এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৩

নারী নেতৃত্ব হারাম ? - ০৩



বর্তমানে খেলাফত মজলিসের আমীর হলেন- মাওলানা মুহাম্মাদ ইসহাক এবং সেক্রেটারী জনাব আহমদ আব্দুল কাদের । খেলাফত মজলিস খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অংশীদার ।

খেলাফত মজলিসের একসময়কার আমীর ছিলেন আল্লামা আজিজুল হক । সেক্রেটারি ছিলেন মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী । সেসময়ও খেলাফত মজলিস নারী নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিল । ২০০১ এর খালেদার নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটে ছিলেন আল্লামা আজিজুল হক ।

খেলাফত মজলিস সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনাটি ঘটায় ২০০৬ সালে । ২০০৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর খেলাফত মজলিস শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সাথে একটি চুক্তি করে । এসময় আমীর ছিলেন আল্লামা আজিজুল হক আর মহাসচিব ছিলেন মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী । আওয়ামী লীগের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সেসময়কার আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি আব্দুল জলিল । কিন্তু পরে বামদের বিরোধিতার মুখে আওয়ামী লীগ সেই চুক্তি ‘অকার্যকর’ ঘোষণা করে ।

এথেকে দেখা গেল খেলাফত মজলিসও ‘প্রয়োজনে’ নারী নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে ।

বাংলাদেশে আরেকটি ইসলামপন্থি দল বলা চলে ‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম’ কে । এই দলের মূল চালিকাশক্তি ৭ সদস্য বিশিষ্ট সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘মজলিসে খাছে’র প্রধান হলেন  মাসিক মদীনা সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান এই দলটিও এখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটে আছে ।

মোটাদাগে উল্লেখযোগ্য ইসলামী দল এগুলোই যাতে প্রখ্যাত আলেমরা আছেন । মূলধারার সবচেয়ে বড় ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী । জামায়াতে ইসলামী তো বিগত ২০০০ সাল থেকেই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটে ছিল যে কারণে জামায়াতকে অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে ।

এর বাইরে গণনায় ধরার মত ইসলামী দল নেই ।
এবার দেখি পুরুষ নেতৃত্বাধীন দলের দিকেবাংলাদেশের বাস্তবতায় খালেদা বা হাসিনার বাইরে বিকল্প ধরার মত পুরুষ নেতৃত্বাধীন কোন দল আর জোটের বাইরে নাই । অর্থাৎ সবাই নারী নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে ।

নারী নেতৃত্ব সম্পর্কে ৮ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেছিলেন,  রওশনকে প্রধানমন্ত্রী করা হলেও আমি নারী নেতৃত্ব মানব না
কিন্তু বাস্তবে কী দেখা গেল ? তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাম-ভরপুর মহাজোটে যোগ দিয়ে তিনি ‘সুখেই আছেন’ ।

সুতরাং যতই মাথা চুলকানো হোক না কেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নারীর নেতৃত্ব মেনে নেয়াটা এক অনিবার্য বাস্তবতা । নারী নেতৃত্ব আদতেই হারাম কিনা তা নিয়ে আমরা পরে কথা বলবো, কিন্তু যদি হারাম হয়েও থাকে- যারা হারাম ফতোয়া দিয়েছিলেন তারা আজ সবাই নারীর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন । কিন্তু এতদিনে পানি অনেক ঘোলা হয়ে গেছে ।

(নারী নেতৃত্ব ও বাংলাদেশ- ০৩)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন