এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০১১

অনুভূতি !

পাহাড়ের ঢালে বেড়ে ওঠা গাছের মগডালটা কয়েকটা বৃষ্টিভেজা পাখি কাঁধে নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে আমার চোখের সামনে । অতিপ্রাকৃতিক লাগছে বিষয়টা আমার কাছে । এই সমাজে টিকে থাকার সংগ্রামের মাঝে এমন কিছু দৃশ্য হঠাত্‍ সবকিছুকে অর্থহীন করে দেয় । বৈরাগ্যবাদী করে মনকে । তবে এটাও সত্য , ভরপেট সুস্বাদু খাবার খেয়ে চারতলার জানালার সামনে ফোমের চেয়ারে গা এলিয়ে এমন দৃশ্য দেখছি বলেই এটা মনোহর লাগছে । ঠেলাগাড়ি হাতে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে দেখলে এটাকেই নিশ্চয়ই চরম অসহ্য লাগত !




শনিবার, জুলাই 16, 2011

রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১১

শম্বুকের জন্য উপদেশ (নিজেকে শামুক ভেবে )

হে শম্বুক -
তুমি এগিয়ে চলো তোমার দুর্বার গতিতে ।
তোমার চেয়ে দ্রুতগতিতে হয়তো অনেকেই চলে
তাতে তোমার কী ?
তোমার সাথে
তুলনা হবে শুধু তোমারই ।
জেনে রেখো ,
প্রত্যেকেই কারো না কারো পিছনেই থাকে ।
হে শম্বুক -
এগিয়ে চলো অবিরাম সময়ের সাথে
যেখানে গিয়ে সমাপ্ত হবে পথ
ভেবে নিও
সেটাই তোমার গন্তব্যের সীমানা ।
হে শম্বুক -
চলার পথের সকল ভাঙ্গা সেতু
যতোটা পারো চেষ্টা করো পেরোবার
ফিরে দ্যাখো পেছনে
ভয় নেই - অনেকেই আছে , থাকবেও ।
মন খারাপ করো না । সাধ্যের অতিরিক্ত
কিছুই করার
প্রয়োজন নেই তোমার ।



 রবিবার, জুলাই 10, 2011

মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১১

মিনতি (বাঁশকাব্য)

ট্রানজিট করিডোর
তেল গ্যাস পানি
নেন দাদা সবকিছু
দিতে আমি জানি ।

সীমান্তে লাশ চান
আরো কিছু ভুমি ?
হাতটা বাড়ান শুধু
দিয়ে দেই চুমি ।

বিনিময় ? ছিঃ ছিঃ !
অসভ্যদের মত
ট্রানজিট ফি চায়
দেশদ্রোহী যত !

আমার চেয়ে দেশপ্রেমিক
আছে কেউ দাদা ?
বুঝলনা জনগন
যতসব গাধা !

একটাই আব্দার
শুধু কভু যদি
পড়ে যাই ঝামেলায়
রাখতে এ গদি -

অবুঝ আমারে প্রভু
করিবেন স্মরণ
যা চান তাই দিয়ে
যাবো আমরণ ।



 মঙ্গলবার, জুলাই 5, 2011

রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১১

যুদ্ধে যাবো মা

ভেবেছো মা তুমি ছেলেকে তোমার
রাখবে আঁচলে বেঁধে
জাননা মাগো ওদের সামনে
লাভ হবে নাকো কেঁদে ।

নোমানী , বকর , রাজীবের মা
কাঁদিয়াছে কতদিন
তাই দেখে ওরা নবউদ্যমে
বাজিয়েছে সুখ- বীণ ।

আমরা যদি না নামি আজ
প্রতিবাদ সংগ্রামে
তোমাকেই মাগো বিকোবে ওরা
সিকি পয়সা দামে ।

রাজপথে আজ দাড়াতেই হবে
মুষ্টিবদ্ধ হাতে
দাবানল বুকে জ্বালাতেই হবে
প্রগাঢ় কৃষ্ণ রাতে ।

ভয় নেই মা এই পথে আজ
লক্ষ কিশোর ছেলে
ভয় করে নাকো স্বৈরাচারের
বুলেট -মামলা - জেলে ।



 রবিবার, জুলাই 3, 2011

শনিবার, ২ জুলাই, ২০১১

টিউ'র জন্য কষ্ট (বর্ষার অনুগল্প)


-মা ক্ষুধা লেগেছে । কিছু খেতে দাওনা ।
-দিচ্ছি বাবা । বৃষ্টিটা একটু থামুক । দেখিস তোর জন্য কত কিছু নিয়ে আসবো !
-পেট ব্যথা করছে মা । কিছু খেতে দাও ।
-আমার লক্ষ্মী ছেলে । আয় আমার কোলে আয় । তোর বাবা আসুক । অনেক মজার মজার খাবার দেবো আজ তোকে ।
মা পাখিটা তার ভেজা ডানাটা ঝাপটিয়ে নেয় । ছোট্ট বাচ্চাটাকে ডানার ভেতর ঢুকিয়ে উম দেয়ার চেষ্টা করে । নিজেও খুব ক্ষুধার্ত । এদিকে বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট হওয়ার পথে ছোট্ট বাসাটা । এই বৃষ্টির মধ্যেও পরিবারের জন্য খাবার সংগ্রহে গেছে বাবা পাখিটা । সে অনেকক্ষণ হলো । এখনো ফেরেনি । ভেজা ডানা নিয়ে বৃষ্টির ভেতর ওড়া যায় না । হেঁটে হেঁটে খাবার খুঁজতে হয় । বাইরে কোন খাবারও সহজে পাওয়া যায় না । সব বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় । শুকনো ভালো খাবারের জন্য মানুষের বাড়িতে ঢুকতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ।
-বাবা আসছে না কেন মা ? ডানার ভেতর থেকে প্রশ্ন করে বাচ্চাটা । ওর নাম টিউ । মা পাখিটা আর কোন উত্তর দেয় না । তার নিজেরও অনেক দুশ্চিন্তা হচ্ছে ।
গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে । যেটুকু খাবার ছিল প্রথম দিনটা কোনরকম চালিয়ে নিয়েছে । নিজেরা না খেয়ে বাচ্চাটার জন্য কিছু রেখেছিল । সেটুকুও শেষ হয়ে গেছে গতরাতে ।
সকালে কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি থামতেই বাবা পাখিটা তাঁর দুর্বল শরীর নিয়ে উড়াল দেয় । এখন দুপুর পেরিয়ে যাচ্ছে । বৃষ্টি নেমেছে আবার । এখনো ফেরেনি বাবা পাখিটা । ক্ষুধার্ত টিউ মায়ের ডানার উমে ঘুমিয়ে পড়ে । মা পাখিটা খেয়াল করে তার নিজেরও পেট মোচড় দিচ্ছে ক্ষুধায় । কিন্তু কিছু করার নেই । এমনিতে টানা বৃষ্টি । তারওপর ছোট্টমণি টিউকে একা রেখে কোথাও যেতেও পারছে না ।
নানারকম দুশ্চিন্তায় কখন যে তন্দ্রা এসেছিল বুঝতে পারেনি মা পাখিটা । বৃষ্টিটা একটু কমেছে । এমন সময় ডাক শুনে চমকে উঠলো । বাবা পাখিটা ফিরে এসেছে । ছোট্ট একটা পুটলি মুখে ।
-এই বাবা ওঠ ওঠ । টিউকে ডাকে মা পাখি । আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকায় টিউ । সারা শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে । বাসাটা ভিজে একাকার হয়ে আছে তিনদিন ধরে । এতটুকু রোদের দেখা নেই ।
টিউর এ অবস্থা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলো মা ও বাবা । ওকে খাওয়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো মা পাখিটা ।
বাবাটা সামান্য কিছু খেয়ে আবারো নেমে পড়লো বৃষ্টির মধ্যেই । পাশের গ্রামের বাঁশবাগানে একটা ডাক্তার ঘুঘু পাখি আছে । তাকে ডেকে আনতে হবে ।
এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসছে । বৃষ্টি এখনো থামলো না । সন্ধ্যা নামার একটু পর ব্যর্থ ও হতাশ হয়ে ফিরে এলো বাবাটা । ডাক্তার পাখিটাকে পাওয়া যায়নি । কয়েকদিন আগে নাকি সে তার বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গেছে শহরে । বৃষ্টির কারণে এখনো ফিরতে পারেনি ।
টিউকে আদর করে বাবা পাখিটা । তাকে একটা রুপকথার গল্প শোনায় । টিউর জ্বর আরো বেড়েছে । টিউকে খাইয়ে দেয় বাবাটা অনেক আদর করে । টিউ ঘুমিয়ে পড়লে তারাও ঘুমাতে চেষ্টা করে ।
পরদিন । সকাল হয় । টিউ আর ঘুম থেকে ওঠে না । জ্বরও নেই তার গায়ে । বৃষ্টি তখনো থামেনি । টিউর বাবা মা দুজনার চোখের জল মিশে যায় বৃষ্টিতে । কেউ দেখে না ।
সিদ্ধান্ত নেয় , বৃষ্টিটা থামলেই উড়াল দেবে অজানার উদ্দেশ্যে ।


শনিবার, জুলাই 2, 2011