এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬

টাউট শ্রেণীর উত্থান

বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জে একটা বিশাল টাউট শ্রেণী তৈরি হয়েছে। এরা কোন প্রোডাকটিভ কাজ না করে নানারকম টাউটগিরি ব্যবসা করে টাকা বানাচ্ছে। ধরুন আপনার চৌদ্দপুরুষ শিক্ষিত, শিক্ষক-অধ্যাপক বা সৎ চাকরিজীবি ছিলেন। আপনি নিজেও তাই এবং কোনমতে মোটামুটি স্বচ্ছল জীবনযাপন করছেন। বাবা-দাদার তৈরি করে যাওয়া একটা পুরনো বাড়িতে থাকেন। অথবা ভাড়া বাড়িতে থাকেন। কিন্তু এলাকার অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত ভবঘুরে লোকজন দেখবেন হঠাৎ অনেক টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে। বাড়ি গাড়ি দাবড়ে বেড়াচ্ছে। এবং সবচেয়ে ভয়ংকর হলো, এরা রাজনীতিতে জড়িয়ে ভদ্রলোকদের নির্বাসনে পাঠাচ্ছে। স্থানীয় সরকারের মেম্বার চেয়ারম্যান কমিশনার মেয়র পদে নির্বাচন করে টাকা ও পেশির জোরে ক্ষমতা দখল করছে টাউট নব্যধনীরা।
এইভাবে দিনকে দিন সমাজটা টাউটদের হাতে চলে যাচ্ছে। অলরেডি গেছে বলা যায়। সমাজে দয়ামায়া হীন একটা ক্ষমতাশালী গোষ্ঠি তৈরি হচ্ছে। রাজনীতি এবং সমাজের পরিচালনা ভার চলে যাচ্ছে টাউটদের হাতে।

সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬

খেলা দেখে সময় নষ্ট !

বাসা অফিস রাস্তাঘাট দোকানে প্রচুর মানুষকে দেখি বসে বসে ক্রিকেট খেলা দেখছে।
কেউ নিজে খেললে তাও মেনে নেয়া যায়, কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা শুয়ে বসে খেলা দেখা মেনে নেয়া যায় না। এক দেড় ঘন্টার ফুটবল খেলা দেখাও হয়তো সমর্থন করা যায়, কিন্তু ক্রিকেট? মিনিমাম একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দেখতে বসলেও তো চার পাঁচ ঘন্টার ব্যাপার।

নিজে খেললে তবু শরীরের ব্যায়াম হয়, যাদের সাথে খেলা হয় তাদের সাথে হৃদ্যতা বাড়ে। সামাজিকতা তৈরি হয়। কিন্তু বসে বসে খেলা দেখে কী হয়? শরীরের ক্ষতি। সংসারের ক্ষতি। সমাজের ক্ষতি। রাষ্ট্র বা দেশেরও ক্ষতি হয়। 

অনেকেই দেখি ঘন্টার পর ঘন্টা খেলা দেখছে। এমনকি কারো কারো তো 'নেশা' হয়ে গেছে। ছাত্ররা ক্লাস মিস করছে, পড়ালেখায় ফাঁকি দিচ্ছে। কেউ কেউ অফিসের কাজে ফাকি দিচ্ছে। আবার কাজের মাঝে মাঝে স্কোর দেখে মনোযোগ নষ্ট করছেন।
এভাবে আমাদের হাজার হাজার কর্মঘন্টা স্রেফ নষ্ট হচ্ছে। আপনি বসে বসে খেলা দেখছেন, কিন্তু এর আর্থিক লাভ তুলছে টেলিভিশিন আর ফ্র‍্যাঞ্চাইজিরা।
আজ এই ওয়ার্ল্ড কাপ, কাল সেই ওয়ার্ল্ড কাপ, এরপর বিপিএল,তারপর পিসিএল, তারপর এই লীগ সেই লীগ। সারা বছর খেলা চলছেই । বিরাট ব্যবসা ফেঁদে বসেছে তারা। আর আপনি আমি হলাম সেই ব্যবসার ঘুটি।

