এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৫

শহুরে জীবনে পহেলা বৈশাখ

আপনি যদি চৈত্র মাসের কোন একদিন কাউকে জিজ্ঞেস করেন, আজ বাংলা কত তারিখ? নিশ্চিত বলতে পারবে না । এমনকি বৈশাখের শেষদিকে যদি জিজ্ঞেস করেন আজ বৈশাখের কত তারিখ তাও বলতে পারবে না । আমরা এখন পহেলা বৈশাখ হিসাব করি বাংলা মাস দিয়ে নয়, চৌদ্দই এপ্রিল দিয়ে । পহেলা বৈশাখ এখন আর হালখাতা(দোকানের নতুন খাতা) করা হয়না । সেটা জানুয়ারির এক তারিখেই করা হয় । গ্রামের চাষীরা ফসলের প্রয়োজনে বাংলা মাসের হিসাব এখনো কদাচিত্‍ রাখেন বটে । কিন্তু পহেলা বৈশাখে তাদের খাবারের মেনু থাকে আগের মতই। আলুভর্তা শুটকি ভর্তা শাক সবজি ছোটমাছ । শহুরে জীবনে পহেলা বৈশাখ এখন এক কৃত্রিম আরোপিত উত্‍সবের উপলক্ষ ছাড়া আর কিছু নয় । শহরের এইসব শোভাযাত্রা ইলিশ খাওয়ায় তাই কোন প্রাণ নেই । এইসব আনন্দ আসলে অকৃত্রিম নয়, অভিনয় মাত্র ।

শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৫

আগামীর বাংলাদেশ‬ !

(প্রেক্ষাপটঃ পহেলা বৈশাখে ঢাবিতে নারীদের শ্লীলতাহানি) 
.
একদিন সমগ্র বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাবে 'মানুষ'  
পুরো ঢাকা শহর তন্ন তন্ন করে খুঁজলেও  
একজন 'মানুষে'র হদিস মিলবে না ।  
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর হবে দোপেয়ে জানোয়ার  
ক্লাসরুমে নবীন পশুদের পাশবিকতার শিক্ষা দেবে  
কতিপয় জানোয়ার শিক্ষক ।  

পহেলা বৈশাখ আর থার্টি ফার্স্টের রাতে  
বস্ত্রের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে বলে  
সেদিন আর-  
বস্ত্রহরণের কোন প্রয়োজন হবে না ! 

শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৫

চৈত্রদিন

চৈত্রের এইসব রৌদ্রতপ্ত দিনে  
তুঁতে গাছের স্নিগ্ধ ছায়া খুঁজে ফেরে মন  
জানালার তপ্ত হাওয়ার সাথে ফিরে আসে শৈশব  
এমন চৈতালি দুপুরে ঘুঘুর করুণ ডাক  
আজও হাহাকার জাগায় হৃদয় গহীনে ।  

সেইসব অগ্নিঝরা দিনে বেজে ওঠা রাখালের বাঁশি  
আজও আমাকে  
বৈরাগী হবার ডাক দিয়ে যায় ।
আর আমি কিনা সংসারী মানুষের মত  
ইট সুড়কির শহরে পড়ে আছি !  
এখানে ছায়া নেই, মায়া নেই;  
ঘুঘু নেই, বাঁশি নেই;  
চৌচির ধানক্ষেতের মত অতৃপ্ত হৃদয় নিয়ে তবু  
এইখানে আমি-  
সিদ্ধ ডিমের মত বেঁচে আছি ! 

১১-০৪-২০১৫ 

শুক্রবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৫

একদিন হৃদয় খুলে দেবো

আউশের পাকা ধানের মত
যখন সোনালি হয়ে যাবে এইসব ঘন কালো দীর্ঘ রাত,
যখন খেজুরের রস হয়ে ঝরে যাবে রঙ্গিন শিশির

শুধু তখনই আমি আমার হৃদয় খুলে দেবো । তার আগে
শামুকের খোলসেই গড়বো
একলা ঘরবসতি !

বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০১৫

চিকিৎসা বাজেট

আমরা যখন অসুস্থ হই তখন হঠাৎ করে যেন আমাদের মাথায় বাজ পড়ে । আমরা দিশেহারা হয়ে যাই । শারীরিক কষ্ট কিংবা ভালোবাসা একটা ব্যাপার, কিন্তু এছাড়াও এর আরেকটা কারণ আছে- আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা । আমাদের দেশে হেলথ ইনসুরেন্সের ব্যবস্থা নেই । আর আমরাও চিকিৎসার জন্য আলাদা কোন বাজেট রাখিনা।
মাসের বেতন পেলে আমরা কী করি? আমরা খাওয়ার জন্য বাজেট রাখি । আমরা কাপড় কেনার জন্য বাজেট রাখি । আমরা বাড়ি বানানোর জন্য বাজেট রাখি । কিন্তু চিকিৎসার জন্য কোন বাজেট রাখিনা । সেকারণেই, অসুখ মানেই আমাদের কাছে একটা বিরাট বিপদ । অসুখ হলে- স্বপ্নপূরনের জন্যে জমানো টাকা খরচ করতে হয়, জমানো না থাকলে ধার দেনা করে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গলদঘর্ম হতে হয়।
মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারে নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটাতেই যেখানে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে চিকিৎসার জন্য বাজেট রাখা বা টাকা জমানো অনেকটা উচ্চাভিলাষই মনে হয় । কিন্তু উপায় কী? রাতের খাবারের জন্য যেমন আপনাকে প্রস্তুতি রাখতে হয়, তেমনি এটাও নিশ্চিত, যেকোন সময় আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন । সেজন্য কোন প্রস্তুতি না রাখাটা নিশ্চয়ই বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না ।
যতটুকু সম্ভব এখন থেকে আপনার মাসিক কিংবা বার্ষিক বাজেট লিস্টে চিকিৎসা বাজেট নামে আরেকটা খাত যোগ করুন । দেখবেন, মনে কতটা সাহস আসে । বিনা যুদ্ধে নাহি দেবো সূচাগ্র মেদিনী । অসুখ যেহেতু হবেই, তাকে মোকাবেলার প্রস্তুতিও শুরু হোক আজ থেকেই !