এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১২

আমাদের প্রভু

সব ধরনের কাফেরদের খোদা থেকে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর খোদা সম্পূর্ণ আলাদা । মুশরিকদের কারো খোদার ছয় দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করার পর সপ্তম দিনে বিশ্রাম নেবার প্রয়োজন হয়েছে। সে বিশ্ব - জগতের প্রভু নয় বরং ইসরাঈলের প্রভু । একটি গোষ্ঠীর লোকদের সাথে তার এমন বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে যা অন্যদের সাথে নেই। সে হযরত ইয়াকুবের সাথে কুস্তি লড়ে কিন্তু তাকে আছাড় দিতে পারে না । তার উযাইর নামক একটি ছেলেও আছে। আবার কারো খোদা হযরত ঈসা (সা )মসিহ নামক একমাত্র পুত্রের পিতা। সে অন্যদের গুণাহের কাফফারা দেবার জন্য নিজের পুত্রকে ক্রুশ বিদ্ধ করায়। কারোর খোদার স্ত্রী সন্তান আছে। কিন্তু সে বেচারার শুধু কণ্যা আবির্ভূত হয়েছে এবং মানুষের দেহ পিঞ্জরে আবদ্ধ হয়ে পৃথিবীর বুকে এবং মানুষের মতো কাজ করে যাচ্ছে । কারো খোদা নিছক অনিবার্য অস্তিত্ব অথবা সকল কার্যকারণের কারণ কিংবা প্রথম কার্যকারণ (First cause ) । বিশ্ব জগতের ব্যবস্থাপনাকে একবার সচল করে দিয়ে সে আলাদা হয়ে গেছে।তারপর বিশ্ব জাহান ধরা বাধা আইন মুতাবেক স্বয়ং চলছে। অতপর মানুষের সাথে তার ও তার সাথে মানুষের কোন সম্পর্ক নেই । মোটকথা ,খোদাকে মানে এমন সব কাফেরও আসলে ঐ আল্লাহ মানে না যিনি সমগ্র বিশ্ব জাহানের এ ব্যবস্থাপনার শুধু স্রষ্টাই নন বরং তার সার্বক্ষণিক পরিচালক । তাঁর হুকুম এখানে প্রতি মুহূর্তেই চলছে। তিনি সকল প্রকার দোষ ,ক্রটি ,দুর্বলতা ও ভ্রান্তি থেকে মুক্ত । তিনি সব রকমের উপমা ও সাকার সত্তা থেকে পবিত্র ,নজীর , সাদৃশ্য ও সামঞ্জস্য মুক্ত এবং কোন সাথী , সহাকারী ও অংশীদারের মুখাপেক্ষী নন। তাঁর সত্তা , গুণাবলী , ক্ষমতা ,ইখতিয়ার ও মাবুদ হবার অধিকারে কেউ তাঁর সাথে শরীক নয়। তাঁর সন্তানাদি থাকা , কাউকে বিয়ে করে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার এবং কোন পরিবার বা গোষ্ঠীর সাথে কোন বিশেষ সম্পর্ক থাকার কোন প্রশ্নই ওঠে না। প্রতিটি সত্তার সাথে রিজিকদাতা ,পালনর্কতা ,অনুগ্রহকারী ও ব্যবস্থাপক হিসেবে তাঁর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তিনি প্রার্থনা শোনেন ও তার জবাব দেন। জীবন - মৃত্যু , লাভ - ক্ষতি এবং ভাগ্যের ভাঙা - গড়ার পূর্ণ ক্ষমতার তিনিই একচ্ছত্র মালিক। তিনি নিজের সৃষ্টির কেবল পালনকর্তাই নন বরং প্রত্যেককে তার মর্যাদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী হিদায়াতও দান করেন। তাঁর সাথে আমাদের সম্পর্ক কেবল এতটুকুই নয় যে , তিনি আমাদের মাবুদ এবং আমরা তাঁর পূজা অর্চনাকারী বরং তিনি নিজের নবী ও কিতাবের সাহায্যে আমাদের আদেশ নিষেধের বিধান দান করেন এবং তাঁর বিধানের আনুগত্য করাই আমাদের কাজ। নিজেদের কাজের জন্য তাঁর কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হবে। মৃত্যুর পর তিনি পুনর্বার আমদের ওঠাবেন এবং আমাদের কাজকর্ম পর্যালোচনা করে পুরস্কার ও শাস্তি দেবেন। এসব গুণাবলী সম্পন্ন মাবুদের ইবাদাত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর অনুসারীরা ছাড়া দুনিয়ার আর কেউ করছে না। অন্যেরা খোদার ইবাদাত করলেও আসল ও প্রকৃত খোদার ইবাদাত করছে না। বরং তারা নিজেদের উদ্ভাবিত কাল্পনিক খোদার ইবাদাত করছে।

