ঢাকার
মোহাম্মদপুরে অবস্থিত কওমি মাদ্রাসা জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া - ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত মজলিসের প্রাক্তন প্রধান মরহুম শায়খুল
হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের প্রতিষ্ঠিত । এই মাদ্রাসার ফতোয়া বিভাগ ‘নারী নেতৃত্ব’
নিয়ে যে ফতোয়া দিয়েছে এখন আমরা সেটা দেখবো । এই ফতোয়ায় নারী নেতৃত্ব সম্পর্কে এই
ধারার আলেমদের চিন্তাধারা প্রতিফলিত হয়েছে । আফসোসের বিষয় এটিই যে- বেশিরভাগ
ক্ষেত্রে আমাদের আলেম সমাজের ‘চোর পালালে
বুদ্ধি বাড়ে’ অবস্থা দেখা যায় ।
জামিয়া রাহমানিয়ার ফতোয়াঃ
নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- সেই জাতি কখনো সফলকাম হবে না, যে জাতি নিজেদের নেতৃত্বের ভার কোনো নারীর নিকট অর্পণ করেছে। (বুখারী ২-৬৮৫) এমনিভাবে নামাযের ইমামতিসহ যেকোনো
নেতৃত্ব ও দায়িত্ব শরীয়ত পুরুষকেই প্রদান করেছে। তাই সকল ওলামায়ে কেরাম একমত যে,
ইসলামে নারী নেতৃত্ব জায়েয নেই।
তবে
বর্তমানে আমাদের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে,দেশের প্রধান দুই দলের মধ্যেই
ক্ষমতার পালা-বদল হওয়া নিয়মে পরিণত হয়েছে। সে দুই দলের নেতৃত্বে রয়েছে মহিলা।
অন্যদিকে ইসলামী দলগুলোর অবস্থা বিবেচনা করলে নিশ্চিতভাবেই একথা স্পষ্ট যে,
স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনে বিজয়ী
হওয়া তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। এদিকে শরীয়তের অন্যতম একটি মূলনীতি হলো- যেখানে
দুদিকেই খারাপ বিষয় থাকে এবং যেকোনো একটি গ্রহণ করা আবশ্যক হয় সেখানে দুই খারাপের
মধ্যে তূলনামূলক কম খারাপটি গ্রহণ করতে হয় কেননা, নবী
করীম সা. এমন অবস্থায় পতিত হলে অপেক্ষাকৃত কম খারাপটি গ্রহণ করতেন। সেমতে এ মূলনীতির আলোকে উক্ত দুই দলের মধ্যে
ধর্ম, দেশ ও জাতির জন্য তূলনামূলক
ভাল দলের সাথে মিলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং যথাসম্ভব ইসলামের সেবা করে যাওয়ার চেষ্টা করার সুযোগ শরীয়তে রয়েছে।
তবে এক্ষেত্রে সর্বাত্মক
প্রচেষ্টা চালাতে হবে। যাতে ইসলামী দলগুলো এমন স্বতন্ত্র প্লাটফর্ম তৈরি করতে
পারে। যাতে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়া সম্ভব হয়। এবং এমন চেষ্টোও
অব্যাহত রাখতে হবে। যাতে শরীয়ত বিরোধী গণতান্ত্রিক পদ্ধতি থেকে মূক্ত হয়ে শরীয়ত
সম্মত পন্থায় খেলাফত ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
যদি কোনো
দেশ প্রধান প্রকাশ্য গুনাহে লিপ্ত হয়,
তাহলে এমন ব্যক্তি দেশ পরিচালনায় অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
এক্ষেত্রে সেই নিজেই পদত্যাগ করলে ভাল অন্যথায় কোনো ফেৎনা-ফাসাদ ছাড়া তাকে
পদচ্যুত করা সম্ভব হলে সেটাই করতে হবে। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো ফেতনা-ফাসাদ
ছাড়া যেহেতু তাদের পদচ্যুত করা সম্ভব নয়, তাই এক্ষেত্রে
ধৈর্যধারণ করতে হবে। এরপরও যদি এমন গণ বিপ্লব সৃষ্টি করা সম্ভব হয় যাতে সে ক্ষমতা
ছাড়তে বাধ্য হয় তাহলে তাও করা যেতে
পারে।
(নারী নেতৃত্ব প্রসঙ্গঃ বাংলাদেশ প্রেক্ষিত- ০৪ )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন