এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কর্নেল তাহের ছিলেন জঙ্গি নেতা

বাংলাদেশের মিডিয়া জগতে বামপন্থিদের আধিপত্য থাকায় স্বাভাবিকভাবেই বীরউত্তম কর্ণেল তাহেরের জীবনকে অতিমাত্রায় গ্লোরিফাই করা হয়েছে । কিন্তু আসলে কী ছিলেন তিনি? তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জঙ্গিবাহিনীর নেতা। সেই জঙ্গিবাহিনীর নাম গনবাহিনী। আদর্শগত অমিল ছাড়া বাংলা ভাই জেএমবি হরকাতুল জিহাদের সাথে এর তেমন কোন পার্থক্য নাই। গনবাহিনীর বিভীষিকা আজো বয়ে বেড়াচ্ছে যশোর ঝিনাইদহ কুষ্টিয়ার মানুষ। ইনু সাহেবরা নাকে খত দিয়ে, নিজের ফেলে দেয়া থুতু চেটে খেয়ে জাতে উঠেছেন। গাড়িতে মন্ত্রীর পতাকা লাগিয়েছেন। কিন্তু শ্রেণীশত্রু খতমের নামে যেসব হতভাগাদের তারা সন্ত্রাসের অভিশপ্ত জীবনে ঠেলে দিয়েছিলেন তারা আর ফিরতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনে। তারা এখনো ব্যস্ত একে অপরের মাথা কাটতে। কেউ কেউ হয়েছে ভাড়াটে খুনি। বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল রয়ে গেছে এখনো সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে।

কর্নেল তাহেরের জীবনকে সর্বোচ্চ মাত্রায় গ্লোরিফাই করে ডাঃ শাহাদুজ্জামান লিখেছেন তাহেরের জীবনভিত্তিক উপন্যাস- 'ক্রাচের কর্নেল'। সে উপন্যাসেও কর্নেল তাহেরের নাম উঠে এসেছে ষড়যন্ত্রের হোতা হিসেবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি দিয়েছিলেন, আর তিনি সেই চাকরির আড়ালে সরকার উৎখাত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। সেনাবাহিনীর ভেতরে গড়েছিলেন গ্রুপ উপগ্রুপ।

রক্ষীবাহিনীর অত্যাচার নৃশংসতা ছিল অপরিসীম। কিন্তু রক্ষীবাহিনী গঠন করার পক্ষে যদি একটা যুক্তি থেকে থাকে, সেটা হবে এই জাসদ গনবাহিনীর সন্ত্রাস। বিজয় দিবসে হরতাল, জনপ্রতিনিধি হত্যা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে হামলার মত অপরিপক্ক ও ভুল রাজনীতির পেছনে ছিলেন এরাই।

জাসদের হাজার হাজার কর্মী হত্যার দায় যদি শেখ মুজিবুর রহমানকে নিতে হয়, সেই দায় থেকে বাঁচতে পারেন না এরাও।
'৭৫ এর পনেরোই আগস্ট ঘটবার মত পরিবেশ তৈরি করেছিলেন কর্নেল তাহেররাই। এইসব ষড়যন্ত্রে অংশ ছিল আজকের মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, এবং কর্নেল তাহেরের ভাই অধ্যাপক আনোয়ারেরও। শেষমেষ এরাই শেখ মুজিবকে হত্যা করতেন, তাদের লক্ষ্যও ছিল সেটাই। কিন্তু এদের সৌভাগ্য যে, জাল গুটিয়ে আনার আগেই মেজর ফারুক রশীদ ডালিমরা ঘটিয়ে দেয় পনেরোই আগস্ট। ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসে, এদের অবস্থান তাই কোনভাবেই মেজর ডালিমদের চেয়ে কম নয়। স্বাধীন বাংলাদেশে এরাই ছিলেন প্রথম ষড়যন্ত্রকারী।

আগামীতে দেশপ্রেমিক কোন সরকার ক্ষমতায় এলে, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে ইনু এবং আনোয়ার সাহেবদের বিচার করার সুযোগ রয়ে গেছে। ইতিহাসের দায় মেটানোর জন্য এদেরও বিচার হওয়াটা জরুরি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন