এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...

এক রৌদ্রোজ্বল বিকেলে...
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

শুক্রবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৫

আততায়ী

রাত হয়ে গেছে । ড্রাকুলার মত-  
অন্ধকারে ঘুরে বেরুচ্ছে আততায়ীর দল ।  
রক্ত চাই, তাজা রক্ত ।  
খাকি, কালো, সবুজ । দিনের বেলায় ওদের বাহারী পোষাক দেখে  
কত নামেই তো ডাকি ! কিন্তু এই রাতে , এই ঘোর অন্ধকারে --  
ওদের পরিচয় একটাই, ওরা আততায়ী । 
.
ভোর হলে রাস্তার ধারে, অথবা মর্গের টেবিলে  
নিথর পড়ে থাকতে দেখা যাবে একজন কিশোরের লাশ ,  
একজন শিক্ষকের লাশ, একজন ঈমামের লাশ, একজন মুয়াজ্জিনের লাশ,  
একজন পিতার লাশ, একজন সন্তানের লাশ ।  

আর আততায়ীরা তখনো রক্তের তৃষ্ণায় ছটফট করবে, আরো একটি--  
অন্ধকার রাতের অপেক্ষায় ।

৩০-০১-২০১৫ 

রবিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৫

মাননীয় ট্রাক -২

মাননীয় ট্রাক,  
এইতো কদিন আগেই আমি আপনার কাছে সৌজন্য শিখেছি ।  
শিখেছি শিষ্টাচার ! আর গতবছর  
বুলডোজার, আগুন এবং বুলেটের কাছে শিখেছিলাম  
সমবেদনা ও সহমর্মিতা !  

মাফ করবেন, মাননীয় ট্রাক,  
যদিও আপনার 'সংবিধান' বিষয়ক ক্লাসটা আমি ঠিকঠাক বুঝতে পারিনি,  
তবু  
একথা স্বীকার করতে আজ আমার মোটেও দ্বিধা নেই-   
মাননীয় ট্রাক ! বাঙালি জাতির জন্যে-  
সত্যিই আপনি এক মহান শিক্ষক ! 



২৫-০১-২০১৫

অসমাপ্ত অভিযান !

এবারেও শীত এসে চলে গেল নীরবে নিভৃতে
বিরহী খরগোশের মতন ।
কাঠজ্বালানো গনগনে আগুনের এতটুকু উত্তাপ,
এতটুকু উষ্ণতার স্বাদ- এখনো পায়নি আমার গেঁয়ো দুটি হাত ।
হাড়ি থেকে সদ্যনামানো ভাঁপ ওঠা ভাঁপা পিঠা
রোচেনি আমার তৃষ্ণার্ত জিহ্বায়, শরীরে লাগেনি পরশ
ঘোমটা পরা সূর্যের লাজুক রৌদ্রের ।
.
মায়ের বাড়ছে বয়স দূর গাঁয়ে প্রতীক্ষার প্রহর গুনে গুনে । আর আমি
দিনে দিনে হয়ে যাচ্ছি শহুরে জানোয়ার ।

এবারেও শীত এসে চলে গেল নীরবে নিভৃতে
বিরহী খরগোশের মতন ।
অসমাপ্ত রয়ে গেলো তবু, কালু-গাজীর
চম্পাবতী উদ্ধার অভিযান ।

শনিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৫

জীবন এত ছোট কেনে ?

অদ্ভুত লাগে । জীবনটা এত ছোট, এইটুকু সময়ে কীইবা করা যাবে ? 
বই পড়বো? এত এত বই , সারাজীবন পড়লেও তো শেষ হবেনা ! হয়তো একটা লাইব্রেরির বইই ফুরাবে না ! 
গান শুনবো? এইটুকু জীবনে ক'টা গানই বা শুনতে পারবো ! মাত্র দুইটি কানের কতটুকুই বা শ্রবণক্ষমতা? 
বিশ্বভ্রমণ ? পৃথিবীর কতটুকু অংশ দেখতে পারবো? যেখান থেকে যাত্রা শুরু করবো, হয়তো সেখানে আর ফেরা হবেনা । হয়তো অচেনা কোন পথের ধারেই মরে পড়ে থাকবো ! 
ভালোবাসা ! এইটুকু জীবনে কতটুকু ভালবাসা মানুষকে দিয়ে যেতে পারবো? 
জীবনের শেষ বিন্দুতে দাঁড়িয়েও আক্ষেপটা রয়েই যাবে- ভালোবেসে মিটিলোনা সাধ । জীবন এত ছোট কেনে ?

বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৫

নিজেরটুকু নিয়ে কেউ সুখী নয়

আল্লাহ তায়ালা বোধহয় কাউকেই সবকিছু একসাথে দেননা । কিছুনা কিছু অপ্রাপ্তি থেকেই যায় । ফজলু সাহেবকে অনেক অনেক অর্থ সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু হয়তো একসময় এমন একটা অসুখও আল্লাহ দিলেন যাতে করে হঠাৎ করেই তার কাছে সবকিছু মূল্যহীন মনে হতে লাগলো। বিভীষিকাময় হয়ে উঠল জীবন ।
বজলু সাহেবের অনেক প্রাচুর্য আছে কিন্তু হয়তো পরিবারে কোনভাবে অশান্তি ঢুকে আছে । ছেলে হয়েছে বখাটে, মাদকাসক্ত । মেয়ে গেছে পালিয়ে । চাওয়া পাওয়ার সহজলভ্যতা থাকলেও হয়তো মিল নেই । দিনশেষে কথা বলার একজন মানুষ নেই । রাতে ঘুম হয় না 
কতরকম সমস্যায় যে মানুষ থাকে !
এন্ড্রু কিশোরের কন্ঠে একটা গান শুনেছিলাম- যার দুটি লাইন ছিল এরকম-
দূরে থেকে যাদের আমি ভাবতাম কত সুখী,
কাছে গিয়ে দেখি তারা আমার চেয়েও দুখী ।।
হায় মানুষ ! একজন আরেকজনকে সুখী ভাবে, নিজেরটুকু নিয়ে কেউ সুখী নয় ।