এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শুক্রবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

অন্যরকম যুদ্ধ

‪আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, মানবজাতির সবচেয়ে বড় শত্রু কে? পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মানুষকে খুন করেছে কে? আপনি হয়তো চেঙ্গিস খানের নাম স্মরণ করবেন । হয়তো হিটলারের কথা বলবেন । হয়তো পারমাণবিক বোমার কথা বলবেন । কিন্তু মানবজাতির আসল শত্রু বড় কেউ নয় । বরং তারা এতটাই ক্ষুদ্র যে আমরা তাদের খালি চোখে দেখতে পাই না । সেজন্য তাদেরকে আমরা চিনিও না । পৃথিবীর মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু, সবচেয়ে ভয়ংকর সেই খুনীদেরকে চেনেন শুধু ডাক্তার এবং বিজ্ঞানীরা। তারা এই খুনিদের জাতকে নাম দিয়েছেন ব্যাকটেরিয়া । আসলে ব্যাকটেরিয়াই মানবজাতির সবচেয়ে বড় শত্রু ! এদের জাতভাই আরেক গ্রুপ খুনিকে নাম দেয়া হয়েছে ভাইরাস ।
পৃথিবীর ইতিহাসে কতকোটি মানুষকে যে এরা হত্যা করেছে তার হিসাব করা সম্ভব নয় । একসময় কলেরা বা ওলাবিবিতে ভুগেই সাফ হয়েছে দেশের পর দেশ । যক্ষা, টাইফয়েড, প্লেগে উজাড় হয়েছে জনপদ । তখনো এই ভয়ংকর শত্রুকে আমরা চিনতে পারিনি ।
এই খুনিদের আমরা চিনতে শুরু করি ১৬৭৬ সাল থেকে । লিউয়েনহুক প্রথম ব্যাকটেরিয়াকে দেখতে পান । আর এরাই যে খুনি রোগ সৃষ্টিকারী সেটা জানা যায় আরো দুইশ বছর পরে । কিন্তু এই খুনিদের চিনলেও তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার অস্ত্র ছিলনা আমাদের হাতে । বলতে গেলে এই কিছুদিন আগে ১৯২৮ সালে পেনিসিলিন আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রথম অস্ত্র আবিস্কার হয় । আমাদের এই অস্ত্রের নাম এন্টিবায়োটিক । তারপর থেকে অনেক গবেষণা করে এই অস্ত্রে শাণ দেয়া হয়েছে । নানাভাবে ডিজাইন করা হয়েছে । ভার্সন আপগ্রেড করা হয়েছে । ফলে এই খুনিদের আক্রমণ থেকে বেঁচে ফিরে এসেছে কোটি কোটি মানুষ । কিন্তু অনেক খুনি ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর অস্ত্র এখনো আবিস্কার করা যায়নি । আবার ওদিকে সেই খুনি ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসরাও কিন্তু বসে নেই । তারাও তাদের প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ পদ্ধতি পরিবর্তন করছে প্রতিনিয়ত । একে বলে রেজিস্ট্যান্স । আমাদের অনেক পুরনো অস্ত্রের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স ডেভেলাপ করেছে তারা । আর না বুঝে আমাদের অনেকেই মীরজাফরের মত তাদের সহযোগিতা করছে । হাতুড়ে অডাক্তারদের কাছ থেকে ইচ্ছামত এন্টিবায়োটিক খেয়ে এন্টিবায়োটিক নামক এই প্রাণরক্ষাকারী মহা অস্ত্রকে দিনদিন অকার্যকর করে তুলছি আমরাই । আবার ডোজ পূর্ণ না করেও ব্যাকটেরিয়াদের সহযোগিতা করছি কেউ কেউ । ইতোমধ্যেই অনেক অস্ত্র অকার্যকর হয়ে গেছে । এভাবে চললে একসময় আমাদের সব অস্ত্র অকার্যকর হয়ে যাবে । বেঘোরে প্রাণ হারানো ছাড়া তখন আর কিছুই করার থাকবে না ।
সবার প্রতি অনুরোধ এই ভয়ংকর খুনিদের সহযোগিতা করবেন না । অবশ্যই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক খাবেন না । একবার শুরু করলে ডোজ কমপ্লিট না করে ওষুধ বন্ধ করবেন না । আর ডাক্তারদের প্রতি অনুরোধ, বিনা প্রয়োজনে ইচ্ছামত এন্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করবেন না । দুনিয়ার মানুষ এক হও । খুনি ব্যাকটেরিয়াকে রুখে দাঁড়াও ! 


২৭-০২-২০১৫ 

বৃহস্পতিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

লাখে লাখে ডাক্তার থাকবে লেকিন চিকিৎসা হবে না

মিশরে নাকি অনেক বড় বড় ডিগ্রীধারী ডাক্তার আছে । কিন্তু চিকিৎসা জানেনা । বাংলাদেশ সরকার সম্ভবত সেরকম কোন উদ্যোগ নিতে চায় । দেশে লাখে লাখে ডাক্তার থাকবে লেকিন চিকিৎসা হবে না । tongue emoticon unsure emoticon angel emoticon
খবর হলো, চুপিসারে বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে ভর্তির নম্বর কমিয়েছে সরকার। গতকাল বুধবার এ সম্পর্কে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে । স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ হতে পরিবর্তন করে ৩০-এ নির্ধারণ করা হলো।’ সূত্রগুলো বলছে, একইভাবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির নম্বরও কমানো হবে এমন আশঙ্কা রয়েছে। cry emoticon unsure emoticon colonthree emoticon
এতদিন মেডিকেল স্টুডেন্ট বা ডাক্তার দেখলে সবাই মনে করতো, হি ইজ ওয়ান অব দ্য টপ ব্রিলিয়ান্টস অব বাংলাদেশ । আর ভবিষ্যতে মেডিকেল স্টুডেন্ট শুনলে মনে হবে- 'কি জানি কি ! হয়তো কোথাও চান্স পায় নাই, পরে মেডিকেলে ভর্তি হইছে !! tongue emoticon colonthree emoticon devil emoticon
মাননীয় সরকার মহাশয়, দয়া করিয়া অগণিত ডাক্তার না বানাইয়া গুণিয়া গুণিয়া ডাক্তার বানান । যথাযথ প্রশিক্ষণ ও নিরাপদ কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করেন । দক্ষতা মনিটরিং ও জবাবদিহিতা বাড়ান । মানহীন অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট হইবে মাত্র, আপনাদিগের পকেটও হয়তো বেশ মোটাতাজা হইবে । কিন্তু দেশের কোন ফায়দা হইবে না । devil emoticon angel emoticon unsure emoticon cry emoticon colonthree emoticon tongue emoticon

বুধবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

হৃদয় ভাঙ্গার গান

বিকেলগুলো ঝরে যায় বিবাগী সন্ধ্যার আগে,  
টেবিলে নিবদ্ধ চোখ 
সেখানে পাহাড় নেই, সেখানে নারী নেই, 
সেখানে সমূদ্র নেই,  
বিপন্ন মানবতার মুক্তির প্রয়োজন ভুলে 
বিপ্লবের স্বপ্নটাও মাঝে মাঝে লুকোচুরি খেলে । 
টেবিলজুড়ে, যতদূর চোখ যায়- 
শুধু আমি । 
শুধু আমি । 
শুধু আমি ।  

স্টেথোস্কোপ কানে লাগিয়ে শুনে যাই- 
মুমূর্ষু মানুষের হৃদস্পন্দন; বিদায়ের পদধ্বনি । আর 
টেবিলের নিচে চাপা পড়ে যায়  
আপন হৃদয়ের ভাঙ্গনের সুর  
স্টেথোস্কোপে তার হদিস মেলেনা । 

১৮-০২-২০১৫ 

মঙ্গলবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

এবারের বসন্তে কোন প্রেম নেই

গোমড়ামুখে চলে গেছে শীতের শীতল রাত । তবু  
দুর্বাঘাসের ডগায় আজও চিকচিক করে  
রক্তের শিশির । 
এবারের বসন্তে কোন প্রেম নেই, 
ভালোবাসা নেই,  
ভালোলাগা নেই ।  
কৃষ্ণচূড়া আর শিমুলের লাল রঙ  
রক্তের লালিমার কাছে প্রতিরাতে হার মেনে  
মাথা নত করে বসে আছে ।  

যেখানে দয়া নেই মায়া নেই  
মানবিক প্রেম নেই, 
হৃদয় ও হৃদপিণ্ড নেই,  
সেখানে কৃষ্ণচূড়া কথা বলে না ।  
মানুষ সইতে পারে মানুষের খুন  
কৃষ্ণচূড়া কখনোই না ।


১৭-০২-২০১৫ 

সোমবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

বুলেটবাদী

পিশাচদের হাতে,
রিভলবার, রাইফেল আর স্টেনগানের ভেতর থাকতে থাকতে
বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে বুলেটেরা !
মিছিল করে ওরা এখন প্রতিনিয়ত বেরিয়ে আসে
রাতের আঁধারে ! আর কী অদ্ভুত ! বুলেটের মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে
নিক্ষেপ করা হয় জ্যান্ত মানুষ , যারা বুকে পিঠে শুষে নেয়
ঝাঁক ঝাঁক বুলেট । আর এইভাবে -
প্রতিদিন গনহত্যার শিকার হচ্ছে নিরীহ বুলেটরা !
.
অবশ্য মানুষগুলোও আর ফিরে আসেনা । তবু
মানুষের জন্য আমার আর আফসোস নেই । এই দেশে
মানুষের জন্য কান্না অর্থহীন । আমি বরং আজ
নিহত বুলেটগুলোর জন্য কাঁদবো ।

রবিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

জীবনের জলছবি

ভেবেছিলাম, কোথাও দাঁড়িয়ে একে যাবো জীবনের জলছবি । কিন্তু,
আমি দাঁড়িয়ে আছি এক চলন্ত সিঁড়িতে । উঠছি, নাকি নামছি ?
ঠিক ঠাওর করতে পারিনা । এই সিঁড়ির অগ্রপথিকেরা
কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে অহরহ । আমিও বিলীন হবো ?
কোন অন্যথা হবে কি? হয়েছে কি কোন কালে ?  
.
আজ আর তাই আগ্রহ জাগেনা খুব । কী আছে প্রয়োজন ? কিংবা
স্বার্থপরতার মাথা খেয়ে, কিসের নেশায়  
কেইবা বয়ে বেড়াবে এক বিলীন মানুষের-
রেখে যাওয়া ক্যানভাস? 

মঙ্গলবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

হায় স্বদেশ !

একদা কবি বলেছিলেন, উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ ।
আর এখন যদি আপনারা কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করেন স্বদেশের কথা-
আমি বলবো, অথবা বলতে বাধ্য হবো -
সেই নিরীহ উট মারা পড়েছে বেশ আগেই ! এখন,
স্বদেশের পিঠেই সওয়ার হয়েছে হিংস্র নেকড়েরা,
মানুষখেকো হায়েনার পাল ।
.
কিংবা যদি জিজ্ঞেস করেন, কোথায় যাচ্ছে স্বদেশ ?
আমি বলবো- ঘাড় হতে হায়েনা তাড়াতে না পারলে,
নেকড়ের পেট ছাড়া স্বদেশের সামনে এখন
আর কোন্‌ গন্তব্য থাকতে পারে ?


০৩-০২-২০১৫