যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে আপনার মতামত কী ?
দেখুন , এটা হবে যুদ্ধাপরাধ বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নয় । কারণ , এখন পর্যন্ত কেউই যুদ্ধাপরাধী হিসেবে প্রমাণিত হননি । এছাড়া সরকার নিজেই এটাকে যুদ্ধাপরাধ বলছে না , বলছে ‘মানবতা বিরোধী অপরাধের’ বিচার ।
আইনের সংজ্ঞানুযায়ী, যুদ্ধের সময় পরস্পর যুদ্ধরত সামরিক বাহিনীর লোকেরা পরস্পরকে আঘাত করবে, হত্যা করবে এটা ঠিক আছে। যুদ্ধ শেষে বিজয়ী পক্ষ তাদের হাতে বন্দী পরাজিত সৈন্যদের সাথে তাদের বিধি অনুযায়ী আচরণ করবে।
যুদ্ধাপরাধ হলো, যুদ্ধের সময় বেসামরিক লোককে হত্যা, ধর্ষণ,সম্পদ লুন্ঠন, অগ্নি সংযোগ এগুলো। এই কাজগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে জঘণ্য অপরাধ। ইসলামের যুদ্ধনীতিতে বেসামরিক নিরীহ মানুষ, তাদের ধন-সম্পদ, গাছপালা এগুলোর ক্ষতি করা নিষিদ্ধ। সুতরাং বেসামরিক ও নিরস্ত্র লোককে হত্যা, ধর্ষণ, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ যেই করুক তার বিচার চাওয়া অবশ্যই একজন মু’মিনের বৈশিষ্ট্য।
যারাই এ ধরনের কাজে জড়িত ছিল, আছে, থাকবে তাদের সবার বিচার চাই। সে রাজাকার হোক কি মুক্তিযোদ্ধা, জামায়াত, বিএনপি, আওয়ামী লীগ যেই হোক।
এই বিচার হওয়াতে সময়ের কোন সীমা নেই। ৪০ বছর পরে হোক আর ৫০ বছর পরে হোক এটা কোন বিষয় না।
তবে বিচার হতে হবে সদুদ্দেশ্যে, নিরপেক্ষ। হতে হবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে।
ইসলামে বিচার নীতিতে একটা বিষয় খুব গুরুত্ব দেয়া হয় – প্রমাণের অভাবে হাজার অপরাধী ক্ষমা পেয়ে যায় যাক, কিন্তু নিরপরাধ একজনও যেন শাস্তি না পায়।
কারণ, মু’মিনরা আখিরাতে অবিচল বিশ্বাস রাখে। এই দুনিয়ায় যদি কোন অপরাধীর শাস্তি না হয়, আখিরাতে অবশ্যই হবে। আল্লাহ তায়ালার নজর থেকে কেউ পালাতে পারে না।
আরেকটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, বিচার হতে হবে অপরাধ সংঘটনের সময় যে আইন বিদ্যমান ছিল তার ভিত্তিতে। পুরনো অপরাধের বিচার নতুন আইনে হতে পারবে না।
মদ নিষিদ্ধের বিধান আসার আগে কেউ মদ পান করে থাকলে তাকে বেত্রাঘাত করা যাবে না।
বর্তমানে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার অনেক বিষয় ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।
প্রথমত, এই বিচারের জন্য নতুন করে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এটা ন্যায়বিচারের পরিপন্থি। যখন যেমন প্রয়োজন তেমনভাবে আইন সংশোধনও করা হচ্ছে । তাহলে তো বিচার হয় না।
দ্বিতীয়ত, বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে এমন ব্যক্তিকে যিনি আগে থেকেই আসামীদের শাস্তি প্রদানের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। তিনি অনেক আগেই ঘাদানিকের পক্ষ হতে আসামীদের শাস্তি দিয়ে বিচারের রায় ঘোষণা করেছিলেন।
তৃতীয়ত, বিচারকরা আবেগের বশে বলেই ফেলছেন যে তাঁরা ন্যায়বিচার করবেন না। এরকম ব্যবস্থায় তো ন্যায়বিচার হবে না।
চতুর্থত, নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাদেরকে ক্ষমতাসীন দল তাদের জন্য হুমকি মনে করে। যেমন মাওলানা সাঈদীর বিপক্ষের সাক্ষীরা বারবার “মোসলেম মাওলানা” নামক এক ব্যক্তির বিভিন্ন অপরাধের ব্যাপারে স্বপ্রণোদিতভাবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। কারণ তিনি এখন পিরোজপুর ওলামা লীগের নেতা। এ থেকে মনে হচ্ছে বিচার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে।
পঞ্চমত, সাক্ষী হিসেবে এমন সব লোককে নিয়ে আসা হয়েছে যারা সবাই চুরি, জালিয়াতি, নারী কেলেংকারি, খুন ইত্যাদি অপরাধে আদালতে সাজাপ্রাপ্ত। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যারা পরিচয় ও সাক্ষ্য দিয়েছে তাদের সবার মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর এবং কারো কারো বিচার শুরুর পরে ইস্যু করা। অনেক সাক্ষীকে হাজির করা হয়নি এই বলে যে তারা নাকি অসুস্থ , মানসিক ভারসাম্যহীন , কেউবা নিখোঁজ । অথচ তারা টিভিতে সাক্ষাৎকার দিচ্ছে যেখানে দেখা যায় ঐ সাক্ষীরা সম্পুর্ণ সুস্থ অবস্থায় , বহাল তবিয়তে নিজ বাড়িতেই আছেন । জাফর ইকবাল , শাহরিয়ার কবির যারা বিচারের দাবিতে পত্রপত্রিকায় লিখে এবং কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন – তারা সাক্ষী তালিকায় থাকলেও সাক্ষ্য দিতে আসেননি ।
এছাড়াও আরো অনেক অসংগতি দেখা যাচ্ছে যা আমাদের হতাশ করে। ন্যায়বিচারের প্রত্যাশাকে করে সুদূর পরাহত।
আরো একটা বিষয় আমাকে হতাশ করছে – বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার করছে, এজন্য বিরোধীদলীয় ও ইসলামী দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করছে। কিন্তু একই সময়ে খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মাফ করে দিচ্ছে। যুদ্ধের সময়কার উত্তাল ও বিশৃঙ্খল অবস্থায় সংঘটিত অপরাধের তদন্ত করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে সংঘটিত গুম, খুনের ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
একজন বিশ্বাসী মুসলিম হিসেবে আমি সকল সময়ে সংঘটিত সকল অপরাধের বিচার চাই। কোন দল-মত-ধর্ম ভিত্তিক বিভাজন চাই না। বিদ্বেষ চাই না ।
কিন্তু যদি পক্ষপাতমূলক বিচারের মাধ্যমে প্রহসন করা হয়, ন্যায়বিচার না করে নিরীহ মানুষকে শাস্তি ও কষ্ট দেয়া হয় ; সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত করা হয় – তাহলে তাও মেনে নেবো না ।
এমন অবস্থায় একজন মুমিন মুসলিমের দায়িত্ব হয়ে পড়ে মজলুম মানুষের পক্ষে দাড়ানো ।
এবং তাতে আমিও পিছপা থাকবোনা ইনশাআল্লাহ ।
দেখুন , এটা হবে যুদ্ধাপরাধ বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নয় । কারণ , এখন পর্যন্ত কেউই যুদ্ধাপরাধী হিসেবে প্রমাণিত হননি । এছাড়া সরকার নিজেই এটাকে যুদ্ধাপরাধ বলছে না , বলছে ‘মানবতা বিরোধী অপরাধের’ বিচার ।
আইনের সংজ্ঞানুযায়ী, যুদ্ধের সময় পরস্পর যুদ্ধরত সামরিক বাহিনীর লোকেরা পরস্পরকে আঘাত করবে, হত্যা করবে এটা ঠিক আছে। যুদ্ধ শেষে বিজয়ী পক্ষ তাদের হাতে বন্দী পরাজিত সৈন্যদের সাথে তাদের বিধি অনুযায়ী আচরণ করবে।
যুদ্ধাপরাধ হলো, যুদ্ধের সময় বেসামরিক লোককে হত্যা, ধর্ষণ,সম্পদ লুন্ঠন, অগ্নি সংযোগ এগুলো। এই কাজগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে জঘণ্য অপরাধ। ইসলামের যুদ্ধনীতিতে বেসামরিক নিরীহ মানুষ, তাদের ধন-সম্পদ, গাছপালা এগুলোর ক্ষতি করা নিষিদ্ধ। সুতরাং বেসামরিক ও নিরস্ত্র লোককে হত্যা, ধর্ষণ, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ যেই করুক তার বিচার চাওয়া অবশ্যই একজন মু’মিনের বৈশিষ্ট্য।
যারাই এ ধরনের কাজে জড়িত ছিল, আছে, থাকবে তাদের সবার বিচার চাই। সে রাজাকার হোক কি মুক্তিযোদ্ধা, জামায়াত, বিএনপি, আওয়ামী লীগ যেই হোক।
এই বিচার হওয়াতে সময়ের কোন সীমা নেই। ৪০ বছর পরে হোক আর ৫০ বছর পরে হোক এটা কোন বিষয় না।
তবে বিচার হতে হবে সদুদ্দেশ্যে, নিরপেক্ষ। হতে হবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে।
ইসলামে বিচার নীতিতে একটা বিষয় খুব গুরুত্ব দেয়া হয় – প্রমাণের অভাবে হাজার অপরাধী ক্ষমা পেয়ে যায় যাক, কিন্তু নিরপরাধ একজনও যেন শাস্তি না পায়।
কারণ, মু’মিনরা আখিরাতে অবিচল বিশ্বাস রাখে। এই দুনিয়ায় যদি কোন অপরাধীর শাস্তি না হয়, আখিরাতে অবশ্যই হবে। আল্লাহ তায়ালার নজর থেকে কেউ পালাতে পারে না।
আরেকটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, বিচার হতে হবে অপরাধ সংঘটনের সময় যে আইন বিদ্যমান ছিল তার ভিত্তিতে। পুরনো অপরাধের বিচার নতুন আইনে হতে পারবে না।
মদ নিষিদ্ধের বিধান আসার আগে কেউ মদ পান করে থাকলে তাকে বেত্রাঘাত করা যাবে না।
