এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

উদ্বেগ

'এরপর কী?'
এই এক প্রশ্নের ঘূর্ণিপাকেই
কেটে যায় আমাদের
ক্ষণিক এই মানব জীবন ।
সব সুখ, সব প্রেম, সব ঘটনার শেষে
একটাই প্রশ্ন যেন তাড়িয়ে বেড়ায়-
'এরপর কী?'

হাঁটতে হাঁটতে যদি ফুরোয় সব পথ
ব্ল্যাকহোল হতে যদি ফিরে আসে দূরবীন দৃষ্টি
ফুরোয় যখন দিন গোধূলী আলোয়
উত্থান পতন আর নাটকীয়তায়
তখনও মনের মাঝে
প্রশ্নটা ফিরে আসে
'এরপর কী?'
#উদ্বেগ

সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

রুক্ষ ফাল্গুনে

এই রুক্ষ ফাল্গুনে,
মনে আসে সূক্ষ্ণ আবেগ ! পাতাঝরা গাছে সবুজ পাতার মত,
হৃদয়ে ফিরে আসে- অচিন বেদনা।
প্রশ্নের ভীড় জমে বিক্ষিপ্ত অন্তরে -
কতটা কষ্ট জমা হলো বিগত বছরে? কতটুকু ভালবাসা
পাওনা রয়ে গেল পৃথিবীর কাছে?
কত ফাল্গুনের তাপ সয়ে গেলে পরে
শেষ হবে আগুনের দিন?
কতটুকু মায়া জমালে প্রতিদিন-
কত ফাল্গুনে শোধ হবে হৃদয়ের
সবটুকু ঋণ?

শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

কে কারে মনে রাখে ?

কেউ যদি কখনো আমায় ভুলে যেতে চাও
নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে ভুলে যেও।
আমি মহামানব নই, আমি কাজী নজরুল নই,
আমি কখনো কবিতা লিখিনি
কখনো করিনি গান, করিনি উচ্চারণঃ চিরতরে
চলে যাবো দূরে; তবু
আমারে দেবোনা ভুলিতে।
.....
বলো,
কে কারে মনে রাখে, স্বার্থের পৃথিবীতে?
মাটিতে মিশে গেলে মাটির শরীর,
কার কিবা আসে যায়-
এইসব মনে রাখারাখিতে?

মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

পাড়ি দিতে হবে দীর্ঘপথ

পাড়ি দিতে হবে দীর্ঘপথ। অথচ আমি কিনা
কয়েক কদমেই ক্লান্ত হয়ে গেছি!
পথের হাওয়ায় উড়ে আসছে ধুলোর প্রবাহ; পাখিদের কাকলিতে
শোনা যায় বালুঝড়ের পুর্বাভাস। তবে কি-
আমাকে দাঁড়াতে হবে এখানেই? মুলতবি করতে হবে
আগামীর পদযাত্রা?
.....
গভীর হচ্ছে রাত, রাতের অন্ধকার
বয়ে যাচ্ছে অবিরাম জীবনের স্রোত; সমাপ্তির পানে।
কতকাল দাঁড়াবো আমি এখানে?
কতযুগ কত শতাব্দী দাঁড়ালে তবে
থেমে যাবে ঝড় ঝঞ্ঝা? আমি তো দাঁড়াতেই পারি,
কিন্তু
কে থামাবে সময়ের গতিধারা?
কে থামিয়ে রাখবে সমাপ্তির পানে
বয়ে চলা জীবনের স্রোত?

সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

কৃতজ্ঞতা

এই ভিড়ের মধ্যেও মেয়েটা এক প্রকার জোর করেই বাসে উঠে পড়লো । নারীদের জন্য নির্ধারিত কোন সিট খালি ছিল না । দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই । কিন্তু তার সম্ভবত খুব জরুরি কোন কাজ আছে, যার কাছে এইসব ভিড়ভাট্টা কোন ব্যাপার না ।
সারাদিন নানান কাজে দৌড়াদৌড়ি করে বেশ কাহিল হয়ে পড়েছিল মুনির । বাসে উঠে কোনমতে একটা সিট পাওয়ায় আরামে চোখ বুজে আসছিল তার । কিন্তু একটা মেয়ে মানুষকে এই ধাক্কাধাক্কির মধ্যে দাঁড় করিয়ে রেখে আর বসে থাকা সম্ভব নয় । সুতরাং সিটটা ছাড়তেই হলো তাকে । ‘এই যে আপু এখানে বসেন’ বলে উঠে দাঁড়ালো সে ।
মেয়েটাও কিছু না বলে টুপ করে বসে পড়লো ।

পেছন থেকে অবশ্য কেউ একজন মন্তব্য ছুঁড়তে ছাড়লো না । ‘বইবো ক্যান? মাইয়ারা না সমানাধিকার চায়? অরাও দাড়ায়া যাইবো, এইডাই সমানাধিকার’!
ভাই ভিত্রে যান, পেছনে খালি আছে । কন্ডাকটরের ক্রমাগত আহ্বান আর মানুষের ঠেলাঠেলিতে ধীরে ধীরে বাসের একেবারে পেছনে ঠাঁই হয়েছিল মুনিরের । সারাটা পথ দাঁড়িয়েই ছিল । তার ছেড়ে দেওয়া সিটটাও আর পুনর্দখল করার সুযোগ হয়নি । কখন যে ওটা খালি হয়েছিল সে খেয়ালও রাখা হয়নি ।
বাসায় ফিরেই ব্যাগসহ বিছানায় লুটিয়ে পড়লো মুনির ।
মুনিরের মত একজন পুরোদস্তুর ব্যাচেলরের জীবনে এরকম সময়ে ফেসবুক একটা গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী । পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফেসবুকে লগইন করলো সে । আনমনে হোমপেজ স্ক্রল করতে করতে একজনের শেয়ার করা একটা পোস্টে চোখ আটকে গেল তার । নামটা অপরিচিত, আগে কখনো চোখে পড়েছে বলে মনে হয় না । তবুও ক্লিক করে পড়তে লাগলো।
''নীল নয়না
1 hour ago
‘হঠাৎ খবর পেলাম দাদুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । দাদু স্ট্রোক করেছেন । কোনকিছু মাথায় আসছিল না । রাস্তায় নেমে দুএকটা সিএনজি ডাকলাম, কিন্তু কেউ যাবে না । সব নবাবের পুত ।
প্রথম বাসটাতেই উঠে পড়লাম । খুব ভিড় ছিল, কিন্তু এছাড়া আর উপায় কী? কেউ একজন আমাকে তার সিটটা ছেড়ে দিল । অজানা সেই মানুষটাকে একটা ধন্যবাদও দেয়া হয়নি । হয়তো কোনদিন হবেও না । লোকটা হয়তো আমাকে অকৃতজ্ঞ ভাবতে পারে । আমার নিজেরও কেমন অকৃতজ্ঞ বোধ হচ্ছে । ফেসবুকে একটা ধন্যবাদ লিখে দিলে কি কিছুটা হালকা বোধ হবে? হতে পারে। তখনই কৃতজ্ঞতা না জানানোটা ভুল হয়ে গেছে । ভালো কাজের অনুপ্রেরণা জোগানোর জন্য মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়’।
Odvut prithibi and 11 others like this''