এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬

শাপে বর !!

সকালবেলায় ব্যাগ এন্ড ব্যাগেজ নিয়ে বাড়িতে গিয়ে হাজির আশরাফ । হঠাত আশরাফের এই গৃহ প্রত্যাগমনে তাহার মাতা খুশি হইলেও পিতা খুশি হইতে পারিলেন না । তিনি গম্ভীর হইয়া শুধাইলেনঃ
-কিরে, এইভাবে হঠাত চইলা আইলি যে? কয়দিন পর না তোর পরীক্ষা?
-বাড়িওয়ালা এক সপ্তাহের মধ্যে বাসা ছাড়ার নোটিশ দিয়েছিল । আর নতুন কোন বাসাও ভাড়া পাই না । এখন কেউ 'ব্যাচেলর' রাখতে চায় না ।
-তাইলে এখন কী করবি?
-আমি আর কী করবো । তোমরাই চিন্তা কইরা দেখ কী করা যায় :) :) :)

পার্থক্য

ডাঃ রফিকের হাসপাতাল থেকে বের হবার কথা বেলা আড়াইটায়। এরপর তাঁকে ব্যাংকে যেতে হবে। জরুরী প্রয়োজনে টাকা ট্রান্সফার করতে হবে।
কিন্তু ঠিক বের হবার সময়টাতেই একসাথে তিনজন রোগী হাজির। এরমধ্যে দুজনের অবস্থা খারাপ। অতএব তাঁর আর বের হওয়া হলো না। যখন বের হলেন তখন বেলা সাড়ে তিনটা। ব্যাংকে গিয়ে পৌঁছলেন চারটার পর।
তাঁকে বলা হলোঃ স্যরি, আজকের লেনদেন চারটায় বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আপনার ট্রানজেকশনটি সম্ভব নয়। কাল একবার আসুন।
২।
কিছুদিন আগের কথা। ডাঃ রফিক গিয়েছিলেন এক সরকারি অফিসে, তাঁর এক বন্ধুর কাছে। কথা ছিল দুপুরে একসাথে লাঞ্চ করবেন। যখনই লাঞ্চ টাইম হলো, বন্ধুবর তার সামনে বসে থাকা ব্যক্তিকে বসে থাকতে বলে সটান উঠে পড়লেন। টেবিলের ওপর ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় পড়ে থাকলো সকল কাগজপত্র।

শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০১৬

কান্ডজ্ঞান !!

সরকারি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ। খুব মনোযোগ দিয়ে ওয়ার্ডে তার দায়িত্বভুক্ত রোগী দেখছেন ডাঃ করিম। আজকের দিনটা অনেক ব্যস্ততায় কাটবে। কারণ, অনেক রোগী ভর্তি হয়েছেন গতকাল।
সবার হিস্ট্রি নেয়া, ফিজিকাল এগজামিনেশান করা, ইনভেস্টিগাশান ও ট্রিটমেন্ট প্ল্যান করা, রোগীকে বুঝিয়ে দেয়া- সব মিলে বেশ সময় সাপেক্ষ কাজ। আজকে পা ব্যথা হয়ে যাবে। একঘন্টা আগেই শুরু করেছেন, কিন্তু এখনো অর্ধেক রোগী দেখা শেষ হয় নাই।
৩৯ নম্বর বেডের রোগীর হিস্ট্রি নেয়া শেষে চেস্ট অস্কালটেট করছিলেন ডাঃ করিম। কান থেকে স্টেথো নামিয়েই দেখলেন, একজন ভদ্রলোক পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।
- এক্সকিউজ মি ডক্টর, একটা প্রশ্ন করতে পারি? ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন।
-হ্যা, অবশ্যই। বলুন, কী জানতে চান?
ডাঃ করিম ভাবলেন, নিশ্চয়ই ইনি এই রোগীর উদ্বিগ্ন স্বজন। হয়তো রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান।
তারপর যে প্রশ্নটা তাঁকে করা হলো এর জন্য তিনি মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না। তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন। তিনি 'থ' হয়ে গেলেন।
-ডক্টর, এখানে টয়লেট টা ঠিক কোন দিকে বলতে পারেন?
প্রশ্ন শুনে মাথা ভোঁ করে উঠলো ডাঃ করিমের। অনেক কষ্টে মেজাজ সামলে তিনি উত্তর দিলেনঃ
-অহ! টয়লেট! সেতো আপনার মাথায়!!

সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬

প্রসঙ্গ মৃত্যুদণ্ড

"আমি মৃত্যুদন্ডের পক্ষে না", এটা কোন যৌক্তিক কথা হতে পারে না। আপনার মৃত্যুদন্ডের পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার কিছু নেই। আপনাকে ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। কেউ যদি অন্য কোন নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে, এটা যদি নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয়, তাহলে আপনি কেন তার মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে থাকবেন না?