বর্তমানে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার অনেক বিষয় ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।
প্রথমত, এই বিচারের জন্য নতুন করে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এটা ন্যায়বিচারের পরিপন্থি। যখন যেমন প্রয়োজন তেমনভাবে আইন সংশোধনও করা হচ্ছে । তাহলে তো বিচার হয় না।
দ্বিতীয়ত, বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে এমন ব্যক্তিকে যিনি আগে থেকেই আসামীদের শাস্তি প্রদানের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। তিনি অনেক আগেই ঘাদানিকের পক্ষ হতে আসামীদের শাস্তি দিয়ে বিচারের রায় ঘোষণা করেছিলেন।
তৃতীয়ত, বিচারকরা আবেগের বশে বলেই ফেলছেন যে তাঁরা ন্যায়বিচার করবেন না। এরকম ব্যবস্থায় তো ন্যায়বিচার হবে না।
চতুর্থত, নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাদেরকে ক্ষমতাসীন দল তাদের জন্য হুমকি মনে করে। যেমন মাওলানা সাঈদীর বিপক্ষের সাক্ষীরা বারবার “মোসলেম মাওলানা” নামক এক ব্যক্তির বিভিন্ন অপরাধের ব্যাপারে স্বপ্রণোদিতভাবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। কারণ তিনি এখন পিরোজপুর ওলামা লীগের নেতা। এ থেকে মনে হচ্ছে বিচার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে।
পঞ্চমত, সাক্ষী হিসেবে এমন সব লোককে নিয়ে আসা হয়েছে যারা সবাই চুরি, জালিয়াতি, নারী কেলেংকারি, খুন ইত্যাদি অপরাধে আদালতে সাজাপ্রাপ্ত। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যারা পরিচয় ও সাক্ষ্য দিয়েছে তাদের সবার মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর এবং কারো কারো বিচার শুরুর পরে ইস্যু করা। অনেক সাক্ষীকে হাজির করা হয়নি এই বলে যে তারা নাকি অসুস্থ , মানসিক ভারসাম্যহীন , কেউবা নিখোঁজ । অথচ তারা টিভিতে সাক্ষাৎকার দিচ্ছে যেখানে দেখা যায় ঐ সাক্ষীরা সম্পুর্ণ সুস্থ অবস্থায় , বহাল তবিয়তে নিজ বাড়িতেই আছেন । জাফর ইকবাল , শাহরিয়ার কবির যারা বিচারের দাবিতে পত্রপত্রিকায় লিখে এবং কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন – তারা সাক্ষী তালিকায় থাকলেও সাক্ষ্য দিতে আসেননি ।
এছাড়াও আরো অনেক অসংগতি দেখা যাচ্ছে যা আমাদের হতাশ করে। ন্যায়বিচারের প্রত্যাশাকে করে সুদূর পরাহত।
আরো একটা বিষয় আমাকে হতাশ করছে – বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার করছে, এজন্য বিরোধীদলীয় ও ইসলামী দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করছে। কিন্তু একই সময়ে খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মাফ করে দিচ্ছে। যুদ্ধের সময়কার উত্তাল ও বিশৃঙ্খল অবস্থায় সংঘটিত অপরাধের তদন্ত করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে সংঘটিত গুম, খুনের ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
একজন বিশ্বাসী মুসলিম হিসেবে আমি সকল সময়ে সংঘটিত সকল অপরাধের বিচার চাই। কোন দল-মত-ধর্ম ভিত্তিক বিভাজন চাই না। বিদ্বেষ চাই না ।
কিন্তু যদি পক্ষপাতমূলক বিচারের মাধ্যমে প্রহসন করা হয়, ন্যায়বিচার না করে নিরীহ মানুষকে শাস্তি ও কষ্ট দেয়া হয় ; সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত করা হয় – তাহলে তাও মেনে নেবো না ।
এমন অবস্থায় একজন মুমিন মুসলিমের দায়িত্ব হয়ে পড়ে মজলুম মানুষের পক্ষে দাড়ানো ।
এবং তাতে আমিও পিছপা থাকবোনা ইনশাআল্লাহ ।
রাসূল (সা) বলেছেনঃ “যে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে কাউকে ভালোবাসলো এবং আল্লাহর (সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে কাউকে ঘৃণা করলো, আল্লাহর (সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে দান করলো এবং আল্লাহর (সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে দান করা থেকে বিরত থাকলো, সে যেন তার ঈমানকে পূর্ণ করে নিল।” (আবু দাউদ)শুক্রবার, মে 25, 2012