আপনি নিজে অলস সময় কাটাচ্ছেন, টেরও পাচ্ছেন না, আপনার এই অলস সময়কেই কেউ কেউ টাকা বানানোর উপায় হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে।
সারাদিন বা ঘন্টার পর ঘন্টা খেলা দেখাকে কোন যুক্তিতেই ভালো বলার সুযোগ নাই। ধর্মীয় দৃষ্টিতে এটা স্রেফ বেহুদা সময় নষ্ট। আর যেকোন বেহুদা কাজে সময় নষ্ট করা চরম নিন্দনীয় ব্যাপার (সুরা মু'মিনুন)।

এটাকে কোন সুস্থ বিনোদনও বলা যায় না। বিনোদন চাইলে বরং বই পড়ুন, অন্তত ভালো কোন সিনেমা নাটক বা ডকুমেন্টারি দেখুন। পরিবারকে সময় দিন, বাচ্চাকাচ্চাকে নিয়ে ঘুরতে যান। সামাজিক কাজ করুন। সবচেয়ে ভালো হয়, নিজেই খেলতে নেমে যান। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেন, তাও ভালো। কিন্তু এইভাবে দিনের পর দিন, ঘন্টার পর ঘন্টা খেলা দেখে আপনার প্রাণশক্তি এবং কর্মঘন্টা নষ্ট করবেন না।

বুধবার, ১৮ মে, ২০১৬

আল্লাহ রাসুল নিয়ে কটুক্তি করা ফ্যাশন হয়ে গেছে

শিক্ষক অবশ্যই শ্রদ্ধেয়। কিন্তু শিক্ষক যদি নিজেই তার মর্যাদা নষ্ট করেন তাহলেও কি তাঁকে শ্রদ্ধা করার বাধ্যবাধকতা থাকে? পরিমল বাবুও একজন শিক্ষক ছিলেন, তাঁকেও কি শ্রদ্ধা করা জরুরী?
নারায়ণগঞ্জে প্রধান শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় আমি এমপি সেলিম ওসমানকে সমর্থন করতে বাধ্য হচ্ছি। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি ঘটনার শুরুতে না, শেষে এসেছেন। তাকে ডেকে আনা হয়েছে। তিনি জনগনের ক্ষোভ থেকে রক্ষা করার জন্য, বড় ধরণের সংঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে কান ধরাতে বাধ্য হয়েছেন।
একজন শিক্ষকের ক্লাসে শিক্ষার্থীরা হট্টগোল করছিল। সে ক্লাসের পাশ দিয়ে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত যাচ্ছিলেন।
ছাত্র মৃদুলের বর্ণনায়, “হেড স্যার আইয়া ক্লাসের ভিতরে দাঁড়াইছে। তারপর বলতাছে তোগো আর শিক্ষা হবে না। তোরা অনেক কথা বলছ। শিক্ষকদের কথা শুনছ না। শুনবি কিভাবে? তোগো আল্লাহও নাপাক তোরাও নাপাক। ” (বিবিসি)
এটা কী ধরনের কথা? ছাত্রদের হট্টগোল করার সাথে আল্লাহর সম্পর্ক কি? "তোগো আল্লাহও নাপাক তোরাও নাপাক।” এইটা কী একজন প্রধান শিক্ষকের মন্তব্য হতে পারে?
ইসলাম, আল্লাহ, রাসুল, দাড়ি টুপি হিজাব নিকাব নিয়ে কটুক্তি করা এখন অনেকেরই ফ্যাশন হয়ে গেছে। এটা চলতে দেয়ার সুযোগ নেই। এর ফলে দেশে সন্ত্রাস বাড়ছে, অসহিষ্ণুতা বাড়ছে, অস্থিরতা বাড়ছে, উগ্রবাদীরা সুযোগ পাচ্ছে।
এটা হতে দেয়া যায় না। এটা সমর্থন করা যায় না।

বুধবার, ১১ মে, ২০১৬

পরিশেষে

অতঃপর
সবকিছু মেশে গিয়ে কাগজের লেখনিতে
সব রক্ত, সব কথা, সব প্রাণ -
ক্রমাগত পুঞ্জিভূত হতে থাকে ইতিহাসের
শুকনো পাতায়।