আপনি যদি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত খুনি অপরাধীর মৃত্যুদন্ড না দেন, তাহলে তো খুন হওয়া ব্যক্তির কোন স্বজন প্রতিশোধপরায়ন হয়ে নিজেই খুন করতে উৎসাহিত হতে পারে। এভাবে সমাজে খুনোখুনি একটা মামুলি বিষয়ে পরিণত হতে পারে।

মূল কথা হলো, আপনাকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আইনের আপ্তবাক্য স্মরণ রাখতে হবে- হাজার অপরাধী ছাড়া পেয়ে যাক, কিন্তু একজনও নিরপরাধ ব্যক্তি যেন কষ্ট না পায়। বেনেফিট অব ডাউট সবসময় অভিযুক্তের পক্ষে থাকতে হবে।


তথ্য যুক্তি সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যদি কোন ব্যক্তির খুনী হওয়া নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয়, তাহলে তার শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়াই মানবতার দাবী। ন্যায়বিচার ছাড়া কাউকে যদি এক মিনিটও শাস্তি দেয়া হয় সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়। কাউকে যদি ভুল বিচারে যাবজ্জীবন সাজা দেন, এই বেঁচে থাকায় তার কী লাভ?


সাজার পরিমাণ বা রুপ বড় কথা নয়, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই বড় কথা।

সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬

অস্থির সময়

এই অস্থির সময়ের কোপানলে
হারিয়ে যাচ্ছে সব সুকুমার বৃত্তি। কোমল আবেগ।
সাহিত্যে এখন শুধুই দ্রোহের কথা উঠে আসে;
মনে হয়-
প্রেম নয়, এখন শুধুই যেন দ্রোহের সময়।।

এখন সময় শুধুই প্রতিবাদ প্রতিরোধ আর
ট্যাংকের সামনে এসে বুক তুলে দাঁড়াবার।
এই অস্থির সময়ের কোপানলে
হারিয়ে যাচ্ছে মানবতা। মানবিক অনুভূতি।
মনে হয়-
আমিও হচ্ছি অমানুষ! আমারও চোখের তারায়
ফুলের বদলে এখন ভেসে ওঠে নিহত শিশুর লাশ
পাখির বদলে দেখি বোমারু বিমান
আমারও কন্ঠে উঠে আসে
কবিতার বদলে সব দৃপ্ত শ্লোগান। মনে হয়ঃ
প্রেম নয়;
এখন শুধুই যেন দ্রোহের সময়।।
#অস্থির_সময়

রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬

এভাবেই সময় চলে যায় !

নীলক্ষেত থেকে কিনেছিলাম নির্মলেন্দু গুণের "না প্রেমিক না বিপ্লবী"। পুরনো বই। মলাট উল্টাতেই চোখে পড়লো মেয়েলি হাতের লেখা জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

জীর্ণ যাহা কিছু, যাহা কিছু ক্ষীণ
জীবনের মাঝে হোক তা বিলীন
ধুয়ে যাক যত পুরনো মলিন
নব আলোকের স্নানে....
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

মালেকার জন্মদিনে-
মিনা
০৪-০৮-৭২

বইটা কেনা হয়েছিল উদয়ন গ্রন্থ নিলয়, রাজশাহী থেকে। কে জানে আজ উদয়ন গ্রন্থ নিলয় আছে কিনা! মালেকা কিংবা মিনা কেউ বেঁচে আছেন কিনা। কিন্তু বইটা আছে আমার হাতে।
এভাবেই সময় চলে যায়। এভাবেই জীবন চলে যায়।

সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬

বৃষ্টি নেমেছে আজ

টাপুর টুপুর নয়, বৃষ্টি নেমেছে আজ মুষলধারায়।
হৃদয়হীন খুনিও যেন বলতে বাধ্য হবে -
ওয়াও! ইট ইজ রেইনিং ক্যাটস এন ডগজ!
বৃষ্টি নেমেছে আজ মুষলধারায়;
ঝিরি ঝিরি নয়, পারফেক্ট থই থই বৃষ্টি।
তৃষিত কাকের মত ভিজছে দেবদারু গাছের সারি,
বাঁশবন কাঁশবন। এমন প্রেমের জলে -
কতদিন সিক্ত হয়নি নারিকেল শাখা! মাঠের দূর্বাঘাস
আর আমারও শরীর। এমন ঘন মেঘ কতদিন দেখেনি আকাশ,
ডোবার ব্যাঙেরা। এবং আমার চোখ।

****
যন্ত্রযানের জানালায় মুখ রেখে
নাগরিক জীবনকে শাপ শাপান্ত করছে এখন
বৃষ্টিবঞ্চিত এক তৃষিত হৃদয়।
#বৃষ্টি_নেমেছে_আজ