(তাফহীমুল কুরয়ান- সুরা কাফিরুনের তাফসির থেকে)

শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০১২

বিদ্রোহী ড্রাগন


১.
মাঝে মাঝে খুব বেশি অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে মন 
গুড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে যত্তসব ঐ ভাঁড়দের ঘাড় 
ভয়ংকর ও অকল্পন এক তুফান ত্রাসে । 

প্রতারক জালিমের দল 
মানুষের রক্ত শুষে প্রতিনিয়ত হচ্ছে পান্ডুর 
দিচ্ছে থাবা অনাহারীর মুখের গ্রাসে । 
দিনে দিনে উদর তাদের হচ্ছে পাহাড় 
উঠছে যেন ক্রমশ কেবল উর্ধাকাশে । 
গুড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে যত্তসব ঐ ভাঁড়দের ঘাড় 
ভয়ংকর ও অকল্পন এক তুফান ত্রাসে । 
২. 
যারা 
খেয়াল ছলে বানায় বোমা 
অস্ত্র চালায় জীবন নাশে 
সবুজ শ্যামল উপত্যকা 
ভরিয়ে তোলে রক্ত লাশে  

মৃত শিশুর শরীর দেখে 
লুটিয়ে থাকা দুর্বাঘাসে 
ভন্ড পিশাচ শুন্যহৃদয় 
শয়তানেরা ক্রুর হাসে 

তাদের 
ইচ্ছে করে পুড়িয়ে দিতে 
ড্রাগনসম আগুন শ্বাসে । 


শনিবার, জুলাই 28, 2012
http://goo.gl/iWXKh

মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই, ২০১২

রেলগাঁথা


রেললাইন ঠায় শুয়ে থাকে
দিন বছর যুগ পেরিয়ে
নির্জীব লৌহখন্ডের ভেতর ধারণ করে
সময়ের মহাকাব্য
পিষ্ট হয় ক্রমাগত হাজারো মানুষের ভারে
তবু রাখেনা কোন পদচিহ্ন !

রোদজ্বলা আগুন মধ্যাহ্ন
ছায়াঢাকা মৃদু বিকেল
পুর্ণিমার আলোয় কিংবা আঁধার নিশুতি রাতে
বুক পেতে দেয় দানব বাহনের জন্য
পেটভরা মানুষ নিয়ে হেঁটে যায়
যান্ত্রিক অজগর
পুর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণে ।

পাটাতনের ওপর বয়ে চলে জীবনের নহর
অব্যক্ত কথামালা ,  শুনে যায় সংগোপনে ।

চেয়ে থাকে সারাবেলা নিঃসীম নীলের পানে
খোলা আকাশের নিচে
সাদা মেঘের কাছে অস্ফুটে বলে যায় জীবনের অযুত গল্প
তারপর যত ক্লেদ
ধুয়ে নেয় অবিরল বৃষ্টির জলে ।


মঙ্গলবার, জুলাই 24, 2012

বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১২

বিস্মৃত মুখে জীবনের ছায়া


ভুলে গেছি প্রিয় বন্ধুর মুখচ্ছবি
তবু তাকেই নিয়ত পড়ে মনে
দেখা যদি হয় কভু কোন এক পথের ধারে
পুনর্বার তার সাথে -
হয়তো পারবোনা চিনতেই !

ভুলে গেছি কালো চকচকে গোলপাতার মত মুখখানি তার ।
ছিলনা তখনো ঠোঁটের নিচে গোঁফের ক্ষীণ রেখা-হুম
আর কিছু পড়ে নাকো মনে ,
বিস্মৃতির অতলে হারিয়েছি সব- বেমালুম
তবু মনে পড়ে তাকেই
যখনি হিসাব কষতে বসি জীবনের
কিংবা কষ্টিপাথরে উত্‍রানো একরত্তি বন্ধুত্বের ।


এইতো জীবন
হারিয়ে যাওয়া মায়া ভালোবাসায় চিকচিক বালুকণার মত স্মৃতি
ক্ষণিক বন্ধুত্বের আনাগোনা ,
ক্ষণিকের ঘোরলাগা প্রীতি

জীবনের এইসব আসমানিরঙ বন্ধনী মিহি সুতো
কেটে যায় ক্রমাগত সময়ের চরকায় ;
তারপর বেঁচে থাকি আমরা
আমাদেরই মাঝে
কেবলি ঝাঁপসা কিছু ক্ষয়িষ্ণু অনুভূতি হয়ে !

 বুধবার, জুলাই 18, 2012,

মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১২

কেন জামায়াত প্রশ্নে নাস্তিক সেক্যুলার জাতীয়তাবাদি সবাই ঐক্যবদ্ধ ?


নাস্তিক সেক্যুলার জাতীয়তাবাদিরা নানান ব্যাপারে নিজেদের মধ্যেও বিরোধ রাখে । কোন্দল কামড়াকামড়ি চলে তাদের নিজেদের ভেতরে অহরহ । কিন্তু জামায়াত প্রশ্নে তারা সবাই ‘সব শিয়ালের এক রা’ প্রবাদের পুর্ণ অনুসরণ করে । এর কারণটা কী ?
জামায়াত তাদের কী ক্ষতিটা করলো ? মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভুমিকা যে তাদের জামায়াত বিরোধিতার মূল কারণ নয় তা এই নোটে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি ।(http://goo.gl/yky1F)

বাংলাদেশে ইসলামী দল আছে অনেকগুলি । আছে নানা গ্রুপ- উপগ্রুপ । আছে ওলামা দল , ওলামা লীগ !! আছে পীর মুরিদ খেলাফত । কওমি গোষ্ঠি । কিন্তু এদের বেশিরভাগই কাজে-কর্মে শুধুমাত্র ধর্মীয় ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ । ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে কথা বলে ।
এই বিষয়টা বরং ঘুরেফিরে কিছুটা হলেও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী দের পক্ষেই যায় । তাদের বক্তব্যই তো হলো
‘ধর্ম যার যার- রাষ্ট্র সমাজ পরিচালনায় এর কোন ভূমিকা নেই । মহান আল্লাহ তায়ালা বুখারি শরীফে (!!) বলেন লাকুম দিনুকুম অয়ালিয়া দী-ন ।!!'

সেক্ষেত্রে জামায়াত যে বিষয়টা করেছে সেটা হলো সকল সেক্টরে কাজ শুরু করেছে ।  প্রচলিত ধারাকে চ্যালেঞ্জ করছে সকল সেক্টরে । শিক্ষা সাহিত্য, মিডিয়া, এনজিও, হাসপাতাল, ব্যাংক, সাংস্কৃতিক গোষ্ঠি, বুদ্ধিজীবি সাংবাদিক শিক্ষক শিল্পী, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় , ব্যবসা বানিজ্য সকল ক্ষেত্রে তারা বিকল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি গঠন করেছে কিংবা সাপোর্ট দিচ্ছে । রাজনৈতিক ময়দানে তো অলরেডি আন্দোলনকারী ও নির্দিষ্ট ভোটব্যাংক হিসেবে যেকোন পক্ষের জয় পরাজয় নির্ধারণে একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

ধর্মীয় ক্ষেত্রে জামায়াত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে । তবু বলা যায় এক্ষেত্রে তাদের সফলতা একেবারে ফেলনা নয় । এই উপমহাদেশের মানুষের মনের বদ্ধমূল ধারণা ‘রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামের ভূমিকা নেই বা অপ্রয়োজনীয়’ এই বিষয়টিকে ভুল প্রমাণ করে ‘ইসলাম একটি পুর্ণাংগ জীবন ব্যবস্থা’ এই সত্য প্রতিষ্ঠিত করার মূল কাজটি আঞ্জাম দিয়েছে জামায়াত । আল্লামা আজিজুল হক , হাফেজ্জি হুজুর, চরমোনাই পীরসহ যারা রাজনীতি হারাম ফতোয়া দিয়েছিলেন তারা এখন রাজনীতিতে অংশ নিয়েছেন । এতে নিঃসন্দেহে ইসলামী আদর্শবাহী শক্তির শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে । তবে অন্যরা এখনো সকল সেক্টরে হুমকি হয়ে ওঠেনি ।

ইসলামী বিধানের ওপর কোন আঘাত এলে এখন পর্যন্ত নামে বেনামে সবচেয়ে বড় এবং সফল আন্দোলন পরিচালনা করে জামায়াত ।

নাস্তিক্যবাদের কঠিন থাবায় আবদ্ধ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত সমাজকে ইসলামী রাজনীতির ধারায় নিয়ে আসছে জামায়াত । মোল্লারা শুধু মসজিদে ইমামতি মুয়াজ্জিনগিরি করবে এই ধারণা এখন বাংলাদেশে অচল হয়ে পড়েছে । অন্যান্য ইসলামী দলগুলো দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মাদ্রাসাভিত্তিক । এক্ষেত্রে জামায়াত এগিয়ে । তারা প্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষিত লোকদেরকে আকৃষ্ট করছে । ফলে ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে নাস্তিক-বামদের গ্রহনযোগ্যতা ।

জামায়াতের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে । ভুল-ত্রুটি আছে । প্রত্যাশার তুলনায় ব্যর্থতার পাল্লাও অনেক ভারী । আমরা চাইলেই হাজার ভুল ধরতে পারি এবং ধরিও । কিন্তু এর মাঝেও যতটা অগ্রসর জামায়াত হতে পেরেছে নাস্তিক-সেক্যুলার-ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য কম নয় !

নাস্তিক সেক্যুলার জাতীয়তাবাদিরা চায় নির্বিঘ্নে ক্ষমতাচর্চা করতে । তাদের ভিত্তিহীন ভোগসর্বস্ব আদর্শ (!!) সমাজে ছড়িয়ে দিতে । এজন্য তাদের ভয়, প্রকৃতপক্ষে ইসলামী শক্তি যদি সামনে অগ্রসর হয় তাহলে তাদের হয়তো রাজ্য হারাতে হবে । হারানো রাজত্ব হয়তো আর জনগনের কাছ থেকে ফিরে পাবে না । আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে ময়দানে হাজির আছে জামায়াত । এজন্যই জামায়াত প্রশ্নে ‘সব শিয়ালের এক রা’ !

বন্দী স্বপ্নধূসর


সুর্য ডুবে গেলে
ধূসর স্বপ্নগুলো কিলবিল করে ওঠে
হতাশার ঘূর্ণাবর্তে
আঁধারেই পথ খোঁজে মুক্তির ।

ওদের আটকে রাখি আমি আমার প্রাচীন খাঁচায়
বাঁধন করি শক্ত
প্রতীক্ষার কালে স্বপ্ন দেখাই
লালচে সুবহে সাদেকওয়ালা এক নতুন ভোরের
স্বপ্নপূরণের ভোর ।

কষ্টের রং নাকি নীল - বলো তোমরা
না পাওয়ার বেদনায় বিবর্ণ আমার স্বপ্নগুলো
অন্ধচোখে দেখতে পারিনা আমি ওদের প্রকৃত রুপ
ভেবে নিই তাই ধূসর; সবকিছু ধূসর
লাল নীল আশার প্রলেপ দেয়া
ডোরাকাটা -অস্থির বিড়াল ছানা !

রঙচটা স্বপ্নগুলোও ভালবাসতে জানে বটে !
নাদান আমি বেঁচে থাকি
আর তাগিদ খুঁজি অনবরত পথচলার
ওদেরই মায়ায় !


মঙ্গলবার, জুলাই 10, 2012,

মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১২

চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করার আসল কারণ


ঈমান আক্বিদা ও মর্যাদা রক্ষায় ওদের সাহস দেখে মনে পড়ে যায় সুমাইয়া (রাঃ) , আসমা (রাঃ) , জয়নাব আল গাজালি দের কথা । মুসলিম জাতির পুরুষেরা যখন হয়ে পড়েছে বুজদিল-কাপুরুষ , তখন ছোট বোনদের দৃঢ়তা আমাদের রেনেসাঁর ব্যাপারে আশাবাদী হতে শেখায় ।



চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে নিছক বিদ্বেষ পরায়ন হয়েই হিজাবের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে । অধ্যক্ষা বলছেন ,হিজাব বিজ্ঞানসম্মত না । এতে নাকি Infection ছড়ায় ! এমন অজ্ঞ মহিলা কী করে প্রিন্সিপাল হন আমার বুঝে আসেনা । নাকি তার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে ? Opportunistic এবং Hospital acquired Infection থেকে বাঁচার জন্য যেখানে নাক মুখ মাথা ও শরীর পরিস্কার কাপড় দিয়ে ঢাকা জরুরি সেখানে তিনি নিয়ে এসেছেন নতুন Infection তত্ব ! বিশাল বে-জ্ঞানী ! Infection ছড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি Prone area হলো Hair & Hairy area , এইটাও জানেন না!

ড্রেসকোডের দোহাই দেয়া হয়েছে । ড্রেসকোডে কোথাও লেখা আছে হিজাব পড়া যাবেনা ? ড্রেসকোডে লেখা আছে মাথায় ক্যাপ পড়তে হবে । মেয়েরা বলেছে তারা ক্যাপের নিচে হিজাব পড়বে , এতে ড্রেসকোডের লঙ্ঘনটা কোথায় হয় ? হিজাব পড়ার কারণে ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার নোটিশ দিয়েছেন , নির্দিষ্ট শু , বেল্ট না পড়লে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছেন কাউকে ? দিয়েছেন কোন নোটিশ ? তাহলে ড্রেস কোডে এটাও লিখে দেন কোন দোকান থেকে কতটাকা মুল্যে কাপড় কিনে কোন দর্জির কাছে সেলাই করতে হবে ! এতে আপনারও টুপাইস সুবিধে হবে বৈকি ! অন্যদোকান থেকে কাপড় কিনলে ড্রেসকোড লঙ্ঘন বলতে পারবেন !

কোড অনুযায়ী সঠিক সময়ে কয়দিন অফিসে এসেছেন ? কয়জন কর্মচারিকে সঠিক সময়ে অফিসে না আসায় বরখাস্ত করেছেন ? কোডের দোহাই দেন , ৯০% মুসলিমের দেশে মুসলিমদের জন্য ফরজ পর্দা নিষিদ্ধ করে ড্রেসকোড বানান কিকরে আপনারা ? লজ্জা করেনা ? আপনার প্রতিষ্ঠানে ৯০% শিক্ষক-শিক্ষিকা অমুসলিম হতে পারে, কিন্তু দেশের ৯০% মানুষ ধর্ম্প্রাণ মুসলিম এ কথাটা আপনাদের মনে রাখা উচিত ।

আইন করা হয়েছে - কাউকে পর্দা করতে বাধ্য করা যাবেনা , কিন্তু কাউকে পর্দাহীন হতে বাধ্য করা যাবে এমন আইন এখনো আমাদের চোখে পড়েনি । অর্ধনগ্ন থাকা যদি আপনাদের অধিকার হয় তাহলে কেউ হিজাব ব্যবহার করলে আপনার সমস্যা কোথায় ?

আরও ন্যাক্কারজনক ঘটনাগুলো শুনে স্তম্ভিত হতে হয় । অমুসলিম শিক্ষিকা জুতো পায়ে মসজিদে ঢুকে গর্ব করে বলেছেন -কোথায় তোদের আল্লাহ ? অমুসলিম সুইপার দিয়ে কোরআন হাদিস ঘাটাঘাটি করানো হয়েছে । গল্প-উপন্যাসের বইয়ের মত কুরআন-হাদিসের বই ছুড়ে ফেলা হয়েছে । মেয়েদেরকে ঘরে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে । দিনের পর দিন তাদের ক্রমাগত অপমান করা হয়েছে , হুমকিধমকি দেয়া হয়েছে , মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে । প্রতিবাদ ঠেকাতে একাডেমিক ক্যালেন্ডার লঙ্ঘন করে প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন ছুটিতে রাখা হয়েছে । সাংবাদিকদের কাছে কান্নাকাটি করে নিগৃহীত মেয়েরা বলেছে এসব কথা ।

এগুলো কী প্রমাণ করে ? ড্রেসকোড নাকি ইসলাম ও পর্দাবিদ্বেষ কোনটি আসল কারণ ?
সারাবিশ্বে লক্ষ লক্ষ ডাক্তার নার্স হিজাব পড়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ,আর এই উজবুকরা তত্ব দিচ্ছে হিজাব নাকি সেবার পথে প্রতিবন্ধক ! বেপর্দা হয়ে নার্সিং করলে নামাজ পড়া লাগেনা এই ফতোয়া দেয়ার অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের ?

আল্লাহকে ভয় করুন । এই দাবি মেনে নেয়া আপনাদের পরাজয় নয় ,বোঝার চেষ্টা করুন । অন্ধত্ব ঘুঁচিয়ে চোখটা খুলুন ,সকল ছাত্র-ছাত্রীকে সন্তানের মত ভাবুন ।

যারা এই নোট পড়ছেন, পরিচিত কেউ এই বিভাগের সাথে জড়িত থাকলে তাদেরকে বলুন এই বিষয়ে অবুঝদের বুঝাতে । অতিসত্বর কর্তৃপক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক এই কামনা করছি ।

মঙ্গলবার, জুলাই 3, 2012