এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

সোমবার, ৩০ জুন, ২০১৪

তারাবীর নামাজ নিয়ে বিতর্ক বন্ধ করুন ।

কায়রো থেকে বেশ দূরে একটি গ্রাম । মসজিদে মুসল্লিরা সমবেত হয়েছেন । রমজান মাস সমাগত । এখন থেকে অতিরিক্ত হিসেবে তারাবীহ নামাজ পড়তে হবে । কিন্তু আট রাকাত না বিশ রাকায়াত ? এই নিয়ে মুসল্লিদের ভেতর বেশ ভালোরকম বাগবিতণ্ডা শুরু হয়ে গেলো । এই প্রশ্নে লোকেরা দুই দলে ভাগ হয়ে গেলো ।
একদল বললো, উমর ইবনে খাত্তাব (রা)-এর নির্দেশ অনুযায়ী ২০ রাকাত পড়তে হবে । আরেক দল ৮ রাকাতের পক্ষে । তাদের যুক্তি হলো, রাসূলুল্লাহ (সা) কখনো আট রাকাতের বেশি তারাবীহ পড়েননি।

উভয় পক্ষ একে অপরকে বিদাতের অভিযোগে অভিযুক্ত করে গালাগালি করতে লাগলো। এমনকি তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে হাতাহাতির উপক্রম হলো। এমন সময় এক যুবক বিষয়টাতে হস্তক্ষেপ করলেন । তিনি এতক্ষণ লোকদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন । তিনি সবাইকে থামিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করলেন - আচ্ছা আপনারা বলুন, তারাবীহ নামাজ কী ধরনের ইবাদাত ?
মুসল্লিরা জবাব দিলেন- সুন্নাত । পালন করলে সওয়াব, না করলে গুনাহ নেই।
যুবক আবার জিজ্ঞেস করলেন: এবার বলুন, মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ থাকা, পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব সম্পর্কে আপনারা কী জানেন ?
তারা জবাব দিলেন: এটা ফরয এবং ঈমানের অন্যতম মৌলিক বিষয় । কুরআনে আল্লাহ্‌ নির্দেশ দিয়েছেন - তোমরা আল্লাহ্‌র রজ্জুকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরো, আর পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়োনা ।
যুবক বললেন: তাহলে শরীয়তের দৃষ্টিতে ফরয এবং সুন্নতের মধ্যে কোন্‌টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ? সুন্নতের জন্য ফরয লংঘন করাটাকি ঠিক হবে ?
মুসল্লিরা তাঁদের ভুল বুঝতে পারলেন ।
এবার যুবক বললেন- আপনারা যদি ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য চান তাহলে বাড়িতে গিয়ে নিজেদের বিশ্বাস অনুযায়ী তারাবীর নামায পড়ুন । তর্ক করে মুসলিমদের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব নষ্ট করার চেয়ে সেটাই উত্তম হবে ।
এই যুবক ছিলেন ইখওয়ানুল মুসলিমুনের প্রতিষ্ঠাতা, হাসান আল বান্না (র) ।

[ঘটনাটি পড়েছিলাম আল্লামা ইউসুফ আল কারযাভীর 'ইসলামের পুনর্জাগরণঃ সমস্যা ও সম্ভাবনা' বইয়ে ।]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন