষ্টি নামে আগের মতই । পথের ওপর
তোকে আর যায়না দেখা বৃষ্টিপাগল পুরনো বালক । খবরও পাসনা শুনেছি । 
এখন তুই পুরোদস্তুর শহুরে নাগরিক । 
সকাল বিকাল হাসপাতালে ডিউটি করিস !


তুই দাবি করিস , এখনো আছিস আমার ভেতর ?
কী জানি , হবে হয়তোবা । কিন্তু জানিস , বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়-
এই আমিই সেই বদলে যাওয়া তুই !


বদলে যাওয়া তোকে আজ, কেমন যেন খুব 
খুব বেশি অচেনা লাগে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন