এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০১৫

উপমা

কীভাবে চেয়ে থাকে চাতক পাখি?
কতটা তৃষ্ণার্ত হলে পরে
'ফটি-ক জল্' বলে ডেকে ওঠে
ভরদুপুরে?
অবুঝ শৈশব হতে তার সাথে
আজন্ম সখ্যতা আমার; তবু
আজও জানা হয়নি
সঠিক উত্তর ।
অথচ ঠিকই উপমা দিয়ে যাচ্ছি রোজ রোজ,
স্বপ্নময় একফোঁটা ফটিক জলের জন্যে
অনন্তকাল ধরে-
চাতক পাখির মত তৃষ্ণার্ত হয়ে
চেয়ে আছি
চেয়ে আছি । 

বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৫

অন্ধকারের যাত্রী‬

ছুটে চলে নৈশকোচ, ঘুমে ঢুলু ঢুলু যাত্রীর চোখ  
বেপরোয়া চালক, খাদে পড়বার ভয়  
জানালার পর্দা টেনে বাহিরে তাকাই ; চোখে আসে-  
প্রগাঢ় ঘন অন্ধকার ।  

মনে হয়,
নৈশকোচটাই যেন চলমান বাংলাদেশ  
অন্ধকারের ভেতর, এগিয়ে চলেছে তীব্র গতিতে-  
অন্ধকার গন্তব্যের পানে । 

২৬-০৩-২০১৫ 

বুধবার, ২৫ মার্চ, ২০১৫

পেশেন্ট ডক্টর রিলেশনশিপ

পেশেন্ট ডক্টর রিলেশনশিপ খারাপ হওয়ার ভয়াবহ ফল ভোগ করছে মানুষ । ডাক্তারদের একটা বিরাট অংশ এখন রিস্ক নিতে অনাগ্রহী হয়ে উঠেছেন । ইজ দেয়ার এনি রিস্ক? রেফার দা পেশেন্ট এনিহয়ার এলস । এই হয়ে উঠছে নিয়ম। ফলাফল, মাঝেমাঝেই রোগীর চিকিৎসায় দেরি, এমনকি মৃত্যু । দিনকে দিন এই প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে । কয়েকদিন আগে এরকমই এক দুঃখজনক ঘটনার অভিজ্ঞতা হলো । রাপচারড একটোপিক প্রেগন্যান্সির পেশেন্টকে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে সুদূর ফেনী থেকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে । অথচ এইটা একটা ইমারজেন্সি, ইমেডিয়েট অপারেশন করতে হয় । ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে । পথিমধ্যে শক এবং কার্ডিয়াক এরেস্ট । ঢাকার হাসপাতালে সর্বোচ্চ সাপোর্ট দিয়েও রোগীকে বাঁচানো যায় নি । 

বিভিন্ন স্থানে ডাক্তারের ওপর হামলা, হাসপাতাল ভাঙচুর, হাসপাতালের বিল দিতে অস্বীকার করা এইসব ঘটনা বাড়ার ফলে ডাক্তার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেউই আর রিস্ক নিতে চায় না । কখনো কখনো ডাক্তার চাইলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চায় না । কে চায় উটকো ঝামেলায় জড়াতে ? এভাবে গুটিকয়েক মানুষের মাতব্বরি, বেয়াদবি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও উচ্ছৃঙ্খলতার কারণে অন্যদেরও দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে । 

ডাক্তাররাও ভুল করেন না তা নয় । মানুষের শরীর একটা রহস্য, মেডিকেল সায়েন্স এক মহাসমূদ্র । ডাক্তাররাও সবকিছু জানেনা । সবকিছুর ব্যাখ্যা তাদেরও জানা নাই, সবকিছুর চিকিৎসা তাদেরও হাতে নাই । ডাক্তারের ওপর হামলা, হাসপাতাল ভাঙচুর আর বিল খেলাপ এর মাধ্যমে কোন সমাধান আসবেনা । বরং অন্যরা চিকিৎসাহীনতার ঝুঁকিতে পড়ছে ।
ডাক্তারদের সাথে বিনয়ী হোন, তাদের সহযোগিতা করুন । আশা করা যায় তারা তাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে আপনার স্বজনকে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা করবে ।


২৫-০৩-২০১৫ 

মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ, ২০১৫

মাননীয় ট্রাক-১

মাননীয় ট্রাক, কেমন আছেন, ক্যামন?  
বেয়াদবি নেবেন না প্লিজ, আপনার পা থাকলে,  
পা ছুঁয়েই বলতাম । জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনার অসামান্য সেবা-  
আমাদের চিরঋণী করেছে । মনে আছে, সেই আশির দশকে,  
মিছিলের ওপর দিয়ে আপনি হেঁটে গেলেন  
রাজকীয় কায়দায় ! কালো রাজপথ হঠাৎ পেয়ে গেল  
লাল রঙা তরলের নোনতা স্বাদ ! সত্যি,  
জনগনের জন্যে আপনার কী অসীম মমতা । ভাবতেই  
চোখে জল এসে যায় !  
তারপর ধরুন, মাননীয় ট্রাক, এই একবিংশ শতাব্দীতেও  
ক'দিন আগেই, জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনি  
নিজ আগ্রহে এগিয়ে এলেন আমাদের 'নিরাপত্তায়' !  
ইট বালু কাঠ নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন,  
দিনের পর দিন ! অমন কষ্ট কে করেছে কবে?  
সত্যিই, মাননীয় ট্রাক, আপনি আমাদের এত ভালোবাসেন? ভাবতেই  
চোখে জল এসে যায় ! 

মাননীয় ট্রাক, বেয়াদবি নেবেন না প্লিজ !  
আমি আপনার একজন খুব সাধারণ প্রজা, ভুলচুক মাফ করবেন !  
আপনার মহিমা বর্ণনা করা, সে আমার সাধ্য নয় ।

শনিবার, ২১ মার্চ, ২০১৫

দেখে দেখে ডাক্তারি শেখা !

আমাদের দেশের মানুষের একটা মারাত্মক অভ্যাস হলো, দেখে দেখে ডাক্তারি শেখার চেষ্টা করা ! এটা যে কত ভয়ংকর একটা ব্যাপার বলে বোঝানো যাবে না । আঃ মতিন সাহেব একদিন পাতলা পায়খানা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, ডাক্তার তাকে এই এই ঔষধ দিয়েছিলেন । এরপর থেকে কারো পাতলা পায়খানার কথা শুনলে আঃ মতিন সাহেব নির্দ্বিধায় সেই সেই ঔষধ কিনে খেতে বলেন ! একদিন রতন সাহেব হাই প্রেসার নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন, ডাক্তার তাকে এই এই ঔষধ দিয়েছিলেন । এরপর থেকে কারো হাই ব্লাড প্রেসার শুনলে রতন সাহেব সেই সেই ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দেন ! একদিন মৃত্যুঞ্জয় সাহেব শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, সেদিন থেকে তিনি শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা শিখে ফেলেন এবং চিকিৎসা দিতেও শুরু করেন ! আর এইভাবে আঃ মতিন সাহেব, রতন সাহেব আর মৃত্যুঞ্জয় সাহেবরা যে কতজনের মৃত্যুর কারণ হয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই ।  

একইভাবে ঔষধের দোকানদার, ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ, হাসপাতালের ব্রাদার সিস্টার আয়া দারোয়ান লিফটম্যান, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বারের দারোয়ান সবাই ডাক্তারি শিখে ফেলে ! তাদেরই কেউ কেউ কোথাও কোথাও নামের সামনে 'ডাক্তার' লিখে প্রাকটিসও শুরু করে ! তারা হয় সর্বরোগের ডাক্তার ! (মারহাবা মারহাবা !) তাদের কাছে রোগের নাম ব্লাড প্রেসার ! রোগের নাম শ্বাসকষ্ট ! রোগের নাম জ্বর ! অথচ এগুলো কোনটাই রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র । হাজারটা কারণে জ্বর হতে পারে, শ্বাসকষ্ট হতে পারে, পাতলা পায়খানা হতে পারে । একই ওষুধ কারো জন্য জীবন রক্ষাকারী হতে পারে, কারো জন্য প্রাণঘাতি হতে পারে । কোন কোন ওষুধ হার্টের ক্ষতি করতে পারে, কিডনি লিভার নষ্ট করে ফেলতে পারে । পেটের বাচ্চাকে বিকলাঙ্গ করতে পারে । বয়স, ওজন, শারীরিক গঠন, রোগের কারণ, শরীরের বিভিন্ন অবস্থা অনুযায়ী ড্রাগের চয়েস ও ডোজিং ভিন্ন হয় । হাজার হাজার বছরের গবেষণার পর এইগুলো আবিস্কৃত হয়েছে । বছরের পর বছর লেখাপড়া আর প্রশিক্ষণ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররাও নতুন একটা ঔষধ লিখতে ভয় পান, শতবার চিন্তা করেন । আর এরা কিনা একদিনে কয়েকটা ওষুধের বাজারি নাম দেখেই বিরাট ডাক্তার বনে যায় !! 

বলাবাহুল্য, এইসব স্বশিক্ষিত(!!) ডাক্তার(?)দের পরামর্শ নেয়ার লোকেরও অভাব আমাদের দেশে কোনকালে হয়নি । হবেওনা । অশিক্ষিতদের কথা বাদ দিলাম, শিক্ষিত(?)রাও কিন্তু এই কাজে কম যায় না ।  দুই লাইন বেশি বুঝে নিজের পায়ে কুড়াল মেরেই যাচ্ছে বাঙালি জাতির গর্বিত সদস্যরা । 


২১-০৩-২০১৫ 

বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৫

পাষাণ

সেই কবে থেকে হৃদয় পাষাণ করে বসে আছি ।  
সহস্র বছর ধরে- কত খরা অনাবৃষ্টি  
কত সূর্য উত্তাপ দিয়ে গেল, তবু  
একবিন্দু গলেনি আজও  
পাষাণ হৃদয় । 

কত বর্ষায় অঝোরে ঝরে গেল পুরোটা আকাশ;    
সবটুকু মেঘ । তবু  
এতটুকু ভেজেনি মন; কিংবা শরীর ।  

প্রস্তর যুগ ফুরিয়ে গেছে বহুকাল আগে  
জরাজীর্ণ হয়ে গেছে ইতিহাসের পাতা-  
অথচ  
আজও আমি প্রস্তর হৃদয় নিয়ে হেঁটে যাই   
চেনা রাস্তায় । 

কোথায় পাবো বলো হৃদয় ভাঙার মত  
অতটা নরোম খুন্তি শাবল?  
কেউ কি আমায় দিতে পারে-  
একজন  
আবেগী কামারের সন্ধান?


১৯-০৩-২০১৫ 

বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০১৫

এক হালির কম নয়, বেশি হলে ভালো হয় !!

দুটির বেশি সন্তান নয়, একটি হলে ভালো হয় ! এই কথা যারা বানিয়েছে আর যারা প্রচার করে সবাইকে ধরে প্রতিদিন থাবড়ানো উচিত্‍ । এটা একটা কমনসেন্সের ব্যাপার যে, একটা পরিবারে মাত্র একটা বাচ্চা কারো জন্যেই ভালো হতে পারেনা । না সেই বাচ্চার জন্য, আর না সেই বাচ্চার বাবা মায়ের জন্য । একা একা যারা বড় হয় তারা সবসময় একাকীত্বে ভোগে । আর একাকীত্ব মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভয়ংকর একটা ব্যাপার । একা একা বড় হওয়া বাচ্চা শেয়ারিং শেখে না, কেয়ারিং শিখে না, এবং সেলফিশ হবার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে । তার বিপদে আপদে সাহায্য করার যেমন কেউ থাকেনা, তেমনি সেও কাউকে সাহায্য করা শেখে না । বেশি স্ট্রেস নিতে পারেনা, অল্পতে ভেঙ্গে পড়ে । ছোটদের স্নেহ, বড়দের সম্মান এবং সবার সাথে মিলেমিশে ভাগাভাগি করে থাকার ব্যাপারটা তাদের মাঝে ভালোভাবে গড়ে ওঠে না । 

আর আপনার বাচ্চা যদি মোটে একটা হয়, কোন কারণে যদি সে ডিজ্যাবল হয় বা মারা যায় তাহলে কী হবে? 
আপনি শেষ বয়সে ভালোবাসা চান? সেবা আশা করেন? তাহলে? এক বাচ্চার কাছে আপনি কখনোই সেটা আশা করতে পারেন না ।

আমার মনে হয়, একটা পরিবারে কমপক্ষে চারজন বাচ্চাকাচ্চা থাকা উচিত্‍ । শুধু তাই নয়, এর মধ্যে কমপক্ষে দুইটা মেয়ে থাকা উচিত্‍। মানুষের অসহায় মুহূর্তে মেয়ে অথবা বোন ছাড়া অন্য কেউ বেশি সেবা করেনা । করতে পারেনা । আর অন্যদিকে, একটা মেয়ের একা বড় হওয়াও উচিত্‍ না । তার অবশ্যই একটা বোন থাকা জরুরি । এমন অনেক কথা থাকে, বোন ছাড়া অন্য কাউকে বলা যায়না । এমন অনেক সময় আসে যখন বোন ছাড়া অন্য কাউকে পাশে রাখা যায় না, পাওয়া যায় না । 

একটি দুটির এই ননসেন্স শ্লোগানটা পাল্টে দিতে হবে । নতুন স্লোগান হতে পারে এরকমঃ এক হালির কম নয়, বেশি হলে ভালো হয় !! tongue emoticon tongue emoticon 

শনিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৫

বাংলাদেশি প্রফেসরদের অবস্থা !

মেডিসিনের বাইবেল খ্যাত বই 'ডেভিডসন' এর অন্যতম লেখক প্রফেসর ব্রায়ান আর ওয়াকারের সাক্ষাৎকার পড়ছিলাম মেডিকেল বিষয়ক পত্রিকা 'মেডি ভয়েস' এ । কয়েকদিন আগে তিনি এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে । আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন 'আমি অবাক হয়েছি যে তোমাদের অধিকাংশ প্রফেসরই জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে প্রাকটিস করেন ।'
একদিনের জন্য বাংলাদেশে এসে এই ত্রুটিটাই সবার আগে চোখে পড়েছে মিঃ ওয়াকারের ।
এতদিন আমরা চুনোপুটিরা এইসব নিয়ে কথা বলতাম । প্রফেসররা দেখবেন রেফারড হয়ে আসা জটিল রোগী। তাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁরা ছাত্রদের শেখাবেন। বই লিখবেন । অনেক দুর্লভ রোগী আমাদের দেশে পাওয়া যায়, সেগুলোর স্টাডি করে বিশ্বকে জানাবেন । একজন প্রফেসরের কাছে এটাই আমরা আশা করি । স্বাভাবিকভাবে এটাই হওয়া উচিত্‍ । কিন্তু সত্যিই অবাক করা ব্যাপার, আমাদের শ্রদ্ধেয় প্রফেসর স্যাররা গভীর রাত পর্যন্ত সর্দি কাশি গা ম্যাজ ম্যাজ করা রোগী দেখেন। রোগী প্রতি দুই মিনিট সময় দিয়ে ধন্য করেন । প্রেসক্রিপশনে ডায়াগনোসিস লেখেন না । স্টুডেন্টদের সাথে তাঁদের যোজন যোজন দূরত্ব । শেখানোর চেয়ে তাঁদের আগ্রহ বেশি ভুল ধরা ও ঝাড়ি মারায় । আর গবেষণা? ওহ নো । চেম্বারে দেরি হয়ে যাবে তো !
যাহোক, মিঃ ব্রায়ান আর ওয়াকারের মত আমিও মজা পেয়েছি, পোলাপান নাকি নীলক্ষেত থেকে কেনা ডেভিডসনের পাইরেটেড ফটোকপি এগিয়ে দিয়েছে অটোগ্রাফের জন্য pacman emoticon pacman emoticon pacman emoticon

শুক্রবার, ১৩ মার্চ, ২০১৫

তবে তাই হোক !

তবে তাই হোক  
মুখের ওপর একটা রঙচঙে মুখোশ চড়াই  
শরীরে জড়াই কৃত্রিম চামড়া  
আর এভাবেই, হ্যা হ্যা  
এভাবেই দিনে দিনে  
সামাজিক হয়ে উঠি আমরা !  

আবেগের অকৃত্রিমতায় জোটে যদি 'আবেগী' খেতাব  
ভালোবাসার অর্থ দাঁড়ায় যদি 'সহজলভ্যতা'  
তবে তাই হোক ।  
সময়ের প্রয়োজনে অনাগত আগামী দিনে  
হয়তো হয়ে উঠবো ঠিকঠাক 'হিসেবী' পুরুষ  
মানিব্যাগে রেখে দেবো যতসব  
পুরনো আবেগ । 

সময় মেপে হবে আগামীর প্রেম,  
যুদ্ধ ও পরিচয় ।  
বেশ, ‪‎তবে তাই হোক‬ ।  

১৩-০৩-২০১৫ 

মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০১৫

সুরঞ্জনা !

সুরঞ্জনার সাথে আবার দেখা হবে, কখনো ভাবিনি আমি । অথচ  
নাটোর থেকে সিংহল সমূদ্র,  
নীলাভ জলের রোদে কুয়ালালাম্পুর জাভা সুমাত্রা ও ইন্দোচীন, বালি  
অনেক পথ ঘুরে এসে আজ ফের দেখা হলো  
সুরঞ্জনার সাথে । আজও বন্দী হয়ে আছে সে  
জীবনানন্দের কবিতার ভেতর !  

আজও তার পায়ে প্রশ্নের জিঞ্জির  
জীবনানন্দের কণ্ঠে নুপুরের মত বাজে  
সুরঞ্জনা, বোলোনাকো কথা অই যুবকের সাথে   
কী কথা তাহার সাথে? তার সাথে !  

সুরঞ্জনার হৃদয় সেই কবে ঘাস হয়ে গেছে  
কবে কোন্‌ তৃণভোজী খেয়ে গেছে সব  
কোনদিন খোঁজ রাখা হয়নি। সেই যে সুরঞ্জনার সাথে  
শেষ দেখা হয়েছিল- 'আট বছর আগে একদিন'  
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা  
হেমন্তের রাতে ।

১০-০৩-২০১৫ 

বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫

প্রশ্ন

গভীর অর্থের মাঝেও কখনো কখনো  
অর্থহীন ঠেকে এই মানব জীবন ।  
এই জন্মের কোলাহল, রাতদিন চলাচল, 
সুখ দুখ সংসার 
বিবেক, মন ও স্বার্থের সংঘাত শেষে  
কোথায় গিয়ে দাঁড়াই আমরা? 

কিংবা- 
যতই নিখুঁত হোক; 
আমাদের এইসব অভিনয় সঙ ঢঙ লীলাখেলার পাট চুকে গেলে 
বলো লীলাবতী-  
কী অর্থ থাকে এই ক্ষণিক জীবনের?  

০৫-০৩-২০১৫ 

বুধবার, ৪ মার্চ, ২০১৫

মানুষ !

আমি বললাম- এসো প্রতিবাদ করি 'মানুষ' হত্যার ।  
তোমরা বললে- ওরা মানুষ না । ওরা ছারপোকা ! ওদের এভাবেই  
পিষে মারতে হয় সকাল বিকেল !  
আমি চুপ করে গেলাম । 

তারপর হঠাৎ সেদিন শোরগোল শুনে  
ভয়ে ভয়ে জানালায় উঁকি মেরে দেখি  
তোমাদের কোলাহলে উত্তপ্ত দেশ !  
তোমরাই বলছো প্রতিবাদের কথা ! অদ্ভুত ব্যাপার , এবার নাকি একজন-  
'মানুষ' খুন হয়েছে !  

তারপর 
প্রতিবাদ করতে করতে আমি 'মানুষ' দেখতে গেলাম ।  
কী অদ্ভুত ! যাদের বুকে ৫৪ বুলেট ছিল  
তারাও তো এমনই ছিল ! এই এখানেই ঢাকা মেডিকেল মর্গে  
পড়ে ছিল তাদেরও লাশ । ছিন্নভিন্ন বুক, থেতলানো মুখ । 

তবে কি, তবে কি-  
তবে কি তোমরা 'মানুষ' চেননা?  নাকি তোমরাই  
'মানুষ' নও?  

০৪-০৩-২০১৫ 

মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০১৫

বিরহ

সারাটা দুপুর  
কা-কা করে অবিরাম ডেকে গেল একটি কাক; জানালার ধারে 
দ্বিতীয় তলার অসমাপ্ত ছাদের ওপর । 
কিসের বিরহ তার?কার অপেক্ষায় করে চলেছে সে 
অবিরাম আহ্বান ? 
আমি জিজ্ঞেস করতে পারিনি । আমি কথা বললে-  
যদি লবণাক্ত নদী হয়ে বেরিয়ে আসে  
হাজার বছরের বেদনার বরফ ! যদি মূর্তিমান হয়ে ওঠে অনন্তকালের 
অপেক্ষার প্রহর ! 

কাক না জানুক,
আমি তো জানি-  
মানুষের চেয়ে বেশি কষ্ট, 
বেশি দুঃখ, 
বেশি বিরহ, 
এ বিশ্ব চরাচরে- 
আর কারো নেই । 
আর কারো নেই ।  

০৩-০৩-২০১৫  

সোমবার, ২ মার্চ, ২০১৫

সর্বনাশী কবিতা

কাল রাতে হঠাৎ কবিতা এসে দাঁড়ালো দরজায় ।  
রিনরিনে কন্ঠে তীব্র ক্ষোভ তার ! কী ব্যাপার ?' 
'ইদানিং আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছ না ! 
'ঘটনা কী? জুটেছে নাকি কোন নতুন নাগর ?' 
'কোন্‌ সে ডাইনি মুখরা ? কালনাগ নাকি গোখরা ? 
একবার কাছে পেলে, তার 
নাক বোঁচা করে দেবো আমি ! 
ঠ্যাং ভেঙ্গে বানিয়ে দেবো- ল্যাংড়া শয়তান !'' 

তারপর, 
আরো কাছে এসে, আরো চাপা স্বরে কবিতা বললে- 
শোনো, দু'দিনের লটর পটর নয়, 
সারাজীবনের সংসার করতে এসেছি ! 

কবি নই, তবু 
ভয়ে আছি খুব- 
এ ডাইনিটা নিশ্চিত আমার 
সারাটা জীবন জ্বালিয়ে খাবে !  

০২-০৩-২০১৫