এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৪

আরাধ্য গোলাপ



.
দোকান হতে কেনা ২৮ টি গোলাপ
কিংবা বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে আনা ১০৮ টি নীলপদ্ম
লাল অথবা নীল হোক , সুগন্ধ থাকুক বা না থাকুক
আমার কোন বিকার নেই ,
ছিলওনা কোনদিন ।

আমি বধির , আমি বর্ণান্ধ, আমার নেই কোন ঘ্রাণশক্তি
আমার সমগ্র সত্ত্বা জুড়ে আছে একটিমাত্র জীবন্ত ফুল
যার সুগন্ধ আজো রয়ে গেছে অনাঘ্রাত
যার স্বাদ রয়ে গেছে জিহ্বার অধরা হাতে পেলে 
একদিন আমি কাপড়ে কামড়ে ছিড়ে ফেলবো তার সমস্ত পাপড়ি !

বাগানের ফুল আমায় দিওনা
রজনীগন্ধা কৃষ্ণচূড়া জুঁই ঘাসফুল সবকিছু ম্লান লাগে
তাদের বৃন্ত জ্বালা ধরায় আমার চর্মসার হাতে
আমিতো লালায়িত সেই একটি ফুলের জন্য
মুঠোয় নিতে চাই, শুধু তারই রক্তাভ বৃন্ত ...

.
তুমিই
আমার সেই আরাধ্য গোলাপ ; প্রিয়তমা ।  

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৪

ভালোবাসার হুমকী !



তোমাকে শুরুতেই হুমকী দিচ্ছি  
ভালোবেসে ফেলবো কিন্তু !
বিশ্বাস হচ্ছেনা ? অট্টহাসিতে তুমি হাওয়ায় উড়িয়ে দিচ্ছ
আমার হুমকী , শিমুল তুলোর মত ! আমি নিশ্চিত
একদিন পস্তাতে হবে তোমায় ! 

আবার বলছি- সাবধান হয়ে যাও । 
সাতার জান ?
আমার ভালোবাসা বান্দরবানের ঝরণা নয় , যমুনার ঢেউ নয়  
সুনামির মত সাতার জানলেও হয়তো রক্ষা হবেনা  
নিশ্চিত হাবুডুবু খেয়েই মরবে !

বলছি - কতটুকু তাপ  সহ্য করতে পারো ?
আমার ভালোবাসা কিন্তু এক জাগ্রত ভিসুভিয়াস !
লাভার স্রোতে দগ্ধ হয়ে যাবে ।

আবার হাসছো ? শোন , আমার ভালোবাসা 
লুতুপুতু ভালোবাসা নয় । ভয়ংকর ভালোবাসা । 

ভালবাসার বন্যায় ভাটিতে ভাসিয়ে দেবো । হাবুডুবু খেয়ে
বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে
তুলে এনে নিক্ষেপ করবো ভিসুভিয়াসে । 

তোমায়
ভালবাসার অত্যাচারে নাকানি চুবানি খাইয়ে ছাড়বো
জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত !

খাওয়াবেন তো আলুই !

খাওয়াবেন তো আলুই , কিন্তু কীভাবে খাওয়াবেন সেটাই হলো ব্যাপার ।

যদি ভর্তা করে খাওয়ান, অতিথি হয়তো বলবে - 'কাঙ্গাল একটা । এতদিন পরে গেলাম , আলুভর্তা খাওয়াইলো !'
কিন্তু আপনি যদি ফুসকা বানিয়ে খাওয়ান , প্রশংসাবানী শুনবেন । ' উফ , ফুসকাটা কী দারুণ হয়েছিল ! এখনো স্বাদ জিভে লেগে আছে !'
আর যদি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই করে খাওয়ান, তাহলে তো আপনি 'ড্যাম স্মার্ট !'

বুঝলেন ভ্রাতঃ, খাওয়াবেন তো আলুই, কিন্তু কীভাবে খাওয়াবেন সেইটাই হলো ব্যাপার... হু হু ... !

কুয়াশায় অবগাহন

১.
দরজা খুলেই আমিতো অবাক !
সামনে অনাবৃত কুয়াশার শরীর ! এই শৈত্যপ্রবাহে
কুয়াশা ঢেকে রেখেছে পথ ঘাট বন বাদাড় খালবিল জঙ্গল
মাঠ , মেঠোপথ , হলুদাভ সরিষার ক্ষেত ।
অনাহারী পাখিরা চুপটি মেরে বসে আছে শীতল নীড়ে
ক্ষুধার্ত শিশুর চোখে অসহায় চোখ । আর
ডানা ঝাপটাবার ব্যর্থ চেষ্টা !

সবকিছু ঢেকে রেখেছে কুয়াশা , এগিয়ে আসছে আমার দরোজায়
ঢেকে দিতে আমাকেও ? আমার স্বপ্নগুলোকেও ?

অবাক আমি । সবকিছু ঢাকতে এসেছে কুয়াশা
নিয়ে তার অনাবৃত শুভ্র শরীর !

২.
এই ক্ষুদ্র দেহে জড়ালাম পুরনো চাঁদর । ভীত নই আমি
ভালোবেসে আজ-
নির্ভীক বীরের মত করবো অবগাহন
কুয়াশার রুপে !

(কুয়াশায় অবগাহন/ ২৭-০১-২০১৪)

শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৪

সমকামিতা মানসিক রোগঃ প্রয়োজন চিকিৎসার


  • সমকামিতা এখন বাংলাদেশেও একটি আলোচিত বিষয় । সমকামীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী কেমন হওয়া উচিৎ ? কেউ সমকামী জানলে কী করা উচিৎ ?

    সমকামিতা (Homosexuality) একটি মানসিক রোগ । সমকামীরা মানসিক রোগী , তাদের জন্য স্বীকৃতি বা অধিকার নয় – প্রয়োজন যথাযথ চিকিৎসার ।
    Sexual perversion বা Psycho-sexual disorder গুলোর মধ্যে আছে- sadism (আরেকজনের ওপর টর্চার করে যৌনতৃপ্তি লাভ) , masochism (নিজেকে কষ্ট দিয়ে) , pedophilia (শিশুদের প্রতি যৌন আসক্তি ) , fetishism (বস্তুর প্রতি যৌন আসক্তি ) , transsexualism (নিজেকে ভিন্ন লিঙ্গের মনে করা ) , transvestism (বিপরীত লিঙ্গের পোষাক পড়া ) , exhibitionism (নিজের যৌনাঙ্গ প্রকাশ্যে প্রদর্শনের প্রবণতা) , zoophilia (পশুর প্রতি যৌন আসক্তি ) , voyeurism (অন্যের যৌনাঙ্গ দেখার আসক্তি ) এবং Homosexuality (সমলিঙ্গের প্রতি আসক্তি) ইত্যাদি ।
    এগুলো মানসিক রোগ এবং কেবল যে ব্যক্তিগত ক্ষতি তাই নয়, এসব থেকে সামাজিক অপরাধ পর্যন্ত ঘটে থাকে । যেমন স্যাডিজম প্রবণতা থেকে ধর্ষণ ও খুন হয়ে থাকে ।

    মানসিক বৈকল্যের শিকার কিছু লোক সমকামীতার পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরছে এই বলে যে , শত শত প্রজাতির পশুর মাঝে হোমোসেক্সুয়ালিটির প্রবণতা আছে- সুতরাং মানুষের জন্যেও এটা স্বাভাবিক ! এটা কোন রোগ নয় !

    এদের কাজকর্ম তো আগেই পশুর স্তরে নেমে গেছে , চিন্তাভাবনাও সেই স্তরের বলেই মনে হয়েছে । মানুষ আর কেঁচোকে এরা একই কাতারের প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করে ! আমি সহজ ভাষায় এদের এই ‘যুক্তি’ (!) কে খন্ডন করি – পশুরও ক্যান্সার হয়, মানুষেরও ক্যান্সার হয় । সুতরাং ক্যান্সার হওয়া স্বাভাবিক, এটি কোন রোগ নয় !!!

    আরেকটা বিষয় এরা প্রমাণ হিসেবে বলে যে – ১৯৭৩ সালে মন:স্তাত্ত্বিকরা 'সমকাম প্রবণতাকে' মনোবিকলনের তালিকা থেকে বাদ দেন ।
    কিন্তু এই তথ্যটি সত্য হলেও এর পেছনের সত্যটা তারা বলে না । Homosexuality কে American Psychiatric Association (APA) , Diagnostic and Statistical Manual Of Mental Disorders (DSM-II) তে mental disorder এর তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে নয় , রাজনৈতিক কারণে এবং ভয়ভীতি ও হুমকীর মুখে ।
    Dr. Ronald Bayer, যিনি একজন pro-homosexual psychiatrist তাঁর ‘Homosexuality and American Psychiatry: The Politics of Diagnosis. (1981)’ বইয়ে লিখেছেন আসলে কীভাবে এবং কেন এটাকে বাদ দেয়া হয়েছিল । বিস্তারিত জানতে বইটি পড়তে পারেন । আপাতত এটুকু উল্লেখই যথেষ্ট, তিনি লিখেছেনঃ ‘The effort to remove homosexuality as a mental disorder from the DSM was the result of power politics, threats, and intimidation, not scientific discoveries.’
    এছাড়াও এ বিষয়ে Dr. Jeffrey Satinover লিখেছেন ‘Homosexuality and the Politics of Truth’ বইয়ে ।

    বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য যে সমকামিতা একটি মানসিক রোগ । এর জন্য প্রয়োজন সাইকোথেরাপি । কারো ভেতরে যদি এমন কোন প্রবণতা লক্ষ করা যায় , তাহলে আমাদের করণীয় হচ্ছে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা । সাইকিয়াট্রিস্টের সাথে দেখা করা ।

মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৪

কোন পথে যাবো ?

কিছুদূর পরপর চৌরাস্তার মোড়
কখনো কখনো রাস্তার সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ধারাপাত
চোখের সীমানা আটকে যায় পথের শুরুতেই , শেষটা অজানায়
কখনো নিজেই থামি । কখনোবা থামিয়ে দেয় অন্য কেউ
প্রতিটি মোড়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবার নতুন করে ভাবতে হয়
ভুগতে হয় সিদ্ধান্তহীনতায় ; দ্বিধা-দ্বন্দ্বে
‘কোন পথে যাবো ?’

এ এক অন্যরকম সড়ক ; জীবনের পথে
একবার মাত্র হেঁটে যাওয়া যায় এই অসীম সড়কে
শুধুই সামনের দিকে । এখানে পরীক্ষামূলক বলে কিছু নেই ।
উপায় নেই পেছনে ফিরে নতুন পথ ধরার
প্রতিটি মোড়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবার নতুন করে ভাবতে হয়
ভুগতে হয় সিদ্ধান্তহীনতায় ; দ্বিধা-দ্বন্দ্বে
‘কোন পথে যাবো ?’

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৪

সমস্যা নাই, তাও দেখেন !

একজন রোগী এসেছে বুকে ব্যথা নিয়ে । শ্বাসকষ্টও আছে । ডিউটিতে মহিলা ডাক্তার । তিনি নতুন রোগীকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন । এমন সময় আরেকজন এসে –

- ম্যাডাম আসেন , আমার রোগীটাকে একটু দেখেন ।
- কেন , একটু আগেই তো দেখে এলাম । কোন সমস্যা ?
- না । সমস্যা নাই , তাও আবার একটু দেখেন !!
- ......।

শেষকথাঃ ডাক্তারের রাগ দেখসেন ? কইলাম রোগীকে দেখার জন্য , দেখলো না । এইজন্যেই তো হেগোরে মাইনষে কসাই কয় !!!

বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৪

সুখের গোপন রহস্য !

অমুকের চেহারা কী সুন্দর , আমার চেহারা সুন্দর না ।
অমুকের কত টাকা, আমার টাকা নেই ।
অমুকের গাড়ি আছে, আমার গাড়ি নেই ।

এই আমাদের দুঃখ । এইসব ভেবে ভেবে আমরা সুখকে নিজ হাতে ঠেলে দেই বহুদূরে ।
কিন্তু জীবনে সুখী হবার প্রধান এবং আসল উপায় হলো – অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা না করা ।
কেউ কারো মত না । নিজেকে বলুন- আমি আমার মত । এইতো আছি বেশ, দুবেলা দু’মুঠো ভাত খাই, পরনে কাপড় আছে , থাকার মত একটা বিছানা আছে ... আর কী চাই ?
কে বলেছে আমি সুন্দর না ? আমার মা-কে জিজ্ঞেস করে দেখো ! আমিই সবচেয়ে সুন্দর ।
কে বলেছে আমার টাকা নেই ? বাঁচার জন্য যতটুকু প্রয়োজন তা আমার আছে ।
চাকরি হয়নি ? হবে ।
বিসিএস হয়নি...? হবে ।
এফসিপিএস হয়নি ? হবে ।
পকেটে টাকা নেই ? হবে ।

ধরা যাক , আমার কোন বন্ধু দুবছর আগে ডিগ্রী করে ফেললো , দুবছর আগে প্রমোশন পেল... এরপর আমার দুবছর আগেই মারা গেল । কী দাঁড়ালো চূড়ান্ত ফলাফল ?
আই এম ইউনিক, অনন্য । আমি আমার মত । ইউ আর অলসো ইউনিক । তুমি তোমার মত । আমি তোমার মত না, তুমি আমার মত না ।

অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করা বন্ধ করুন । দেখবেন, সুখের সাগরে ভাসছে আপনার টাইটানিক । ডুবে গেলেও সমস্যা নেই , তখনো সুখের সাগরেই হাবুডুবু খাবেন !

মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৪

বেঁচে আছি এই ঢের !

কেমন আছি এই অস্থির সময়ে ? ক্যামন ?
ভালো নাকি মন্দ ? নিশ্চিত করে সেকথা বলতে গেলে
করতে হবে এন্তার গবেষণা । তার চেয়ে শুনে নাও সহজ উত্তর
‘বেঁচে আছি এইতো ঢের !’

আমি চরম হতাশা নিয়ে কোথাও বসে থাকি
সবকিছু বিদঘুটে লাগে
কতদিন যাওয়া হয়না দূরে কোথাও
কতদিন জুড়ায়না চোখ মধুপূর্ণিমায়
ভেজাইনা তপ্ত শরীর শীতল বৃষ্টিতে...

কতদিন হয়না হাঁটা অচেনা সড়কে
গভীর রাতে বন্ধুত্বের ঝালমুড়িতে হয়না মেশানো
ভালোবাসার চানাচুর । মুঠোয় মুঠোয় হয়না খাওয়া জীবনের গল্প
আত্মার আত্মীয়রা একে একে যাচ্ছে হারিয়ে
অলৌকিক সুতোর বাঁধন ডিঙ্গিয়ে- জীবনের প্রয়োজনে
সময়ের দেয়ালের ওপাশে !

এমনি করেই ভোর হয় । চোখ যায় দৈনিক পত্রিকার রঙ্গিন পাতায়
সেখানে লাল লাল ছবি । গতকালও যারা ‘মানুষ’ ছিল
আজ তারা হয়ে গেছে ‘লাশ’ !

আমি কেমন আছি , ক্যামন ?
উত্তর আসে হৃদয়ের বাম প্রকোষ্ঠ হতে
বুকের বামপাশে নিরন্তর ধুকধুক শব্দ জানিয়ে দেয়
‘বেঁচে আছি এইতো ঢের’ !

[বেঁচে আছি এই ঢের/১৪-০১-২০১৪]

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৪

আমার রোগীকে কোন চিকিৎসাই দেয়া হচ্ছে না !

আমার রোগীকে কোন চিকিৎসাই দেয়া হচ্ছে না ...!

একদিন । ডাক্তারের রুমে রোগীর স্বজন এসে বলছেন,
- (কিছুটা ক্ষোভ মেশানো কন্ঠে) ‘হাসপাতালে এতদিন ভর্তি করায় রাখছেন- কোন চিকিৎসা তো দেখতাছি না’ !
- ‘তাই নাকি ? কোন রোগী আপনার ? ’
- ‘অমুক রোগী’ ।
- ‘আচ্ছা দেখি রোগীর ফাইলটা’ ।

দেখলাম, রোগীর কন্ডিশন ভালো । তাকে রাখা হয়েছে আরো পরিক্ষা নিরীক্ষা করে ডায়াগনোসিস ফাইনাল করার জন্য । প্রয়োজন ছিলোনা তাই পারেন্টেরাল ফ্লুইড দেয়া হয় নাই । শরীরে কোন স্যালাইন লাগানো নাই । সব রোগীর তো স্যালাইন লাগেনা, কিন্তু অনেকেরই সাইকোলজি এরকম- স্যালাইন না লাগালে তারা কোন চিকিৎসাই মনে করেন না ।

এই তাহলে সমস্যা ! কী করলে 'চিকিৎসা' হবে আমি জানি । সো ডু ইট !

কথা না বাড়িয়ে দিলুম একটা স্যালাইনের অর্ডার লিখে । দিলে ক্ষতিও নেই । রোগীর লোকজনও খুশি হয়ে চলে গেল ।

লে বাবা, এইবার চিকিৎসা হইছে তো !

রবিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৪

বেকারত্বমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন

চরম বেকারত্ব কখনো ডাক্তারদের স্পর্শ করেনা । ডাক্তারদের জন্য যেমনই হোক , কোথাও না কোথাও আছে দু’মুঠো ভাতের নিশ্চয়তা । কিন্তু অন্য সবাইকেই একটা সময় পুড়তে হয় বেকারত্বের অনলে ।

বেকারত্ব কী ‘ভয়ানক’ তা ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কেউ বুঝবে না । আমার মনে পড়ে, বড় ভাই যখন পড়া শেষ করে চাকরি খুঁজতে লাগলেন তখনো আমি ছোট । দেখতাম- টেবিলের ওপর পড়ে থাকে সাপ্তাহিক ‘চাকরির পত্রিকা’ । খুঁজে খুঁজে দরখাস্ত লেখেন , মাঝে মাঝে সেগুলো পোস্ট অফিসে দিয়ে আসতে হত আমাকে ।

বিষন্ন দিন কাটে তাঁর ।
একটা জলজ্যান্ত যুবক ঘরে বসে আছে - তাঁর নিজস্ব কোন আয় নেই , তাঁর সম্মানজনক কোন জীবিকা নেই, সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে চা খেতে হয় বয়স্ক বাবার টাকায় । ইচ্ছেমত কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়না , মন চাইলেই কিছু করা যায়না ।
কাউকে হয়তো পছন্দ হয়েছে –তার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে । নিজেরও বয়স বেড়ে যাচ্ছে । কাউকে কিছুই বলার নেই ।
রাস্তাঘাটে মুরুব্বীদের বেমক্কা প্রশ্ন- ‘বাবা, কিছু হলো ?’
এই অবস্থা একজন তরতাজা যুবকের জন্য কতটা অসহনীয় – আমি অনুভব করি , কিন্তু পুরোটা হয়তো আমিও বুঝি না । কারণ, আমাকে সেই অবস্থায় পড়তে হয়নি, হবেওনা হয়তো কোনদিন । কিন্তু যাকে ফেস করতে হয়েছে সেই শুধু বোঝে এর যন্ত্রণা ।

এমন সময়ে কেউ কেউ পথ ভুলে যায় । পা বাড়ায় অচেনা বিপদসংকুল নষ্ট পথে । কেউ হয়তো ফিরে আসে , কেউ আর ফেরেনা স্বাভাবিক সুন্দর ছন্দময় জীবনে ।

সমাজে যদি আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই, উন্নতি অগ্রগতি করতে চাই – যুবকদের কর্মক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে । যুবকদের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাতে হবে । যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে । এই একটা কাজ করতে পারলেই পরিবর্তন হয়ে যাবে পুরো দেশ ।
‘সবার জন্য শিক্ষা’র চেয়েও বেশি জরুরী- ‘সবার জন্য কর্মসংস্থান’ ।
আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিলে কী করবেন ? আমি বলবো- সবার জন্য কর্মসংস্থান ।

স্বপ্ন দেখি এমন এক আগামীর, এমন এক বাংলাদেশের - যেখানে কোন বেকার যুবক থাকবে না ।

শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৪

ব্রেইন চাঙ্গা রাখার ১০টি টিপস

১। সকালবেলা নিয়মিত নাস্তা করুনঃ
যারা সকালে নাস্তা করেন না তাদের রক্তে সুগার লেভেল কম থাকে । ফলে ব্রেইনে পুষ্টি সরবরাহ বিঘ্নিত হয় এবং এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস পায় ।

২। অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধ করুনঃ
অতিরিক্ত খেলে ব্রেইনে রক্ত সরবরাহের ধমনী ও শিরা শক্ত হয়ে যায়, ফলে রক্ত সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে । যা ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর ।

৩। ধূমপান করবেন নাঃ
ধূমপানের ফলে ব্রেইন সংকুচিত হয় এবং এর ফলে আলঝেইমারস ডিজিজ হতে পারে ।

৪। চিনিজাতীয় খাবার বেশি খাবেন নাঃ
অত্যধিক চিনিজাতীয় খাবার বা শর্করা খাবার গ্রহণের ফলে প্রোটিন ও অন্যান্য উপাদান ব্রেইনে ঠিকমত পৌঁছে না । এতে ব্রেইনের ডেভেলপমেন্ট বিঘ্নিত হয় ।

৫। বায়ু দূষণ থেকে দূরে থাকুনঃ
দূষিত বাতাস গ্রহণের ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায় । এতে ব্রেইনের কার্যকারিতা হ্রাস পায় ।

৬। পরিমিত ঘুমানঃ
ঘুম ব্রেইনকে রেস্ট দেয় । না ঘুমানো বা ক্রমাগতভাবে খুব কম ঘুমানোর ফলে ব্রেইনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায় ।

৭। মাথাসহ ঢেকে না ঘুমাবেন নাঃ
মাথাসহ ঢেকে ঘুমালে অক্সিজেনের চেয়ে কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘনত্ব বেশি হয়ে যেতে পারে । যা ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর ।

৮। অসুস্থ অবস্থায় কাজ করবেন নাঃ
অসুস্থ অবস্থায় চাপ নিয়ে পড়াশোনা বা অন্য কোন কাজ করলে এতে ব্রেইনের কার্যক্ষমতা কমে যায় ।

৯। চিন্তাভাবনা করুনঃ
চিন্তাভাবনা করলে ব্রেইন সুস্থ থাকে , কার্যকারিতা বাড়ে । চিন্তাহীনতা ব্রেইনকে অকর্মণ্য করে ফেলে ।

১০। বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় অংশ নিনঃ
উন্নত বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ ও আলোচনা ব্রেইনের কার্যকারিতা বাড়ায় ।

বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১৪

আল্লায় তোর কলিজা বড় করুক !

দোয়া করি বাবা, আল্লায় তোর কলিজা বড় করুক !
ভাবছেন, আহা কত সুন্দর দোয়া করলো আমার জন্য ! কলিজা বড় হবে, সাহস বাড়বে, কেউ আর বলতে পারবে না ‘তোর তো মুরগীর কলিজা’ !

কিন্তু না । কলিজা বড় হওয়া মানে আপনার অবস্থা খারাপ । জীবন নিয়া টানাটানি । বাংলায় আমরা যাকে কলিজা বলি, সেটা হলো আসলে Liver. সাহস বেশি হলে লিভার বড় হয়না , লিভার বড় হয় রোগে । আর সাহস ও কলিজা কোনটাই কিন্তু বুকে থাকেনা । সাহস থাকে মাথায় , আর কলিজা থাকে পেটে !
অনেক কারণে লিভার বড় হতে পারে , হতে পারে ক্যান্সারও !

হে হে , বুঝলেন অবস্থা ! এইবার একটা চিকন বুদ্ধি দেই – কারো সাথে যদি আপনার ঝগড়া বাঁধে, আপনি তাকে গালি না দিয়া তার জন্য দোয়া করেন – ‘আল্লায় তোর কলিজা বড় করুক’ !
নিজেও ভালো থাকলেন, তারও বারোটা বাজাইলেন...আর... আর...
‘ডাক্তারেরও রোগী বাড়াইলেন , মন্দ কী... !!!’

বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৪

সংখ্যালঘু নয় - মানুষ

সংখ্যাগুরু সংখ্যালঘু হিসেবে আমাদের ভাগ করবেন নাসবাইকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করুন। একজন হিন্দু বা বৌদ্ধকে যখন ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটি বলা হয় তখন তার মনের অবস্থা কী দাঁড়ায় কখনো অনুভব করতে পেরেছেন? ঐ শব্দটার ভেতরেই একটা দুর্বলতা প্রকাশ পায়। এখানে কেউ সংখ্যালঘু নয়, সবাই মানুষ। সবাই বাংলাদেশি। এটাই আমাদের পরিচয়। যেকোন মানুষের ওপর অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাই। সে অন্যায় মুসলমানে করুক বা মুসলমানদের ওপর হোক, হিন্দু করুক বা হিন্দুর ওপর হোক, বিএনপি-জামায়াত করুক বা বিএনপি-জামায়াতের ওপর হোক, আওয়ামী লীগ-কম্যুনিস্ট করুক বা তাদের ওপর হোক, নাস্তিক করুক বা নাস্তিকের ওপর হোক, হেফাজতে ইসলাম করুক বা হেফাজতের ওপর হোক, বাংলাদেশি করুক বা ইন্ডিয়ান করুক, যেই করুকনা কেন-অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই হবে।


কোন ক্ষেত্রে চুপ থাকবো, কোন ক্ষেত্রে গলা ফাটাবো এরকম হলে অন্যায়-অবিচারের অবসান হবে না। 

মানিক বন্দোপাধ্যায়ের ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে ভিখারিনী পাঁচী তার পায়ের ঘা সারানোর জন্য কোন চিকিৎসা করতে ভিখুর প্রস্তাবে রাজী হয়না। ওটা তার রেখে দেয়া দরকার ছিল ভিক্ষার সুবিধার জন্য। 

বাংলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধদের ওপর হামলার এই দগদগে ঘা-কে স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক দলগুলো রেখে দিয়েছে , মাঝে মাঝে যেন প্রয়োজনমত ব্যবহার করা যায়! হিন্দু বৌদ্ধদের ওপর হামলা একারণে হয়না যে তারা অমুসলিম। এটা হচ্ছে সম্পদের লোভে, রাজনৈতিক কারণে। সেই কক্সবাজারের রামুর ঘটনা থেকে সব জায়গায় এটাই দেখছি।

অনেক জায়গায় হাতে নাতে ধরা পড়েছে হামলাকারী। কেন তাদের শাস্তি হচ্ছেনা? ব্লেম গেম না খেলে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে গ্রেপ্তার করে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেয়ার দাবি জানাই

মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৪

কাইল্যা ডাক্তারে বুকে চাপ দিয়া নিঃশ্বাস বাইর কইরা দিছে...!!



 শিশু ওয়ার্ডে মুমূর্ষু অবস্থায় একটা বাচ্চাকে নিয়ে এসেছে । Heart Rate খুবই কম, Slow irregular respiration ওয়ার্ডে তখন দুইজন ডাক্তার ছিলেন ডিউটিতেএকজন কালো, একজন ফর্সা । অবস্থা দেখে তাড়াতাড়ি CPR শুরু করলেন ডাক্তাররা কালোজন Chest Compression দিচ্ছেন আর ফর্সাজন আম্বু ব্যাগ চেপে কৃত্রিম শ্বাস দিচ্ছেন ।
[ নন-মেডিকেল ভাইদের জ্ঞাতার্থে- CPR হলো কৃত্রিম শ্বাস ও বুকে চাপ দেয়ার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসকে সচল করার একটি প্রক্রিয়া ] 
রেসপিরেটরি সেন্টার স্টিমুলেটিং ওষুধও দেয়া হলো এর মধ্যেই । কিন্তু না , শেষ পর্যন্ত বাচ্চাটাকে বাঁচানো গেল না ।  

কিছুক্ষণ পরেই বাইরে চিৎকার চেচামেচি । ওয়ার্ড বয় এসে বললো, স্যার আপনারা লুকান । আমি আপনাদের রুমের বাইরে তালা দিয়া দিচ্ছি । পেশেন্ট পার্টি অনেক লোকজন নিয়া আসছে
ডাক্তার অবাক ।
-      কেন ? আমরা তো অনেক চেষ্টা করলাম বাচ্চাকে বাঁচানোর জন্য ।
-      স্যার , আপনারা যে CPR দিছেন এইটা ওদের একজনে দেখছে । সে গিয়া তার লোকজনকে বলছে – কাইল্লা ডাক্তারে বাচ্চার বুকে চাপ দিয়া নিঃশ্বাস বাইর কইরা দিছে , আর ফর্সা বেডায় বাচ্চার মুখে বেলুন লাগায়া সেই নিঃশ্বাস শুষে নিছে... আপনাদের সামনে পাইলে খবর আছে... !

হায়রে ডাক্তারের পোড়া কপাল... পুরাই গোপাল !